আগামী ১৩ অক্টোবর চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলা নির্বাচনকে ঘিরে উত্তাপ ছড়াচ্ছে চট্টগ্রাম শহরেও। এ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ-বিএনপির দুই প্রার্থীই এলাকার শক্তিশালী প্রার্থী হিসেবে পরিচিত।
সাতকানিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করছেন দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ নেতা ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এমএ মোতালেব এবং দক্ষিণ জেলা বিএনপির যুগ্ম-সম্পাদক ও উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি বিএনপি মনোনীত উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী।
ইতিমধ্যে দু'জনই উপজেলার প্রায় প্রতিটি গ্রামে গ্রামে প্রচার প্রচারণা শুরু করেছেন। দুই প্রার্থীর পক্ষে গ্রামের প্রতিটি বাজারের বিভিন্ন চায়ের দোকানসহ বিভিন্ন উঠান বৈঠক করছেন নেতা-কর্মীরা। একই সাথে চট্টগ্রাম নগরীর রেয়াজউদ্দিন বাজার ও টেরি বাজারের প্রায় দোকান মালিক ও কর্মচারিরা সাতকানিয়া উপজেলার হওয়ায় পোস্টার ও ব্যানারে সয়লাব হয়েছে সমগ্র বাজার এলাকায়। প্রার্থীরা সারাদিন নির্বাচনী এলাকায় গণসংযোগ শেষে রাতেই দেখা মেলে সেই ভোট ব্যাংক খ্যাত এলাকার রেয়াজউদ্দিন বাজার ও টেরিবাজারেই। মূলত এখানেই নির্ধারণ হবে কে উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হবেন। এমনটাই ধারণা শহরে অবস্থানরত সাতকানিয়ার ব্যবসায়ীদের মাঝে। তবে ক্ষমতায় থেকে এবং ক্ষমতায় না থেকে যোগ্য প্রার্থী কতটুকু কাজ করতে পারবেন সেটিও বিবেচনা করছেন সাধারণ ভোটাররা। একই সাথে দুই যোগ্য প্রার্থী ব্যক্তিগত কতটুকু ইমেজ আছে সেটিও বিবেচনা করছেন তারা।
স্থানীয় বাসিন্দা সরওয়ার কামালসহ এলাকার একাধিক ভোটার বলেন, নির্বাচনী প্রচারণায় আওয়ামী লীগ-বিএনপির দুই প্রার্থীই মাঠে চষে বেড়াচ্ছেন। সাধারণ মানুষের কাছেও যাচ্ছেন। সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে এখানে দুই প্রার্থীর মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে নিশ্চিত। কারণ একজন সরকার দলের প্রার্থী হলেও এলাকায় সমাজ সেবামূলক কাজ করে আসছেন দীর্ঘদিন ধরেই। অন্যজন আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে বিএনপির প্রার্থী হওয়ার পাশাপাশি এখানে জামায়াতের সমর্থিত ভোট বেশি। এতে দুজনের ভোট হবে সমানে-সমানে। ভোটাররা গ্রহণযোগ্য প্রার্থী বিবেচনা করেই মূলত প্রার্থী নির্বাচন করবেন বলে জানান সাধারণ ভোটাররা।
রেয়াজ উদ্দিন বাজারের আলমগীর ও মোহাম্মদ ওয়াজেদসহ ব্যবসায়ীরা বলেন, জাতীয় নির্বাচনের বিষয়ে এলাকার যে কোন নির্বাচনের প্রার্থী নিধার্রণের অনেক কিছু ভূমিকা রাখতে পারেন ব্যবসায়ীরা। এখানে অনেকেই কৌশলে আবার গোপনে কাজ করে থাকেন। এবারের উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মোতালেব সাহেব যেমনি গ্রহণযোগ্য ব্যক্তি, ঠিক তেমনি বিএনপির গাফ্ফার সাহেবও আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে প্রার্থী হওয়ায় ব্যাপক আলোচনায় আছেন। শহরের মধ্যে রয়েছে উপজেলার হাজার হাজার ভোটার। সবকিছু বিবেচনা করেই যাকেই প্রতিনিয়িত কাছেই পাবেন এমন যোগ্য প্রার্থীকে নির্বাচিত করবেন বলে জানান তারা।
চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম-সম্পাদক ও সাতকানিয়া উপজেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মোজাম্মেল হক বলেন, দলের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করতে গিয়ে নানাভাবে হুমকি-ধমকির শিকার হতে হচ্ছে। প্রচার-প্রচারণায়ও সৃষ্টি করছে প্রতিনিয়িত। মাইক ছিনিয়ে নেয়াসহ পোস্টার-ব্যানার ছিড়ে ফেলা হচ্ছে। বিএনপি প্রার্থী আবদুল গফ্ফার চৌধুরীর সমর্থনে মাইকিং চলাকালে হামলা করা হয়েছে। তবে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী বিপুল ভোটেই জয়ী হবেন বলে জানান তিনি।
চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান বলেন, প্রধানমন্ত্রী ও দলের সভানেত্রী শেখ হাসিনা যাকেই মনোনয়ন দিয়েছেন তার পক্ষে সবাই কাজ করতে হবে। ইতিমধ্যে দলের নেতা-কর্মীরা মাঠেই প্রচার-প্রচারণা করে আসছে। তাছাড়া সরকারের উন্নয়নের ধারাবাহিকতার অংশ হিসেবে সাধারণ মানুষ দলের প্রার্থীকে জয়যুক্ত করবেন বলে আশা করছি। তবে যিনি (এমএ মোতালেব) মনোনয়ন পেয়েছেন, তিনি একজন ক্লিন ইমেজের মানুষ।
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার