সাম্প্রতিক সময়ে ভারত থেকে বাংলাদেশে অস্ত্র পাচারের রুট হয়ে উঠেছে সিলেটের গোয়াইঘাট উপজেলার বিছনাকান্দি সীমান্ত। এ সীমান্ত দিয়ে ১২ চেম্বারের টু টু বোরের অত্যাধুনিক রিভলবারও ঢুকছিল বাংলাদেশে। বিছনাকান্দি সীমান্তে ভারত থেকে অস্ত্র আনার মূলহোতা ছিলেন আরব আলী।
এ ঘটনায় মঙ্গলবার গভীর রাতে তাকে বিছনাকান্দির নিজ বাড়ি থেকে দু’টি রিভলবারসহ গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তিনি ওই এলাকার ওয়াতির আলীর ছেলে।
আরব আলীকে গ্রেফতারের বিষয়ে বুধবার সকালে সংবাদ সম্মেলন করেন সিলেটের পুলিশ সুপার ফরিদ উদ্দিন।
তিনি জানান, আরব আলী গত দুই বছর ধরে সীমান্তবর্তী ভারতের লাংখাট বাজার থেকে সবজির ব্যাগে ভরে চারটি চালানে ১০টি অস্ত্র বাংলাদেশে এনেছেন। অস্ত্রগুলো সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি আবদুস শহীদ ও উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক আনছার মিয়ার কাছে পৌঁছে দেন আরব আলী।
পুলিশ সুপার আরও জানান, সবশেষ চালানে চারটি অস্ত্র এনেছিলেন আরব আলী। তন্মধ্যে দু’টি অস্ত্র আবদুস শহীদের কাছে বিক্রি করেন। ওই অস্ত্র দু’টি নিয়ে ঢাকায় যান শহীদ ও আনছার। ঢাকার যাত্রাবাড়ি থেকে পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) তাদেরকে গত ৫ সেপ্টেম্বর গ্রেফতার করে। এ দু’জন পুলিশের কাছে আরব আলীর বিষয়ে তথ্য দেয়। তাদের তথ্যের ভিত্তিতেই মঙ্গলবার দিবাগত রাতে আরব আলীকে তার বাড়ি থেকে দু’টি রিভলবারসহ গ্রেফতার করে গোয়াইনঘাট থানা পুলিশ।
আরব আলীকে জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে পুলিশ সুপার ফরিদ উদ্দিন আরও জানান, ভারতের বারিক নামের একজন সবজির ব্যাগে ভরে অস্ত্র নিয়ে আসতো লাংখাট বাজারে। সেখান থেকে আরব আলী অস্ত্র কিনে নিয়ে আসতেন বাংলাদেশে। তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।
জানা গেছে, অস্ত্র তৈরি করা বিশ্বের নামকরা ব্র্যান্ডগুলো ছয় চেম্বারের রিভলবার বানায়। সিলেট সীমান্ত দিয়ে আসা ১২ চেম্বারের টু টু বোরের রিভলবার দেখে খোদ ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তারাই বিস্মিত।
গত ৫ সেপ্টেম্বর জগন্নাথপুরের ওই দু’জন ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আরেকজন গ্রেফতার হওয়ার পর ৭ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ প্রতিদিনে প্রকাশিত ‘সীমান্ত হাট এখন অবৈধ অস্ত্রের বাজার’ শীর্ষক প্রতিবেদনে সিটিটিসির অতিরিক্ত উপ-কমিশনার জাহাঙ্গীর আলম বলেছিলেন, ‘আমরা অবাক হয়েছি ১২ চেম্বারের টু টু বোরের রিভলবার দেখে। বিশ্বের নামকরা ব্র্যান্ডগুলো সাধারণত ছয় চেম্বারের রিভলবার তৈরি করে থাকে।’
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন