ঢাকায় বাসচাপায় দুই শিক্ষার্থী মৃত্যুর ঘটনায় নিরাপদ সড়কের দাবিতে চট্টগ্রামেও দ্বিতীয় দিনের মতো সড়কে অবস্থান নিয়ে চলছে বিক্ষোভ, প্রতিবাদ। শিক্ষার্থীরাই চেক করছে চালক ও গাড়ির লাইসেন্স। লাইসেন্স থাকলে ফিট, অন্যথায় ভুয়া। সারা দেশের মতো চট্টগ্রামের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে ছুটি ঘোষণা করা হলেও নিরাপদ সড়কের দাবিতে ছাত্ররা সড়কে বিক্ষোভ করছেন। তবে এই কর্মসূচিতে জনদুর্ভোগও কম ছিল না। বিভিন্ন সড়কে লেগে যায় যানজট।
সাধারণ মানুষের অভিযোগ, যানবাহন ও চালকের লাইসেন্স আছে কিনা তা দেখার দায়িত্ব পুলিশের। কিন্তু এখন কোমলমতি শিক্ষার্থীরাই পালন করছে জনগণের করের টাকায় সরকারের বেতনভোগী পুলিশের দায়িত্ব। এটি আমাদের জন্য দুঃখের।
জানা যায়, আজ সকাল থেকে নগরীর ওয়াসার মোড়, প্রবর্তক মোড়, গোলপাহাড় মোড়, জিইসি এবং দুই নম্বর গেট এলাকায় পরিবহনের চালকদের লাইসেন্স পরীক্ষা করছে তারা। সকাল সাড়ে ১০টা থেকেই বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা ইউনিফর্ম পড়ে ও কাঁধে ব্যাগ নিয়ে নগরের এসব মোড়ে সমবেত হয়। তবে ওয়াসার মোড়ে ইটের আঘাতে এক পুলিশ সদস্য আহত হয় বলে জানা যায়। সকাল থেকে তারা সড়কের পাশে অবস্থান নিয়ে শ্লোগান দিচ্ছিল। পরে ওই সড়ক ধরে চলাচলকারী যানবাহনের কাগজপত্র ও ড্রাইভিং লাইসেন্স দেখতে শুরু করে। দুপুরের দিকে সিডিএ এভিনিউ দিয়ে মূল সড়কে যান চলাচল প্রায় বন্ধ হয়ে যায়। এ সময় শিক্ষার্থীরা বাস, সিএনজিচালিত অটোরিক্সা, প্রাইভেট কারের চালকদের ড্রাইভিং লাইসেন্স দেখছিল। তবে রোগী বহনকারী এম্বুলেন্স ও কিছু গাড়ি চলে যেতে দেয় শিক্ষার্থীরা।
আন্দোলনরত একজন ছাত্র নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘আমাদের দাবি নিরাপদ সড়ক। আমরা চাই আর কোনো মায়ের বুক খালি না হোক। যদি চালকের লাইসেন্স না থাকে, গাড়ির ডকুমেন্ট ঠিক না থাকে, ফিটনেস না থাকে তবে দুর্ঘটনা ঘটতেই থাকবে।’
নগরীর দুই নম্বর গেট এলাকায় অবস্থায় নেয় ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজ, কাজেম আলী স্কুল এন্ড কলেজ, চট্টগ্রাম কলেজ, হাজী মুহাম্মদ মহসীন কলেজ, পলিটেকনিক্যাল ইন্সটিটিউট ও শ্যামলী পলিটেকনিকসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের হাজারো শিক্ষার্থী। সেখানেও একই উপায়ে যানবাহনের কাগজপত্র দেখছিল শিক্ষার্থীরা। অন্যদিকে ওয়াসার মোড়ে অবস্থান নিয়েছে বিএএফ শাহীন কলেজ, ক্যামব্রিয়ান কলেজ, বিজ্ঞান কলেজ, ক্যান্টনমেন্ট স্কুল এন্ড কলেজ, বাওয়া স্কুল এন্ড কলেজ এবং সরকারি সিটি কলেজের ছাত্রছাত্রীরা। এ সময় আশেপাশে বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন থাকলেও তারা ছিলেন নিস্ক্রিয়। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা ওয়াসার মোড় এলাকায় একটি বাস ভাংচুর করে। এরপর সেখান দিয়ে চলাচলকারী একটি পুলিশ ভ্যানকে থামানোর চেষ্টা করে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। গাড়ি না থামালে সেটি লক্ষ্য করে ঢিল ছুঁড়লে ভ্যানের চালক পুলিশ সদস্য আহত হয়।
নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) শাহ মো. আব্দুর রউফ বলেন, ‘ঢিলের আঘাতে এক পুলিশ সদস্য আহত হয়েছে। তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল (চমেক) কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।’
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার