চট্টগ্রাম জেলা আঞ্চলিক নির্বাচন অফিসেরে ২৪ ঘণ্টার দেয়া নির্দেশনা ১২ দিনেও বাস্তবায়ন করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে প্রশাসনের। চলছে, হচ্ছে, চলমানেই সীমাবদ্ধ। চসিকের নির্বাচনী এলাকা বা নগরীর বিভিন্ন স্পট থেকে শুভেচ্ছা সন্বলিত ব্যানার-পোস্টার অপসারণের নির্দেশ দিলেও প্রার্থীরা স্ব-উদ্যেগে অপসারণের কথা থাকলেও এসব নিয়ে চিন্তাও করছেন না কাউন্সিলর প্রার্থীরা। তাছাড়া নির্বাচন কমিশনের দেয়া সেই নির্দেশনাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখানোর মতো কাজ করছেন প্রার্থীরা।
এসব পোস্টার, ব্যানার উচ্ছেদে ইতিমধ্যে নির্বাচনের দায়িত্বশীল নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা মাঠে নেমেছেন উচ্ছেদের জন্য। তবু এখনও দেয়ালেই শোভা পাচ্ছে পোস্টার-ব্যানার। এ অবস্থায় নির্বাচনের আচরণবিধি পর্যবেক্ষণ করতে ১৪ জন ম্যাজিস্ট্রেটকে মাঠে নেমেছে। ব্যানার- পোস্টার দ্রুত অপসারণ করতে সিটি করপোরেশনকেও নির্দেশনা দিয়েছে ইসি। কমিশনের নির্দেশনার পরও অনেক প্রার্থীর নির্বাচনী সরঞ্জাম দেখে মিশ্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করছেন ভোটাররা।
চট্টগ্রাম আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ হাসানুজ্জামান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, নির্বাচন অফিসের দেয়া নির্দেশনা ছিল সিটি নির্বাচনে আগ্রহী প্রার্থীদের পক্ষে শুভেচ্ছা বাণী, দোয়াপ্রার্থী সম্বলিত ব্যানার, পোস্টার, দেয়ালিকা, বিলবোর্ড, গেট, তোরণ, প্যান্ডেল, আলোকসজ্জা ইত্যাদি প্রচার সামগ্রী প্রার্থীদের স্ব-উদ্যোগে অপসারণ করার। নির্দেশনার পরও নির্বাচনী সরঞ্জাম সরাননি প্রার্থীরা। বিষয়টি আমাদের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। এ অবস্থায় আচরণবিধি পর্যবেক্ষণ করতে ১৪ জন ম্যাজিস্ট্রেট মাঠে নেমেছেন। নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করলে তারা তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেবেন। তবে সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রশ্নে সব ধরনের পদক্ষেপ নিচ্ছি। এতে নির্বাচনী আইন না মানার সুযোগ নেই।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ফাহমিদা আফরোজ বলেন, দেয়ালে, পোস্টার ও ব্যানারসহ নানাবিধ উপকরণ সরানোর জন্য ইতিমধ্যে অভিযান শুরু করেছি। প্রতিদিন ২টার পরেই উচ্ছেদ করা হয়। আশা করছি দ্রুত সময়ের মধ্যেই সফলভাবেই কাজ শেষ করতে পারবো।
নির্বাচন অফিস ও সরেজমিনে দেখা যায়, চসিকের রিটার্নিং কর্মকর্তা হাসানুজ্জামান গত ২৩ ফেব্রুয়ারি এক আদেশে নগরীতে প্রার্থীদের শুভেচ্ছা সম্বলিত পোস্টারসহ নানা উপকরণ অপসারণের নির্দেশ দিলেও বাস্তবায়ন হচ্ছে দায়সারাভাবে। অনেকেই বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের এবং স্বতন্ত্র হিসেবেও মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছিলেন। যারা মনোনয়নপত্র পাননি, মূলত তারাই এসব নিয়ে চিন্তা করছেন না। তাছাড়া এখনও নগরের অলিগলিতে ঝুলছে অনেকের ব্যানার-পোস্টার। নির্দেশনা না মেনে প্রার্থীরা কমিশনকে 'বৃদ্ধাঙ্গুলি' দেখাচ্ছেন। সরেজমিন ঘুরে ব্যানার-পোস্টার দেখা যায়।
সরেজমিনে দেখা যায়, নগরীর ২১ নম্বর জামালখান ওয়ার্ড। আনুষ্ঠানিকভাবে প্রচার শুরু না হলেও এ ওয়ার্ডের বেশিরভাগ এলাকায় নির্বাচনী সরঞ্জাম চোখে পড়েছে। আওয়ামী লীগের দলীয় কাউন্সিলর প্রার্থী শৈবাল দাশ সুমন, আবদুল মান্নান, প্রকৌশলী বিজয় কুমার চৌধুরী কিষাণ, জাপার মেয়র প্রার্থী সোলায়মান আলম শেঠ, এনপিপির ড. জাহেদ খানসহ আরো অনেকের পোস্টার, ব্যানার রয়েছে। এমন প্রায় প্রতিটি ওয়ার্ডেই শোভা পাচ্ছে পোস্টার-ব্যানার। জামাল ওয়ার্ডের ভোটার জাহেদ হোসেন বলেন, কমিশন ব্যানার-পোস্টার অপসারণের নির্দেশনা দিলেও তা মানছেন না অনেক প্রার্থী। উল্টো নতুন নতুন ব্যানার-পোস্টার লাগানো হচ্ছে। মাঈনুদ্দিন কাদের লাভলু বলেন, এখনও প্রতীক বরাদ্দই হয়নি। শুরু হয়নি আনুষ্ঠানিক প্রচারও। জামাল খানসহ বিভিন্ন ওয়ার্ডে ব্যানার-পোস্টারে বেশিরভাগ এলাকা ছেয়ে গেছে।
বিডি-প্রতিদিন/শফিক/সাইদুল ইসলাম