পণ্যদ্রব্য কিনতে দোকানের সামনে সিএনজি চালিত অটোরিকশা থামিয়ে ভেতরে ঢুকলেন এক নারী ও দুই শিশুসহ ওই অটোরিকশার বেশ কয়েকজন যাত্রী। ঢুকেই একেকজন একেক দিকে ছড়িয়ে পড়ে শুরু করলেন পণ্যসামগ্রী দেখা। তারপর দরদাম জিজ্ঞাসা। দোকানে একা থাকা মহাজন পুরোদস্তুর হিমশীম খেতে লাগলেন এক সাথে এত ক্রেতাকে সামাল দিতে।
এই ফাঁকে কোন পণ্য না কিনেই ওই ক্রেতাদের একজন উঠে পড়লেন দোকানের সামনে রাখা অটোরিকশায়। একইভাবে অন্যরাও কোনো পণ্য না কিনে ধীরে ধীরে সেই অটোরিকশায় উঠে পড়ায় সন্দেহ দেখা দেয় মহাজনের। তিনি তাৎক্ষণিক তার ক্যাশ ঠিক আছে কি না দেখতে গিয়ে দেখলেন ক্যাশে থাকা প্রায় এক লাখ টাকার একটি টাকাও নেই।
সাথে সাথে তিনি তাদেরকে আটকাতে গেলে তারা অটোরিকশা নিয়ে পালানোর চেষ্টা চালায়। যাওয়ার পথে স্থানীয় মসজিদের মোয়াজ্জিন অটোরিকশা থামাতে চাইলে তাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে চলে যেতে থাকে অটোরিকশাটি। কিন্তু নাছোড়বান্দা মহাজন আরেকটি গাড়ি নিয়ে পিছু নেন ওই অটোরিকশার। পথিমধ্যে চুরির টাকাসহ ২ জন অটোরিকশা থেকে নেমে পালিয়ে যায়। মহাজন অটোরিকশাটির পিছু না ছেড়ে কিছুটা পথ পেরিয়ে স্থানীয়দের সহযোগিতায় এক নারী ও দুই শিশুসহ ৫ জনকে আটক করতে সক্ষম হন।
নাটকীয় স্টাইলে এই চুরি ও চুরির সাথে জড়িতদের আটকের ঘটনাটি ঘটেছে বৃহস্পতিবার (৩১ ডিসেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার রামপাশা ইউনিয়নের রামপাশা কোনাপাড়া গ্রামের ‘হোসনা ভ্যারাইটিজ স্টোর’ নামের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে। খবর পেয়ে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে নারী-শিশুসহ আটক ৫জন ও তাদের চুরির কাজে ব্যবহৃত অটোরিকশাটি থানায় নিয়ে আসে। বারবার বিভ্রান্তিকর তথ্য দেয়ায় তাদের সঠিক পরিচয় জানাতে পারেনি পুলিশ।
হোসনা ভ্যারাটিজ স্টোরের স্বত্তাধিকারী মাফিজ আলী জানান, নারী ও শিশুসহ তারা বেশ কয়েকজন একসাথে দোকানে প্রবেশ করে। আমাকে নানাভাবে ব্যস্ত রেখে এক ফাঁকে আমার ক্যাশে থাকা প্রায় একলক্ষ টাকা নিয়ে তারা চম্পট দিতে চেয়েছিল। আমি পিছু না ছেড়ে তাদেরকে ধরতে সক্ষম হয়েছি। যদিও আমার ক্যাশের ওই টাকাসহ অটোরিকশা থেকে ২ জন পালিয়ে গেছে।
বিশ্বনাথ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শামীম মুসা জানান, নারীসহ আটক ৩ জনের পরিচয় জানার চেষ্টা করছে পুলিশ। তাদের সাথে দু'টি শিশুও রয়েছে। চুরি যাওয়া টাকা উদ্ধারের পাশাপাশি এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
বিডি-প্রতিদিন/ তাফসীর আব্দুল্লাহ