শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (শেকৃবি) ছাত্রলীগের প্রোগ্রামে যাওয়াকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ও দেশ রূপান্তরের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি এমদাদুল হককে মারতে উদ্ধত হন শাখা ছাত্রলীগের মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটির সভাপতি এস এম মাসুদুর রহমান মিঠু। রবিবার এমন অভিযোগই করেছেন ভুক্তভোগী সাংবাদিক।
গতকাল রবিবার সকালে অ্যাকাডেমিক ক্লাসে যাওয়ার সময় এ ঘটনা ঘটে বলে জানান এমদাদুল। এসময় এমদাদুলের দিকে তেড়ে এসে থাপ্পর দিয়ে কান ফাটাতে চান মিঠু। ঘটনাকে কেন্দ্র করে শেকৃবিসাস প্রতিবাদ লিপি দিয়েছে, সাথে ছাত্রলীগের মেয়াদোত্তীর্ণ বর্তমান এ কমিটিকে বর্জন করার ঘোষণা দিয়েছে ক্যাম্পাসে কর্মরত সাংবাদিকরা।
ভুক্তভোগী সাংবাদিক এমদাদ বলেন, ‘সকাল নয়টায় ক্লাসে যাওয়ার সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরির সামনে আমাকে পথরুদ্ধ করে ছাত্রলীগের রাজনৈতিক প্রোগ্রামে যেতে বলেন সভাপতি। এসময় আমি সাংবাদিক পরিচয় দেওয়ার পরে তিনি আমার দিকে হাত উঠিয়ে তেড়ে এসে বলেন, থাপ্পর মেরে তোর কান ফাটিয়ে দিব। এসময় তিনি ও তার পাশে থেকে কয়েকজন আমার সাথে ঊচ্চবাচ্য করেন। এসময় সভাপতি আবারও আমার গায়ে হাত রেখে জোরপূর্বক রাজনৈতিক প্রোগ্রামে যাওয়ার জন্য বাধ্য করতে থাকেন।’
ঘটনাটির প্রত্যক্ষদর্শী শেকৃবি সাংবাদিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ওলী আহম্মেদ বলেন, ‘লাইব্রেরির সামনে এ ঘটনায় তাৎক্ষণিকভাবে আমিও সেখানে এগিয়ে গিয়ে সাংবাদিক ও সাংবাদিক সমিতির পরিচয় দিলে সভাপতি মাসুদুর রহমান মিঠু হেয় প্রতিপন্ন করে বলেন, তোমাদের আমি চিনি! কমিটি দিছো আমাদের সাথে দেখা করসো? এসময় সেখানে শাখা ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান আমাকে বলেন, চলো চলো প্রোগ্রামে চলো। এ সময় ওলী তাদের বলেন আপনারা যান। সাংবাদিকরা নিউজ কাভার করবো।’
এ সম্পর্কে জানতে চাইলে সভাপতি মাসুদুর রহমান মিঠুকে মুঠোফোনে বারবার চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
উক্ত ঘটনা বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত হলে নবাব সিরাজ-উদ-দৌলা হলের সাধারণ সম্পাদক মাসুদ আলম হল থেকে ঐ সাংবাদিকের বিছানাপত্র ফেলে দেন। বিছানাপত্র ফেলে দেওয়ার বিষয়ে জানতে হল সাধারণ সম্পাদক মাসুদ আলমকে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি।
নবাব সিরাজ উদ দৌলা হলের প্রভোস্ট ড. মো. সিরাজুল ইসলাম খান বলেন, ‘একমাত্র বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ছাড়া শিক্ষার্থীর বিছানাপত্র ফালানোর অধিকার কারোর নেই। তোমরা বিষয়টি উপাচার্য কে জানাও।’
এরপর শেকৃবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক সাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে ভুক্তভোগী সাংবাদিক এমদাদের বিরুদ্ধে মন গড়া মিথ্যা অভিযোগ তোলে। এ ব্যাপারে এমদাদ বলেন, ‘গতমাসে দৈনিক দেশ রূপান্তর পত্রিকায় শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘ছাত্রলীগের চাঁদাবাজি হলের ডাইনিংয়েও’ শীর্ষক শিরনামে প্রতিবেদন করেছিলাম। এরপর থেকে তারা আমার উপর ক্ষিপ্ত এবং মিথ্যা অভিযোগ দিচ্ছে।
এ ব্যপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. হারুন-উর-রশিদ সুমন বলেন, ‘ভুক্তভোগী সাংবাদিকের কাছ থেকে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি শৃঙ্খলা বোর্ডে উত্থাপন করে তদন্তসাপেক্ষে ব্যবস্থা নেব।’
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল