সিলেট মহানগরীর বন্দরবাজার ফাঁড়িতে পুলিশী নির্যাতনে মারা যাওয়া যুবক রায়হান আহমদের দ্বিতীয় ময়না তদন্ত প্রতিবেদন পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পিবিআই’র পরিদর্শক মাহিদুল ইসলামের কাছে প্রতিবেদনটি হস্তান্তর করে ওসমানী মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের কর্মকর্তারা।
এদিকে, নানা আলোচনা-সমালোচনার মুখে বৃহস্পতিবার বদলি করা হয়েছে সিলেট মহানগর পুলিশ কমিশনার গোলাম কিবরিয়াকে।
সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান সহকারী অধ্যাপক ডা. শামসুল ইসলাম জানান, রায়হানের প্রথম দফা ময়নাতদেন্তর রিপোর্টের সাথে দ্বিতীয় দফার রিপোর্টের মিল রয়েছে। ভোতা অস্ত্রের আঘাতের কারণেই রায়হানের মৃত্যু হয়েছে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই সিলেটের পুলিশ পরিদর্শক মাহিদুল ইসলাম বলেন, ওসমানী মেডিকেল থেকে রায়হানের দ্বিতীয় দফা ময়নাতদন্ত রিপোর্ট আমরা পেয়েছি। এই রিপোর্টটি প্রাথমিক রিপোর্ট।
এর আগে পুনরায় ময়নাতদন্তের জন্য রায়হানের মরদেহ কবর থেকে উত্তোলনের আবেদন করেছিলেন মামলার প্রথম তদন্তকারী কর্মকর্তা কোতোয়ালি থানার এসআই আব্দুল বাতেন। তার আবেদনের প্রেক্ষিতেই রায়হান আহমদের মরদেহ কবর থেকে তোলার অনুমতি দেয় জেলা প্রশাসন। পরে মামলাটি পিবিআইয়ে হস্তান্তর হলে তদন্তের দায়িত্ব পান পিবিআইর পরিদর্শক মাহিদুল ইসলাম। গত ১৫ অক্টোবর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে নগরীর আখালিয়া নবাবী মসজিদ সংলগ্ন কবরস্থান থেকে রায়হানের মরদেহ তুলে দ্বিতীয়দফা ময়না তদন্ত করা হয়।
এদিকে, রায়হান আহমদ হত্যার ঘটনায় পুলিশ সদর দপ্তরের গঠিত টিমের তদন্ত প্রতিবেদন আগামী সোমবার দাখিল করার কথা রয়েছে। বিষয়টি গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন তদন্ত টিমের প্রধান, পুলিশের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক (এআইজি- ক্রাইম অ্যানালাইসিস বিভিাগ) মুহাম্মদ আয়ুব। এর আগে গত মঙ্গলবার এআইজি মুহাম্মদ আয়ুবের নেতৃত্বে পুলিশ সদর দপ্তর গঠিত তদন্তকমিটির সদস্যরা সিলেটে আসেন এবং রাত ৮টার দিকে রায়হানের বাড়িতে যান। এসময় তারা রায়হানের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন।
পরে তদন্ত কমিটির প্রধান এআইজি মুহাম্মদ আয়ুব সাংবাদিকদের বলেন, এসআই আকবরের পালিয়ে যাওয়ার সাথে আর কেউ সংশ্লিষ্ট আছেন কি-না সে বিষয়টি তদন্ত করার জন্যই আমাদের সিলেট আসা। এই তদন্তের অংশ হিসেবেই আমরা রায়হানের বাড়িতে এসে তার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেছি।
পুলিশ কমিশনার বদলি : রায়হান হত্যাকান্ডের পর সিলেট মহানগর পুলিশের ভূমিকা নিয়ে নানা প্রশ্ন ওঠে। সিলেট মহানগর পুলিশের কমিশনার হিসেবে গোলাম কিবরিয়ার টানা চারবছর দায়িত্ব পালন নিয়েও শুরু হয় আলোচনা। এই আলোচনা-সমালোচনার মধ্যে বৃহস্পতিবার গোলাম কিবরিয়াকে সিলেট মহানগর পুলিশের কমিশনার পদ থেকে বদলি করা হয়। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে তাকে সিলেট মহাগর পুলিশ থেকে বদলি করে বাংলাদেশ পুলিশের স্পেশাল প্রটেকশন ব্যাটালিয়নের (এসপিবিএন) উপ পুলিশ মহাপরিদর্শক করা হয়েছে। এছাড়া এসপিবিএন’র উপ পুলিশ মহাপরিদর্শক নিশারুল আরিফকে সিলেট মহানগর পুলিশ কমিশনার হিসেবে পদায়ন করা হয়েছে।
বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন
