চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে আসা অজ্ঞাত রোগীদের চিকিৎসা শেষে সাময়িক আশ্রয়ের জন্য চালু করা হয়েছে গৃহের আলো নামে একটি সেবাকেন্দ্র। আজ মঙ্গলবার বিকালে অজ্ঞাত রোগীদের সুযোগ-সুবিধা ও চিকিৎসা বঞ্চিত মানুষদের সেবায় আশ্রয় কেন্দ্রটি চালু করা হয়।
চমেক হাসপাতালের অনতিদূরে নগরের নাসিরাবাদ হাউজিং সোসাইটির (রূপনগর কমিউনিটি সেন্টারের বিপরীতে) একটি বাসায় ঠিকানাটি যাত্রা করে। এ সময় উপস্থিত ছিলেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সাবেক সদস্য অসীম কুমার রায়, সাবেক অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ ওয়াহিদ হোসাইন, অতিরিক্ত ডিআইজি (টুরিস্ট পুলিশ) মোহাম্মদ মুসলিম উদ্দিন, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ পুলিশ কমিশনার বিজয় বসাক, দৈনিক পূর্বদেশ পত্রিকার সহকারী সম্পাদক দেবদুলাল ভৌমিক, ইকুইটি প্রপার্টি ম্যানেজমেন্টের পরিচালক মাহফুজুল হক, পে ইট ফরওয়ার্ড বাংলাদেশ ও অলাভজনক অনলাইন শপ অনেস্ট এর উদ্যোক্তা বাদল সৈয়দ, আলহাজ শামসুল হক ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন, অজ্ঞাত রোগীর সেবক সাইফুল ইসলাম নেছার প্রমুখ।
চ্যারেটি অনলাইন শপ অনেস্ট, পে-ইট ফরোয়ার্ড, নেছার ফাউন্ডেশন ও আলহাজ শামছুল হক ফাউন্ডেশনের যৌথ উদ্যোগে এটি চালু হয়।
উদ্যোক্তারা বলেন, চমেক হাসপাতালে ভর্তি হওয়া (দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত নাম পরিচয়হীন রোগী) অজ্ঞাত মানুষকে হাসপাতালের পরবর্তী সেবা দেওয়া ও নাম-পরিচয় খুঁজে পাওয়ার আগ পর্যন্ত আশ্রয়সহ সকল সুবিধা দিতে গৃহের আলো চালু করা হয়েছে। কারণ অনেক রোগী পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠে না, অনেকে তাদের স্মৃতি শক্তি ফিরে পান না। অবশেষে তাদের ঠিকানা হয় রাস্তা বা ফুটপাত। এই অবস্থার অবসান থেকে কিছুটা মুক্তি দিতে ছোট পরিসরে এ উদ্যোগটি নেওয়া হয়।
অজ্ঞাত রোগীর সেবক প্রকৌশলী সাইফুল ইসলাম নেসার বলেন, ‘অজ্ঞাত রোগীরা হাসপাতালে ভর্তির পর একটু ভাল হলেই নানাভাবে চলে যেতে চেষ্টা করে। অথচ তখনো তাদের পূর্ণাঙ্গ চিকিৎসা শেষ হয়নি। ফলে তারা পরিপূর্ণভাবে সুস্থ হয়ে ওঠে না। এমন রোগীদের সেবায় আমরা গৃহের আলো নামের একটা ঠিকানা গড়ে তুলেছি। এখানে তাদের প্রয়োজনীয় সেবা দেওয়া হবে। দুইটি শয্যা নিয়ে যাত্রা করলেও শিগগিরই সাত শয্যায় উন্নীত করা, চিকিৎসক ও সাইকোলজিস্ট নিয়োগ দেওয়ার পরিকল্পনা আছে।’
জানা যায়, অজ্ঞাত রোগীর সেবক নেছার ২০০৭ সাল থেকে চমেক হাসপাতালে দুর্ঘটনাসহ নানা কারণে আগত সকল অজ্ঞাত রোগীর সেবা দিয়ে আসছেন। ইতোমধ্যে ৮১৩ অজ্ঞাত রোগীর সেবা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু হাসপাতালে সেবার পর তাদের আরও কিছু সেবা থেকে যায়। অজ্ঞাত রোগীদের এর কোনো ব্যবস্থা নেই। তাই নেছারসহ কয়েকটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের উদ্যোগে তাদের জন্য তৈরি করা হয় গৃহের আলো নামের ঠিকানা। এখানে তাদের সাময়িক আশ্রয় দিয়ে সেবার মাধ্যমে পরিপূর্ণ সুস্থ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/এনায়েত করিম