চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী করতে বিভিন্ন ওয়ার্ডে যোগ্য কাউন্সিলর প্রার্থী পাচ্ছেন না জাতীয় পার্টির (জাপা) নেতারা। নতুন নেতৃত্ব তৈরি, অভ্যন্তরীণ কোন্দল, অসন্তোষ, নেতাদের কেন্দ্রমুখী আচরণ, কর্মসূচীবিহীন সংগঠনসহ নানাবিধ অভিযোগ তৃণমূলের একাধিক নেতার। সবমিলে এবার চসিক নির্বাচনে নগরীর ৪১ ওয়ার্ডের পুরুষ কাউন্সিলর এবং সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর পদে দলের যোগ্য প্রার্থী নিয়ে সংকটে পড়েছেন বলে নেতাদের দাবি। তবে দল থেকে মেয়র প্রার্থী হিসেবে নগর জাপার সভাপতি ও দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য সোলায়মান আলম শেঠকে মনোনয়ন দিয়েছেন বলে দলীয় সূত্রে নিশ্চিত করেছেন।
দলীয় নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা জানা গেছে, দীর্ঘ বছর ধরেই নগর জাতীয় পার্টির আভ্যন্তরীণ কোন্দল লেগেই আছে। নগর কমিটির সভাপতি সোলামান আলম শেঠ ও সাবেক সভাপতি মেহজাবিন মোরশেদের সাথে মতবিরোধের জের ধরেই তৃণমূলের নেতারাও কোন্দলে জড়িয়ে পড়েন। এখানে জাতীয় পার্টির নতুন কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব আসার পর কেন্দ্রে চাঙাভাব থাকলেও চট্টগ্রাম নগরীতে রয়েছে চকবাজার কেন্দ্রীয় তৎপরতা। কারণ নগর কমিটির সভাপতি সোলায়মান আলম শেঠের বাসা-অফিস চকবাজারেই। বাসাতেই এখন অফিস বানানো হয়েছে বলে অভিযোগ তৃণমূল নেতাদের। দীর্ঘ বছর ধরেই রয়েছে চট্টগ্রাম নগরীর থানা-ওয়ার্ড কমিটি বিহীন জাতীয় পার্টি (এরশাদ)। নগর জাপার কর্মকাণ্ড চকবাজার কেন্দ্রীক নামেমাত্র। ওয়ার্ড ও থানায় দলের কর্মকাণ্ড এক কথায় অস্তিত্বহীন।
চট্টগ্রাম মহানগর জাতীয় পার্টির সাংগঠনিক সম্পাদক রেজাউল করিম রেজা বাংলাদেশ প্রতিদিন বলেন, জাতীয় পার্টির চট্টগ্রাম বর্তমান নগর কমিটির সভাপতি-সম্পাদকের চরম অরাজনৈতিক পক্ষপাতদুষ্ট আচরণে চকবাজার কেন্দ্রীক হ-য-ব-র-ল কর্মকাণ্ড চলছে। যে কোন নির্বাচন আসলেই শুধুই নেতা মেয়র, এমপিসহ নানাবিধ পদেই দাঁড়িয়ে যান। তিনি বলেন, কয়েক নেতাই দলের বারোটা বাজিয়ে দিয়েছেন। এখানে ওয়ার্ড ও থানা পর্যায়ে কোন ধরনের কমিটি না থাকায় নতুন নেতৃত্ব তৈরি বা নেতা-কর্মী তৈরি হচ্ছে না। ফলে দলের আগামীর ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন এবং দলীয় কর্মীদের রাজনীতিবিমুখ হতে পারে। এখনও সময় আছে, কেন্দ্রীয় নেতাদের নির্দেশনায় এবং চট্টগ্রামের নেতারা এক হয়ে মাঠ তৈরি করতে হবে। অন্যথায় অচিরেই নেতৃত্ব শূন্যসহ নানাবিধ সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে বলে জানান তিনি।
জাতীয় পার্টির নগর সভাপতি সোলায়মান আলম শেঠ বলেন, নগর জাপার সাংগঠনিক তৎপরতা রয়েছে বিভিন্ন স্থানে। দলের বিভিন্ন কর্মসূচিও পালন করা হচ্ছে। এখানে একটি চক্র পদ হারিয়ে এবং রাজনীতির মাঠে কাজ না করে বিভিন্ন প্রপাগাণ্ডা চালিয়ে আসছেন। চসিক নির্বাচনে ওয়ার্ডের প্রার্থীও দেয়া হবে কেন্দ্রীয় নির্দেশনায়। আমরা চাই, দলের সবাই এক হয়ে দলীয় প্রার্থীদের জয়ী করার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি।
প্রসঙ্গত, এবারের চসিক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে ২৯ মার্চ। তফসিল অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ সময় ২৭ ফেব্রুয়ারি। মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাইয়ের শেষ তারিখ ১ মার্চ। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ৮ মার্চ। এছাড়া ৯ মার্চ প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হবে। এবারের নির্বাচনে ভোটগ্রহণ করা হবে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম)।
বিডি প্রতিদিন/ফারজানা