চট্টগ্রামে ভুল চিকিৎসা ও অবহেলায় শিশু কন্যা রাইফার মৃত্যুর ঘটনায় চিকিৎসকদের নিয়ন্ত্রণকারী একমাত্র সরকারি সংস্থা বাংলাদেশ মেডিকেল ও ডেন্টাল কাউন্সিলের (বিএমডিসি) নির্দেশনা মানেনি বেসরকারি ম্যাক্স হাসপাতাল। মঙ্গলবার সকাল ১০টায় বিএমডিসির গঠিত তদন্ত দল অভিযুক্ত চিকিৎসকদের এ হাসপাতালে উপস্থিত থাকতে বললেও তারা উপস্থিত ছিলেন না। বিএমডিসির গঠিত তদন্ত কমিটির চেয়ারম্যান অধ্যাপক রুহুল আমিন ও অপর তিন সদস্য হাসপাতালে চার ঘণ্টা অবস্থান করেন। কিন্তু অভিযুক্ত চিকিৎসকরা হাসপাতালে উপস্থিত না থাকায় তাদের সঙ্গে কথা বলা হয়নি। পক্ষান্তরে রাইফার পিতা রুবেল খানের সঙ্গেও কথা বলেনি তদন্ত কমিটি।
হাসপাতাল থেকে বের হয়ে রুহুল আমিন সাংবাদিকদের বলেন, ‘অভিযুক্ত চিকিৎসক ডা. বিধান রায় চৌধুরী, ডা. দেবাশীষ সেনগুপ্ত, ডা. শুভ্রদেবকে উপস্থিত থাকতে বললেও তারা উপস্থিত হননি। তদন্ত চলছে, চলবে। তদন্তে দোষী হলে নিয়ম অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
রাইফার পিতা রুবেল খান বলেন, ‘যে হাসপাতালে আমার মেয়ে ভুল চিকিৎসায় মারা গেছে, যাদের বিরুদ্ধে আমি মামলা করেছি, সে হাসপাতালে গিয়ে তদন্ত কমিটির সঙ্গে কথা বলব কি করে? তাছাড়া এখন আমি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত। তাই তদন্ত কমিটিকে আমি বলেছি, বাসায়, সার্কিট হাউস অথবা প্রেসক্লাবে বসার জন্য। কিন্তু তারা এতে রাজি হননি।’
প্রসঙ্গত, গত ২৯ জুন রাতে নগরের বেসরকারি ম্যাক্স হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন রাইফা খান। মৃত্যুর পর রাইফার পরিবার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অব্যবস্থাপনা, দায়িত্বরত চিকিৎসকদের ভুল চিকিৎসা ও অবহেলায় তার মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ করে আসছে। ওই দিন রাতেই এ জন্য দায়ী ডাক্তার এবং নার্সদের আটক করে চকবাজার থানা পুলিশ। কিন্তু ভোর রাতে তাদের ছাড়িয়ে আনতে থানায় গিয়ে অশোভন আচরণ এবং চট্টগ্রামে চিকিৎসাসেবা বন্ধের হুমকি দেন বিএমএ নেতা ফয়সল ইকবাল চৌধুরী ও তার সহযোগীরা। এ ঘটনায় সাংবাদিকসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের আন্দোলনের মুখে চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন আজিজুর রহমান সিদ্দিকীকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। এ তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে চিকিৎসক ও নার্সদের অবহেলায় রাইফার মৃত্যু হয়েছে বলে উল্লেখ করে। অন্যদিকে, এ ঘটনায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে গঠিত তদন্ত কমিটি ম্যাক্স হাসপাতালের লাইসেন্সে ত্রুটিসহ ১১টি অসঙ্গতি আছে বলে জানায়।
বিডি প্রতিদিন/২৪ জুলাই ২০১৮/হিমেল