শিরোনাম
৬ ডিসেম্বর, ২০২২ ০৮:৫৪

উপাচার্যের আশ্বাসে অনশন ভাঙল রাবির উর্দু বিভাগের শিক্ষার্থীরা

অনশনকালে অসুস্থ ৫ ছাত্রী

রাবি প্রতিনিধি

উপাচার্যের আশ্বাসে অনশন ভাঙল রাবির উর্দু বিভাগের শিক্ষার্থীরা

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) পরীক্ষার ফলাফল পুনর্মূল্যায়নের দাবিতে আমরণ অনশনে বসেন উর্দু বিভাগের শিক্ষার্থীরা। সকাল থেকে অনশন পালনকালে বিভিন্ন ঘটনায় অসুস্থ হয়ে পড়েন পাঁচজন ছাত্রী। তবে উপাচার্যের আশ্বাসে অনশন ভাঙেন তারা। 

সোমবার রাত ৯টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে এ ঘটনা ঘটে।

উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার বলেন, বিভাগই মূলত এসব বিষয় সমাধান করে থাকে। কারণ একাডেমিক বিষয়গুলো তারাই দেখে। তবে শিক্ষার্থীরা যেহেতু প্রশাসনের দারস্থ হয়েছে, তাই বিষয়টি অবশ্যই খতিয়ে দেখা হবে। সেজন্য একটি তদন্ত কমিটি গঠিত হচ্ছে। তারা সাত কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিবে। সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

শিক্ষার্থীরা বলছেন, আগস্টে ফল প্রকাশিত হওয়ার পর থেকে অপ্রত্যাশিত এই ফলাফল পুনর্মূল্যায়নের দাবি জানিয়ে আসছি। শিক্ষকদের সাথে দফায় দফায় এই নিয়ে আলোচনা হয়েছে৷ কিন্তু কোন সমাধান না পেয়ে বাধ্য হয়ে আজ আমরণ অনশনে নেমেছি। 

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, প্রথম সেমিস্টারে সিজিপিএ ৩.৫-এর উপরে পাওয়া একজন শিক্ষার্থী কিভাবে ২ পয়েন্ট পায় তা আমাদের বুঝে আসে না। একই রেজাল্টের অনেকে আবার ফেলও করেছে। আমরা যখন এসব বিষয় নিয়ে প্রতিবাদ করি, তখনই শিক্ষকেরা আমাদের নানাভাবে হুমকি-ধামকি দেয়। 

এসময় আন্দোলনকারী এই শিক্ষার্থীদের ৪-দফা দাবি জানান। সেগুলো হলো: পুনর্মূল্যায়ন করে দ্রুত ২য় সেমিস্টারের ফলাফল প্রকাশ, ফল বিপর্যয়ের সঙ্গে জড়িত শিক্ষকদের শাস্তির আওতায় আনা, পরবর্তীতে পরীক্ষা কমিটি থেকে অভিযুক্ত শিক্ষকদের বাদ দেওয়া এবং ছাত্রবান্ধব বিভাগ নিশ্চিত করা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পরীক্ষায় কাঙ্ক্ষিত ফলাফল না হওয়ায় উর্দু বিভাগের ২০১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থীরা ফল পুনর্মূল্যায়নের দাবিতে সকাল থেকে অনশন করছেন। বিষয়টি জানার পর ঘটনাস্থলে গিয়ে শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে শান্ত করার চেষ্টা করেন বিভাগের সভাপতি ও শিক্ষকবৃন্দ। তবে শিক্ষকদের সান্তনাবাণী উপেক্ষা অনশন চালিয়ে যান শিক্ষার্থীরা। কয়েক দফায় গিয়ে বুঝাতে ব্যর্থ হলে একপর্যায়ে প্রশাসনের দারস্থ হন বিভাগের শিক্ষকেরা। সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ঘটনাস্থলে আসেন এবং বিষয়টি তদন্ত কমিটি গঠনের মাধ্যমে যাচাই-বাছাই করে সিদ্ধান্ত নেয়ার আশ্বাস দেন। তাই আপাতত অনশন ত্যাগ করার আহ্বান জানানো হয়। কিন্তু শিক্ষার্থীরা কোন কথা না শুনে আমরণ অনশন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, বিভাগের শিক্ষকদের সাথে এই শিক্ষার্থীদের উচ্চবাচ্য বিনিময় হয়। এসময় অনশনে থাকা ছাত্রীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। ফলে সুমাইয়া, মনিজা আক্তার, লুনা খাতুন, নুসরাত প্রিয়া, ফারিহা ইমরোজ অসুস্থ হয়ে পড়েন। তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টার ও রাজশাহী মেডিকেলে চিকিৎসা নিয়েছেন।

উল্লেখ্য, গত ২৫ আগস্ট উর্দু বিভাগের ২০১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থীদের দ্বিতীয় সেমিস্টারের ফল প্রকাশ করা হয়। প্রকাশিত ফলাফল কাঙ্খিত না হওয়ায় ক্ষুব্ধ এই শিক্ষার্থীরা সেদিনই সভাপতির কক্ষে তালা ঝুলিয়ে আনরদোলনে নামে। ক্লাস বর্জন করে ফল পুনর্মূল্যায়নের দাবি জানায় তারা। ছাত্র উপদেষ্টার মধ্যস্থতায় বিষয়টি সমাধানে তিনদিনের সময় নেয়া হয়। তবে পরবর্তীতে দফায় দফায় সময় পেরোলেও কোন সমাধান না হওয়ায় আমরণ অনশনে বসেন উর্দু বিভাগের এই শিক্ষার্থীরা।

বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর