অস্ত্রের মুখে এক ব্যাংক কর্মকর্তাসহ তিন ব্যক্তির সর্বস্ব ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মীরসরাই থানাধীন বারৈয়ার হাট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড বারৈয়ার হাট শাখার কর্মকর্তা আবদুল মোমিন, একই ব্যাংকের এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের কর্মকর্তা মিজানুর রহমান ও অজ্ঞাতনামা এক ব্যক্তির কাছ থেকে অস্ত্রের মুখে সর্বস্ব ছিনতাই হয়। একই সময় সবকিছু কেড়ে নেওয়ার পর আবদুল মোমিনকে অস্ত্রের মুখে মাইক্রোবাসে বসিয়ে রেখে ওখানকার শাহ্জালাল ইসলামী ব্যাংকের একটি বুথ থেকে ৪০ হাজার টাকা উত্তোলন করে নেয় ছিনতাইকারীরা।
ভুক্তভোগীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে আবদুল মোমিন, মিজানুর রহমানসহ অন্য এক অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি চট্টগ্রামে আসার উদ্দেশ্যে বারৈয়ার হাট থেকে একটি মাইক্রোতে ওঠেন। ওই গাড়িতে আগে থেকেই চারজন ছিলেন। গাড়ি মীরসরাই আসালে মাইক্রোর ভেতরে অস্ত্র ধরে তিনজনের কাছে থাকা মোবাইল, মানি ব্যাগ, নগদ টাকাসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ছিনিয়ে নিয়ে অজ্ঞাতনামা ওই ব্যক্তিকে রাস্তার ধারে ফেলে দেয়। এরপর আবদুল মোমিনকে অস্ত্র ঠেকিয়ে ছিনিয়ে নেওয়া এটিএম কার্র্ডের পাসওয়ার্ড দিতে বাধ্য করে। তখন তিনজন মাইক্রোতে বসে ছিল এবং একজন এটিএম কার্ড নিয়ে মীরসরাই সদর এলাকার শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকের একটি বুথ থেকে ৪০ হাজার টাকা তুলে নেয়। তাছাড়া সঙ্গে থাকা নগদ সাত হাজার টাকাও নিয়ে তাদের দুইজনের চোখে মলম লাগিয়ে ছড়ারকুল এলাকায় রাস্তার পাশে ফেলে দেয়।
ব্যাংক কর্মকর্তা আবদুল মোমিন বলেন, আমরা দুইজন চট্টগ্রামে আসার জন্য বারৈয়ার হাট থেকে একটি মাইক্রোবাসে উঠি। আমাদের ছড়ারকুল ফেলে দেওয়ার পর চোখে কিছু দেখছিলাম না। অন্ধকারে হাতড়িয়ে পাশের একটি ঘরে গিয়ে তাদের বলি, আমরা ইসলামী ব্যাংকের অফিসার। ছিনতাইকারী সর্বস্ব কেড়ে নিয়েছে। আমাদের একটু পানি দিন। তখন ওই পরিবারের লোকজন বাথরুম দেখিয়ে দিলে আমরা চোখে পানি দেই। তখনও আমরা চোখ খুলতে পারছিলাম না। প্রায় ৩০ মিনিট পানি দেওয়ার পর ওই পরিবারের মোবাইল থেকে স্বজন ও ব্যাংকে ফোন করি। পরে ব্যাংক থেকে আমাদের সহকর্মীরা এসে আমাদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। প্রথমে জরুরি বিভাগে পরে চক্ষু বিভাগে চিকিৎসা গ্রহণ করি। চক্ষু ওয়ার্ডে চোখে ওয়াশ করার পর কিছুটা স্বস্তি আসে। আমাদের আগে আরেকজনকে একই কায়দায় রাস্তায় ফেলে দিয়েছে ছিনতাইকারীরা। ওই ব্যক্তি আমাদের সঙ্গে গাড়িতে উঠলেও পরিচয় জানতে পারিনি।
মীরসরাই থানার ওসি মুজিবুর রহমান বলেন, আমরা দুই ব্যাংক কর্মকর্তাকে ছিনতাইয়ের খবর জেনে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। বিষয়টি আমরা জেনে তাদেরকে লিখিত অভিযোগ দিতে বলেছি। কিন্তু এখনো পর্যন্ত কোন অভিযোগ পাওয়া যায়নি। তবে ঘটনাটি আমরা গভীরভাবে তদন্ত করছি। ঘটনায় জড়িতদের চিহ্নিত করার চেষ্টা চালাচ্ছি। এব্যাপারে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক কর্মকর্তা আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন।
বিডি প্রতিদিন/আল আমীন