করোনাভাইরাস প্রকোপ দেখা দেওয়ার পর থেকেই চট্টগ্রামে এ রোগের চিকিৎসায় সঙ্গী হয় নানা সংকট। ছিল না নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (আইসিইউ), নমুনা পরীক্ষার ল্যাব মাত্র একটি, সেবা দেওয়া হচ্ছে দুইটি হাসপাতালে। তবে এখন চট্টগ্রামে করোনাভাইরাসের চিকিৎসায় নতুন করে যুক্ত হচ্ছে দুটি সেবা।
এর মধ্যে চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে চালু হচ্ছে ১০ ভেন্টিলেটরসহ আইসিইউ সেবা এবং চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের পাশে তিনটি ক্লাসরুমে চালু করা হচ্ছে করোনাভাইরাস নমুনা পরীক্ষায় ল্যাব।
বর্তমানে চট্টগ্রামে কেবলমাত্র বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজের (বিআইটিআইডি) ল্যাবে করোনাভাইরাসের নমুনা পরীক্ষা করা হচ্ছে। কিন্তু এটি নগর থেকে দূরে অবস্থিত হওয়ায় রোগী ও স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানকে দুর্ভোগে পড়তে হয়।
জানা যায়, করোনা আক্রান্ত রোগীদের সংকটাপন্ন অবস্থায় আইসিইউ সেবা অতিজরুরি। কিন্তু চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে এ সেবা ছিল না। গত ৩০ মার্চ সরকার এ হাসপাতালে ভেন্টিলেটরসহ ১০ আইসিইউ শয্যা বরাদ্দ দেয়। আগামী সোমবার থেকে এসব শয্যায় রোগীদের সেবা দেওয়া শুরু হবে।
অন্যদিকে, চমেক হাসপাতালের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগে করোনাভাইরাস পরীক্ষায় পলিমার চেইন রিঅ্যাকশন (পিসিআর) ল্যাবে মেশিন স্থাপন, ল্যাবের ভেতরে চিকিৎসক ও রোগীদের বসার স্থান, নমুনা সংগ্রহের রুম, ওয়াশ রুম, গোসলখানা স্থাপন করা হয়। গত ২৫ মার্চ থেকে কলেজের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগে ল্যাব স্থাপনের কাজ শুরু হয়।
চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি বলেন, ‘করোনাভাইরাস রোগীদের চিকিৎসায় চট্টগ্রামে দু'টি নতুন সেবা চালু হচ্ছে। এর মধ্যে আগামী সোমবার জেনারেল হাসপাতালে চালু করা হবে ১০ শয্যার আইসিইউ সেবা। তাছাড়া আগামী তিন-চার দিনের মধ্যে চমেক হাসপাতালের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগে চালু করা হবে নমুনা পরীক্ষায় পিসিআর ল্যাব। এটি চালু হলে আরও বেশি বেশি নমুনা পরীক্ষা করা সম্ভব হবে। এখন থেকে নগর এবং দক্ষিণ চট্টগ্রামের রোগীরা চমেক হাসপাতালেই নমুনা পরীক্ষা করতে পারবেন।’
জানা যায়, চট্টগ্রামে গত ২৬ মার্চ থেকে বিআইটিআইডি ল্যাবে করোনাভাইরাসের নমুনা পরীক্ষা শুরু হয়। কিন্তু প্রতিদিন করোনাভাইরাস সন্দেহভাজন রোগী ক্রমশ বাড়তে থাকায় নমুনা পরীক্ষায় হিমশিম খাচ্ছে বিআইটিআইডি কর্তৃপক্ষ। ফলে বিআইটিআইডি ও জেনারেল হাসপাতালে সন্দেহজনক উপসর্গ নিয়ে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের নমুনা পরীক্ষা করা সম্ভব হয় না। বিলম্ব হচ্ছে রোগ শনাক্তকরণ কাজ। বর্তমানে চট্টগ্রামে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হন ৩৩ জন। তারা সবাই বিআইটিআইডি ও জেনারেল হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন।
বিডি-প্রতিদিন/সিফাত আব্দুল্লাহ