দীর্ঘদিন ধরে পদ-বঞ্চিত থাকা ছাত্রদলের ত্যাগী নেতারা এবার স্থান পেয়েছেন চট্টগ্রাম মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলে। নগর ছাত্রদলের শীর্ষ নেতারা সম্প্রতি ঘোষিত কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ গুরুত্বপূর্ণ পদে স্থান পেয়েছেন। এই কমিটির নেতাদের আগামী ২ মাসের মধ্যেই পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
দীর্ঘদিন ধরে ঝিমিয়ে পড়া এ সংগঠনকে গতিশীল ও শক্তিশালী করতে দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা অন্যান্য নেতা-কর্মীদের সাথে সমন্বয় করে দলীয় সাংগঠনিক নানা কর্মসূচিসহ বিভিন্ন সময় সক্রিয়ভাবে মাঠে থাকবেন বলে জানান নতুন দায়িত্বপ্রাপ্ত সভাপতি ও সাবেক ছাত্রদল নেতা এইচএম রাশেদ।
তিনি বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের অনুমোদনকৃত এই কমিটিকে আগামী ২ মাসের মধ্যে কমিটি পূর্ণাঙ্গ করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। দলকে আরও সু-সংগঠিত করতে এবং সাংগঠনিক কর্মসূচি আরও গতিশীল ও শক্তিশালী হিসেবে গড়ে তুলতে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করে যাবে বলেও জানান তিনি।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, বিএনপি তথা সরকার বিরোধী আন্দোলন সংগ্রামে মাঠে ছিল এবং জেল, জুলুম, নির্যাতনের শিকার এমন ত্যাগী ছাত্রদলের অধিকাংশ নেতা পদ-বঞ্চিত ছিল। এসব নেতারা পদের বাইরে থাকলেও দলের নানাবিধ সাংগঠনিক কর্মসূচিতে প্রতিনিয়ত অংশগ্রহণের পাশাপাশি বিভিন্ন মিথ্যা মামলায় হয়রানির শিকারও হয়ে আসছে প্রতিনিয়ত। এসব নেতারা এবার চট্টগ্রাম মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পেয়েছেন।
গত বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের শীর্ষ নেতারা নতুন এ কমিটির অনুমোদন দেন। এতে নব-গঠিত নগর স্বেচ্ছাসেবক দলের কমিটিতে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ও নগর ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক এইচ এম রাশেদ খানকে সভাপতি এবং নগর ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক বেলায়েত হোসেন বুলুকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে।
এছাড়া কমিটির অন্যরা হলেন- সাবেক ছাত্রদল নেতা তোফাজ্জেল হোসেন সিনিয়র সহ-সভাপতি, খুলশী থানা ছাত্রদল সভাপতি আসাদুজ্জামান দিদারকে সহ-সভাপতি, নগর ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম-সম্পাদক আলি মর্তুজা খান সহ-সভাপতি, নগর ছাত্রদলের যুগ্ম-সম্পাদক জমির উদ্দিন নাহিদকে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং নগর ছাত্রদলের সহ-সভাপতি জিয়াউর রহমান জিয়াকে সাংগঠনিক সম্পাদক করা হয়েছে।
চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপিতে আভ্যন্তরিন কোন্দল থাকলেও স্বেচ্ছাসেবক দলের কমিটিতে পছন্দের প্রার্থীকে পদে স্থান দিতে নেতাদের তেমন বিরোধীতা ছিল না এবং মৌন সম্মতিও ছিল। ফলে আগামীতে কাজ করতেও তেমন বেগ পেতে হবে না বলে জানা গেছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক নেতা-কর্মী বলেন, রাজনৈতিক নানা ইস্যুতে দীর্ঘ বছর এ সংগঠন তেমন শক্তিশালী কর্মসূচি পালন করতে পারেনি। দলের নানা ইস্যুতেও ব্যর্থ হয়েছে। ছিল বিভিন্ন ধরণের অভ্যন্তরিন কোন্দলও। সবকিছুর ঊর্ধে থেকে এবার নতুন চমক এসেছে এ কমিটিতে। সাবেক ছাত্রনেতাদের নিয়েই আগামী আন্দোলন সংগ্রামে মাঠে থাকার জন্য কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। তবে এবার নতুন দায়িত্বপ্রাপ্ত কমিটি সাংগঠনিকভাবে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টায় নানাবিধ সাংগঠনিক কাজ করে যাবেন বলে প্রত্যাশা করছেন নেতা-কর্মীরা।
প্রসঙ্গত, দীর্ঘ ১৩ বছর পর ছাত্রদলের সাবেক নেতাদের নিয়ে ৭ সদস্য বিশিষ্ট একটি নতুন কমিটি ঘোষণা করেছে কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দল। চট্টগ্রাম মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের নতুন এ কমিটির ঘোষণা আসার পর নড়েচড়ে উঠেছে সাংগঠনিক কমিটির নেতারা। ১৩ বছর আগে নগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি ছিলেন সৈয়দ আজম উদ্দিন ও সাধারণ সম্পাদক ছিলেন এসকে খোদা তোতন।
বিডি প্রতিদিন/এনায়েত করিম