কোভিড-১৯ প্রতিরোধে সারাবিশ্বের মতো বাংলাদেশে সারাদেশে ‘লকডাউন’ পরিস্থিতিতে বন্দর নগরী চট্টগ্রামে ২০ হাজার পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছেন সদ্য স্থগিত হওয়া চট্টগ্রাম সিটি নির্বাচনে বিএনপি মনোনীত ধানের শীষের প্রার্থী ডা. শাহাদাত হোসেন। চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির এই সভাপতি এরই মধ্যে প্রায় ৩৫টি ওয়ার্ডে প্রথম দফায় হতদরিদ্রদের মধ্যে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করেছেন। আবারো দ্বিতীয় দফায় বিতরণের কাজ শুরু হচ্ছে। ঈদুল ফিতর পর্যন্ত এই খাদ্য সামগ্রী বিতরণ অব্যাহত থাকবে বলে জানান ডা. কাহাদাত।
উল্লেখ্য, ২৩ মার্চ নির্বাচন স্থগিত হওয়ার আগে ১৮ মার্চ থেকে তিনিই প্রথম চট্টগ্রাম নগরীর বিভিন্ন পয়েন্টে মাস্ক বিতরণ শুরু করেন। এমনকি চট্টগ্রাম সিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থীকেও তিনি মাস্ক পরিয়ে দেন। এরপর ২৬ মার্চ থেকে লকডাউন শুরু হলে ডা. শাহাদাত হোসেন হতদরিদ্রদের মধ্যে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ শুরু করেন। অনেক সময় তিনি সরাসরি না গিয়ে তার প্রতিনিধিদের মাধ্যমে পাঠিয়ে দিচ্ছেন নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী।
এদিকে আজও নগরীর পাহাড়তলীর সাগরিকা এলাকায় পুরোপুরি লকডাউন ঘোষণা হলে সেখানে ৫০টি পরিবারের পাশে দাড়ান ডা. শাহাদাত হোসেন। তিনি নিজে চিকিৎসা পেশায় জড়িত থাকায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে নিজের পেজে লাইভ অনুষ্ঠান করে প্রতিদিন সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা থেকে রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত টেলি মেডিকেল সার্ভিস দিয়ে যাচ্ছেন। বাংলাদেশ ছাড়াও বিশ্বে বসবাসরত বিভিন্ন দেশ বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশ থেকে বাংলাদেশিদের নিয়মিত করোনা পরিস্থিতি নিয়ে স্বাস্থ্য পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন শাহাদাত হোসেন।
এ প্রসঙ্গে ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, বিশ্বব্যাপী যে মহামারি শুরু হয়েছে তাতে বাংলাদেশও আক্রান্ত। প্রতিদিনই লাফিয়ে লাফিয়ে মৃত্যু ও আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েই চলছে। এ জন্য আমাদের সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। বিশ^ স্বাস্থ্য সংস্থার পরামর্শগুলো আমলে নিতে হবে। আমি যেহেতু রাজনীতির পাশাপাশি একজন চিকিৎসকও, তাই এ মূহুর্তে মানুষকে করোনা নিয়ে স্বাস্থ্য পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি। পাশাপাশি হতদরিদ্র মানুষের পাশে থাকার সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে যেভাবে এ রোগীর সংখ্যা বাড়ছে তাতে লকডাউনের সময়সীমা আরো বাড়তে পারে। এখানে কোটি কোটি দরিদ্র জনগোষ্ঠি রয়েছে। তাদের পাশে কার্যত সরকারকেই দাঁড়াতে হবে। কিন্তু অসহায় দরিদ্ররা ঠিকমতো সরকারি চাল বা খাদ্য সামগ্রী পাচ্ছে না। ত্রাণের চাল চুরি হয়ে যাচ্ছে। এর চেয়ে দু:খজনক আর কি হতে পারে। আমরা বিরোধী দলে থেকেও যতটুকু সম্ভব দরিদ্রদের পাশে থাকার চেষ্টা করছি। এ নিয়ে এখন আর কোনো রাজনীতি নয়। সরকার, বিরোধী দলসহ দেশের সব শ্রেণী পেশার মানুষের মধ্যে যারা বিত্তশালী সবাইকে সেবার মনোভাব নিয়ে এগিয়ে আসতে হবে। একইভাবে আমি মোনাফাখোর ব্যবসায়ীদের উদ্দেশে বলবো, এবার থামুন। করোনায় যদি মারাই যান, তাহলে এত টাকা দিয়ে কি হবে? মানুষকে জিম্মি করবেন না। চাল, ডাল, পেয়াজ ও আলুর দাম আগের চেয়ে অনেক বেড়েছে। সরকারকে বলবো, দ্রুত বাজার নিয়ন্ত্রণে আনুন। এটা আপনাদের দায়িত্ব। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো রমজানে সব নিত্যপ্রয়োজনীয় উপকরণের দাম কমিয়ে দিন।
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার