১৪ জুলাই, ২০২০ ২৩:৫৪

'গণধর্ষণ' ধামাচাপা দিতে মরিয়া প্রভাবশালী মহল, ১২ দিন পর মামলা

বিশ্বনাথ (সিলেট) প্রতিনিধি

'গণধর্ষণ' ধামাচাপা দিতে মরিয়া প্রভাবশালী মহল, ১২ দিন পর মামলা

সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলায় পিতৃহারা কিশোরী গণধর্ষণের ঘটনা ধামাপাচা দিতে মাঠে নেমেছিল কথিত জনপ্রতিনিধিসহ প্রভাবশালীরা। তারা মেয়ের পরিবারকে হুমকি ও মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে ঘটনা মেটাতে চেয়েছিল। সে উদ্দেশ্যে ওই কিশোরী ও তার পরিবারকে অজ্ঞাত স্থানে লুকিয়ে রাখা হয়। 

বিষয়টি জানতে পেরে স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীরা অনুসন্ধানে নামলে ভেস্তে যায় সব প্রক্রিয়া। অবশেষে ঘটনার ১২ দিন পর গেল সোমবার (১৩ জুলাই) রাতে ভিটটিম বাদী হয়ে ৩ জনের নাম উল্লেখসহ আর দু’জন অজ্ঞাতদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে।

এর আগে গেল গত ১ জুলাই রাতে উপজেলার লামাকাজি ইউনিয়নের ইসবপুর গ্রামে আমির আলীর মুদি দোকানে গণধর্ষণের শিকার হন গ্রামের ওই কিশোরী। তার অভিযাগ, তাকে দোকানে জিম্মি করে রাতভর পাশবিক নির্যাতন চালায় গ্রামের মন্নান মিয়ার পুত্র আনোয়ার মিয়া (৪০), রিয়াছদ আলীর পুত্র সুজন মিয়া (৩০) ও মৃত ফজর আলীর পুত্র শায়েস্তাবুর মিয়া (৩০)।

মামলার এজাহারে জানা যায়, ঘটনার দিন ছোট ভাইকে সাথে নিয়ে বাড়ি থেকে ফুফু বাড়ি যাবার উদ্দেশ্যে বের হয়েছিল সে। পথে গ্রামের আমির আলীর দোকানের কর্মচারী আনোয়ার মিয়া জানায় সেও ওদিকে যাচ্ছে। তার সাথেই ফুফু বাড়ি পর্যন্ত যেতে পারবে তারা। এ বলে দোকানে বসিয়ে রেখে সুজন মিয়া ও অটোরিকশা চালক
শায়েস্তাবুর মিয়াকে ডেকে নিয়ে আসে। কিশোরীরর ছোটভাইকে তার নানাবাড়ি পৌঁছে দিয়ে তাকে নিয়ে বিভিন্ন এলাকা ঘুরে রাতে ফের গ্রামের আমির আলীর দোকান ঘরে নিয়ে আসে। পরে সেখানে রাতভর তার উপর পাশবিক নির্যাতন চালায় তারা তিনজন।

পরদিন সকালে সে অসুস্থ হয়ে পড়লে ছাতকের গোবিন্দগঞ্জ পয়েন্ট এলাকায় তাকে ফেলে আসে তারা। খবর পেয়ে তাকে উদ্ধার করে নিয়ে আসেন তার চাচাতো ভাই রুহেল। এ দিকে ঘটনাটি জানাজানি হলে ধামাচাপা দিতে শুরু থেকেই তৎপর হয়ে উঠে স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহল। তাদের হুমকি ও চাপের মুখে তরুণী ও তার
পরিবারের লোকজন রহস্যজনক আত্মগোপনে চলে যায়। 

কিন্তু গত বৃহস্পতিবার খবর পেয়ে বিশ্বনাথের কয়েকজন সংবাদকর্মী অনুসন্ধানে নামলে প্রভাবশালী মহল ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে ব্যর্থ হয়। ফলে ঘটনার বারোদিন পর তরুণী নিজেই থানায় উপস্থিত হয়ে মামলা দায়ের করে।

এ বিষয়ে কথা হলে বিশ্বনাথ পুলিশ স্টেশনের থানার অফিসার ইন-চার্জ শামীম মুসা বলেন, ভিকটিম তরুণীকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওসিসিতে পাঠানো হয়েছে। আসামিদের গ্রেফতার করতে তৎপর রয়েছে পুলিশ।


বিডি-প্রতিদিন/ আব্দুল্লাহ তাফসীর

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর