৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২০ ২১:৫৬

চট্টগ্রাম বন্দরে পাকিস্তানের ১৭৫ টন পিয়াজ খালাস

ফারুক তাহের, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রাম বন্দরে পাকিস্তানের ১৭৫ টন পিয়াজ খালাস

দেশের বাজারে পিয়াজের সংকট ও বাজার দর কমাতে ব্যবসায়ীদের এলসি করা চালানগুলো একের পর এক আসতে শুরু করেছে বন্দরে। ইতোমধ্যে চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে মিয়ানমার, পাকিস্তান থেকে আসা পিয়াজের চালান খালাস হয়েছে। 

আজ বুধবার পাকিস্তান থেকে আমদানি করা ১৭৫ টন পিয়াজ খালাস হয়। এর আগে সোমবার মিয়ানমার থেকে আসা ৫৮ মেট্রিক টনের প্রথম চালানটি খালাস হয় চট্টগ্রাম বন্দরে। 

এছাড়াও খালাসের অপেক্ষায় রয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই) থেকে আসা আরও একটি চালান। এতে ২৯ টন পিয়াজ রয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির নামে পাকিস্তান থেকে আসা ২ কনটেইনারে ৫৯ টন পিয়াজ খালাস হয়েছে বুধবার। ভারতের বিকল্প হিসাবে অন্তত ১২টি দেশের পিয়াজে দেশের বাজার সয়লাব হয়ে যাবে বলে ধারণা করছেন দেশের পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ীরা। এছাড়া বাংলাদেশ ট্রেডিং করপোরেশনের (টিসিবি) ট্রাকগুলোতেও এখন মিলবে দেশি পিয়াজ।

টিসিবির চট্টগ্রাম আঞ্চলিক প্রধান জামাল উদ্দিন আহমদ জানান, এখন থেকে টিসিবির ট্রাকে দেশি পিয়াজ বিক্রি হবে ভোক্তা পর্যায়ে প্রতি কেজি ৩০ টাকা। নগরের বিভিন্ন স্পটে ২০টি ট্রাকে পিয়াজ, চিনি, সয়াবিন তেল, মশুর ডাল বিক্রি হচ্ছে। প্রতিটি ট্রাকে ২০০ কেজি পিয়াজ দেওয়া হচ্ছে।

এদিকে চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরের উদ্ভিদ সংগনিরোধ কেন্দ্রের উপ-পরিচালক ড. মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান বুলবুল জানান, মিয়ানমার ও পাকিস্তান থেকে আসা ১৭৪ টন পিয়াজের ছাড়পত্র ইস্যু করেছি আমরা। এ কেন্দ্র থেকে ১ লাখ ৪৭ হাজার ৫৫৪ টন পিয়াজ আমদানির জন্য ৩২২টি অনুমতিপত্র (আইপি) নিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

চীন, মিশর, তুরস্ক, মায়ানমার, নিউজিল্যান্ড, নেদারল্যান্ডস, মালয়েশিয়া, সাউথ আফ্রিকা, ইউক্রেন, সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই), ভারত (২০০ টন) ও পাকিস্তান- এ ১২ দেশ থেকে এসব পিয়াজ আনবেন তারা।

বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, কয়েকটি শিল্প-গ্রুপ সংকট নিরসনে পিয়াজ আমদানির উদ্যোগ নিয়েছে। নেদারল্যান্ড, তুরস্ক, মিশর থেকে ২০ হাজার মেট্রিক টন পিয়াজ আমদানির লক্ষ্যে এস আলম গ্রুপ এলসি খুলেছে। ঢাকা ও চট্টগ্রামের ছোট-বড় আমদানিকারক মিলে প্রায় ৬ লাখ টন পিয়াজ আমদানি করবে সমুদ্রপথে। 

দেশের অন্যতম পাইকারি বাণিজ্যালয় খাতুনগঞ্জের ইরা ট্রেডার্সের আড়ৎদার রিতাপ উদ্দিন বাবু বলেন, চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে আসা মিয়ানমার ও পাকিস্তানের পিয়াজের মান ভালো হওয়ায় ৭০ টাকা বিক্রি হয়েছে পাইকারিতে। বন্দর থেকে কিছু পিয়াজ দেশের অন্যান্য এলাকায়ও সরবরাহ হয়েছে। চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে পিয়াজ আসার এই ফ্লো দুয়েকদিনের মধ্যে আরও বাড়বে। এতে বাজারে সরবরাহ যেমন বাড়বে, দামও কমবে।

খাতুনগঞ্জে ভোগ্যপণ্যের এক বড় আমদানিকারক জানান, তাদের এলসির বিপরীতে মিশরে পিয়াজের কনটেইনার জাহাজে লোড হয়েছে। আসতে যে ক’দিন সময় লাগে। পাইপলাইনে আরও আছে। প্রথম ধাপে হল্যান্ড ও মিশর থেকে ৫ হাজার টন পিয়াজ আমদানি করছে গ্রুপটি। 

জানা গেছে, চট্টগ্রাম বন্দরে মঙ্গলবার পর্যন্ত মোট ৪০ ফুট দীর্ঘ ৯ কনটেইনার পিয়াজ এসেছে। এর মধ্যে ‘কোটা এনগেরিক’ জাহাজে আসা ২ কনটেইনারে কায়েল স্টোরের ৫৮ টন খালাস হয়েছে বন্দর থেকে। এগুলোর রফতানি কারক সিঙ্গাপুরের ইন্দো সুয়েজ ট্রেডিং লিমিটেড। অন্যদিকে ‘এক্স-প্রেস লোটসি’ জাহাজে এসেছে তিন আমদানিকারকের ৭ কনটেইনার পিয়াজ। এর মধ্যে চট্টগ্রামের গ্রিন ট্রেডের নামে পাকিস্তান থেকে এসেছে ৪ কনটেইনারে ১১৬ টন এবং ঢাকার সজীব এন্টারপ্রাইজের নামে এসেছে ২ কনটেইনারে ৫৯ টন। সজীবের নামে ইউএই থেকে এসেছে ১ কনটেইনারে ২৯ টন।   

বিডি প্রতিদিন/আবু জাফর

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর