বাণিজ্য সচিব ড. মো. জাফর উদ্দিন আজ চট্টগ্রামে একটি অনুষ্ঠানে জানিয়েছেন, রপ্তানিপণ্য বহুমুখীকরণ ও পণ্যের গুণগত মানোন্নয়নে দেশে ৪টি টেকনোলজি সেন্টার নির্মাণ করতে যাচ্ছে সরকার। বাণিজ্য মন্ত্রণালেয়র একটি প্রকল্পের অধীনে, সাড়ে চারশ কোটি টাকা ব্যয়ে ৪টি আন্তর্জাতিক মানের প্রযুক্তি কেন্দ্র নির্মাণ করা হবে।
চট্টগ্রামের মিরশরাইয়ে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চলের সম্মেলন কক্ষে বেজা কর্তৃক বাণিজ্য মন্ত্রলালয়ের ইসিফোরজে প্রকল্পের কাছে ১০ একর জমি হস্তান্তর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন তিনি। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায়।
সচিব বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগর, মিরশরাই, চট্টগ্রামে বিশ্বমানের টেকনোলজি সেন্টার নির্মাণের জন্য বেজার কাছ থেকে আজ ১০ একর জমি বুঝে পাওয়া গেল। বঙ্গবন্ধু হাই-টেক সিটি কর্তৃপক্ষ ইসিফোরজে প্রকল্পের কাছে ৪.০৪ একর জমি পাওয়া গেছে। বাকি দুটি সেন্টারের জমিও পাওয়া যাবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
বাণিজ্য সচিব বলেন, তৈরি পোশাক শিল্পের বাইরে সম্ভাবনাময় পণ্যের রপ্তানির বাড়াতে জোর দিচ্ছে সরকার। তিনি সম্ভাবনাময় ৪টি পণ্য-চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, ফুটওয়্যার, প্লাস্টিক গুডস্ ও হাল্কা ইঞ্জিনিয়ারিং পণ্যের নাম উল্লেখ করে বলেন, এসব পণ্য রপ্তানিতে সরকার উৎসাহিত করছে।
বাণিজ্য সচিব বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমাদের যে অভীষ্ট লক্ষ্য বৈশ্বিক উন্নয়ন এজেন্ডা ২০৩০, সরকারের ভিশন তথা ২০৩১ সালের মধ্যে উচ্চ মধ্যম আয়ের দেশে এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশের মর্যাদা অর্জনে ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবো।
বাণিজ্যসচিব বলেন, দেশের রপ্তানি বৃদ্ধির জন্য সরকার এ অঞ্চলের গুরুত্ব বিবেচনা করে এবং ব্যবসায়ী মহলের দাবির প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ, বেজার মাধ্যমে শিল্প অবকাঠামো উন্নয়নে দেশের সর্ববৃহত পরিকল্পিত শিল্প নগরি হিসেবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগর, মিরশরাই গড়ে তুলছে। এখানে আধুনিক সুবিধা সম্বলিত বিশ্বমানের এ টেকনোলজি সেন্টারে হালকা প্রকৌশল ও প্লাস্টিকস খাতসহ সংশ্লিষ্ট ম্যানুফ্যাকচারিং খাতের শিল্প সমূহের জন্য লাগসই প্রযুক্তিগত সেবা, যুগোপযোগী প্রশিক্ষণ, আন্তর্জাতিক বাজারসংক্রান্ত তথ্য সরবরাহ, প্রয়োজনীয় কারিগরি ও ব্যবসায়িক পরামর্শ সেবা প্রদানের মাধ্যমে দেশীয় ক্ষুদ্র এবং মাঝারি শিল্পসমূহকে রপ্তানি সক্ষম করে তোলা হবে।
শিল্প প্রতিষ্ঠান সমূহের জন্য সেন্টারগুলোতে থ্রি-ডি প্রিন্টিং ও ডিজাইন সেন্টার, টেস্টিং ও ক্যালিব্রেশন ল্যাব, ইন্ডাস্ট্রিয়াল অটোমেশন সেন্টার, টেকনোলজি ইনোভেশন ও ইনকিউবেশন সেন্টার, ওয়ার্কশপ, মেশিন-শপ, লাইব্রেরি ভবন, বিজনেস সেন্টার ইত্যাদি সুবিধা থাকবে। আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের সীমাবদ্ধতা, বিভিন্ন ধরণের ডাই মোল্ডের দুষ্প্রাপ্যতা, পণ্যের ডিজাইন প্রণয়ন ও উদ্ভাবনী সক্ষমতার ঘাটতি, গুণগত মান, টেস্টিং ও সার্ভিসিং যোগানের অপর্যাপ্ততা ও দক্ষ শ্রমশক্তির ঘাটতি দূর করণের মাধ্যমে সেক্টরসমূহের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে অন্যতম ভূমিকা পালন করবে এই টেকনোলজি সেন্টার।
উল্লেখ্য, প্রকল্পের সাড়ে চারশত কোটি টাকার মধ্যে বিশ্বব্যাংকের সহায়তা ৩১৮ কোটি টাকা এবং বাংলাদেশ সরকার ১৩২ কোটি টাকা ব্যয় করছে। অনুষ্ঠানে বেজার পক্ষ থেকে বাণিজ্য সচিবের কাছে আনুষ্ঠানিক ভাবে উল্লিখিত জমি হস্তান্তর করা হয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়লে ইসিফোরজে প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (রপ্তানি) মো. ওবায়দুল আজমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বেজার যুগ্ম সচিব মো. মনিরুজ্জামান বক্তব্য রাখেন।
বিডি প্রতিদিন/আল আমীন