২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ২০:০৪

দুই কমিটি নিয়ে বিশ্বনাথ ছাত্রলীগে গৃহবিবাদ

সাইফুল ইসলাম বেগ, বিশ্বনাথ (সিলেট)

দুই কমিটি নিয়ে বিশ্বনাথ ছাত্রলীগে গৃহবিবাদ

সিলেটের বিশ্বনাথে ছাত্রলীগের দুটি ইউনিয়ন কমিটির অনুমোদন দেওয়াকে কেন্দ্র করে উপজেলা ছাত্রলীগে গৃহবিবাদ দেখা দিয়েছে। ইতিমধ্যে অনুমোদিত দুই কমিটির একাধিক দায়িত্বশীল পদত্যাগ করেছেন। হয়েছে পাল্টাপাল্টি মিছিল-ঝাড়ু মিছিলও। যে কোন সময় সংঘর্ষের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে দুই গ্রুপের মধ্যে। 

জানা যায়, গত ২০ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় এক প্রেসবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে উপজেলার দশঘর ও রামপাশা ইউনিয়নের ছাত্রলীগের নতুন কমিটির অনুমোদন দেয় উপজেলা ছাত্রলীগ। ওই কমিটি দুটিতে স্বাক্ষর করেন উপজেলা ছাত্রলীগ ভারপ্রাপ্ত সভাপতি পার্থ সারথি দাস পাপ্পু ও সাধারণ সম্পাদক মোবারক হোসাইন। ওই দিন রাতেই কমিটি দুটি নিয়ে প্রশ্ন তোলেন উপজেলা ছাত্রলীগ নেতৃবৃন্দ ও ওই দুই কমিটিতে পদবঞ্চিত ছাত্রলীগ কর্মীরা। 

তাদের অভিযোগ, দশঘর ছাত্রলীগের কমিটির সভাপতি হওয়া জহিরুল ইসলাম জাহির একজন ছাত্রদল নেতা। সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে ইউনিয়ন বিএনপির সহ-সভাপতির ছেলে সুজাদকে। কমিটির সহ-সভাপতি মাজহারুল ইসলাম একজন চিহ্নিত মাদকসেবী। আর রামপাশা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক পদ দেয়া হয়েছে জামায়াত পরিবারের তারেক আহমদকে। বিএনপি পরিবার থেকে রেজাউল করিমকে দেয়া হয় সহ-সভাপতির দায়িত্ব। অছাত্র, শিবির, ছাত্রদল ও মাদকাসক্তদের দিয়ে উৎকোচের বিনিময়ে এ কমিটি দেয়া হয়েছে বলে উল্লেখ করেন তারা। কমিটি দুটি প্রত্যাখান করে পদত্যাগ করেন একাধিক ছাত্রলীগ কর্মী। 

পরে গত ২৩ সেপ্টেম্বর রামপাশা ইউনিয়নের ছাত্রলীগ নেতারা রামপাশা বাজারে নতুন কমিটির বিরুদ্ধে ঝাড়ু মিছিল করেন। এসময় অপর পক্ষ অবস্থান নিলে উত্তেজনা দেখা দেয়। তখন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বিদ্রোহী দুইজনকে পুলিশ আটক করলেও পরে ছেড়ে দেয়। এক পর্যায়ে সন্ধ্যায় উপজেলা সদরে ফের মুখোমুখি হয় দু’গ্রুপ। সংঘর্ষ এড়াতে অবস্থান নেয় থানা পুলিশ।

উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহ বুরহান আহমদ রুবেল ও সাংগঠনিক সম্পাদক জুবায়ের আহমদ জয় বলেন, উপজেলা ছাত্রলীগের মেয়াদউর্ত্তীণ বর্তমান কমিটির বিতর্কিত ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও সম্পাদককে নিয়ে ইতিমধ্যেই তৃণমূল ছাত্রলীগে অসন্তোষ বিরাজ করছে। এর মধ্যেই দলীয় গঠনতন্ত্র উপেক্ষা করে অনৈতিক সুবিধা নিয়ে তারা নিজেরা ইচ্ছে মাফিক ছাত্রদল, শিবির, চিহ্নিত মাদকসেবী ও অছাত্রদের সমন্বয়ে দুটি পকেট কমিটি দিয়ে যে বিশৃংঙ্খলার জন্ম দিয়েছেন তার জন্য তারাই দায়ী। এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নিয়ে ছাত্রলীগে শৃংঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে আমরা কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নেতৃবৃন্দের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।  

এসব অভিযোগ অস্বীকার করে, উপজেলা ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি পার্থ সারথি দাস পাপ্পু বলেন, বিশ্বনাথ উপজেলা ছাত্রলীগের একটি নিষ্ক্রিয় গ্রুপ জামায়াত-বিএনপির এজেন্ডা বাস্তবায়নে কাজ করছে। তৃণমূলের পরিক্ষিত মেধাবী ছাত্রনেতাদের দিয়ে আমরা দীর্ঘদিনের মেয়াদ উত্তীর্ণ দশঘর ও রামপাশা ইউনিয়ন কমিটি অনুমোদন দেই। বিগত দশঘর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে প্রকাশ্যে ও পরোক্ষ ভাবে যারা নৌকার বিরোধীতা করেছিল তারাই এখন ছাত্রলীগের নতুন কমিটির বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছে। ওরা ছাত্রলীগের কেউ নয়। 

বিডি প্রতিদিন/হিমেল

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর