চট্টগ্রাম নগরে ফের পানিবাহিত রোগের (হেপাটাইটিস-ই ভাইরাস) প্রকোপ দেখা দিয়েছে। নগরীর হালিশহরে পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হয়ে ইতোমধ্যে এইচ ব্লকের বাসিন্দা শাহেদা মিলি (৪০), বি-ব্লকের বাসিন্দা ও কমার্স কলেজের ছাত্র আশিফুল হাসান রিয়াদ এবং বি ব্লকের বাসিন্দা মাকসুদুর রহমান মারা যান বলে স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন।
তবে চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন কার্যালয় বলছে, তাদের মৃত্যু পানিবাহিত রোগ নাকি অন্য কোনো কারণে হয়েছে তা এখনও জানা যায়নি। তদন্ত ও পানি পরীক্ষা করার পরই এ ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া যাবে।
এর আগে গত মার্চে ওয়াসার পানিতে জীবাণু সংক্রমক হয়ে পানিবাহিত রোগে শতাধিক আক্রান্ত হয়েছিলেন।
চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ আজিজুর রহমান সিদ্দিকী বলেন, হালিশহরে কয়েকজন জন্ডিস আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করার কথা আমরা শুনেছি। তবে তারা কি জন্ডিসে আক্রান্ত নাকি অন্য রোগে মারা গেছে সে ব্যাপারে আমরা এখনও নিশ্চিত নই। তদন্ত ও পা টেস্ট শেষে তা জানা যাবে। তবুও পানিবাহিত রোগ থেকে বাঁচতে ১০টি নির্দেশনা সম্বলিত ৫০ হাজার লিফলেট এবং এক লাখ ৮৫ হাজার পানি বিশুদ্ধকরণে টেবলেট বিতরণ করা হয়েছে।
জানা যায়, পানিবাহিত রোগ থেকে বাঁচতে চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন কার্যালয় জরুরি ভিত্তিতে ১০টি নির্দেশনা দিয়েছে। তাছাড়া সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে নির্দেশনা সম্বলিত ৫০ হাজার লিফলেটও বিতরণ করা হয়েছে। সোমবার সকালে নগরের হালিশহরে বিভিন্ন এলাকায় লিফলেটগুলো বিতরণ করা হয়। তাছাড়া পানি বিশুদ্ধকরণে এক লাখ ৮৫ হাজার টেবলেটও বিতরণ করা হয়েছে।
নির্দেশনাগুলো হলো- বিশুদ্ধ পানি পান ও ব্যবহার নিশ্চিত করা, পানি ৩০ মিনিট ফুটিয়ে ফিটকিরি ব্যবহার করে অথবা পাঁচ লিটার পানিতে একটি পানি বিশুদ্ধকরণ টেবলেট দিয়ে আধ ঘণ্টা থেকে ১২ ঘণ্টার মধ্যে ব্যবহার করা, হোটেল বা দোকানের পানি পান না করা, রাস্তায় খোলা জায়গার শরবত, খাবার খাওয়া বন্ধ করা, এলাকায় কারও চোখ হলুদ হলে, ডায়রিয়া হলে বা তিনদিনের বেশি জ্বর থাকলে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া।
হালিশহর বিডিআর মাঠ থেকে বিশুদ্ধকরণ টেবলেট সংগ্রহ করা, গর্ভবতী নারীর চোখ হলুদ হলে স্থানীয় হাসপাতালে যোগাযোগ করা, বাসার ছাদে বা পানির নিচে সংরক্ষিত পানির ট্যাংক চারমাস পরপর ব্লিচিং পাউডার দিয়ে পরিষ্কার করা, খাবারের আগে ও মলত্যাগের পরে হাত অন্তত ২০ সেকেন্ড সাবান দিয়ে পরিষ্কার করা, হাতের নখ ছোট রাখা, খালি পায়ে বাথরুমে না যাওয়া এবং বাথরুমে আলাদা জুতা ব্যবহার করা, বিশুদ্ধ পানি সংরক্ষণের পাত্রটির নিচের অংশ নিয়মিত পরিষ্কার করা এবং ঢাকনা দিয়ে ঢেকে রাখা, পাতলা পায়খানা হলে ওরস্যালাইন ও ঘরের তৈরি চিনি লবণ মিশ্রিত শরবত বেশি বেশি পান করা এবং আতঙ্কিত না হয়ে বিশুদ্ধ খাবারের পানি খাওয়া ও ব্যবহার করা।
বিডি প্রতিদিন/২৫ জুন ২০১৮/আরাফাত