ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে জোয়ারের পানি প্রবেশ করেছে চট্টগ্রামের পতেঙ্গা এলাকার উপকূলবর্তী অঞ্চলে। সমুদ্রের প্রবল ঢেউয়ে ক্ষতিগ্রস্ত বেড়িবাঁধ দিয়ে লোকালয়ে প্রবেশ করছে পানি। তাছাড়া মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টি এবং সমুদ্রের জোয়ারের পানির উচ্চতা অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় উপকূলীয় এলাকায় পানি প্রবেশ করে।
আজ বুধবার ভোর থেকেই জোয়ারের পানিতে তলিয়ে গেছে পতেঙ্গা এলাকার অনেক নিম্নাঞ্চল। পানি ঢুকে যায় বাসাবাড়ি ও দোকানে। লোকালয়ে পানি ঢুকে যাওয়ায় প্রাণ রক্ষায় ছুটছেন অন্যত্র। অন্যদিকে, আনোয়ারা ও বাঁশখালী উপকূলীয় এলাকায় প্রবেশ করেছে পানি। তাছাড়া, চট্টগ্রাম বন্দরের জেটিতেও হয়েছে হাঁটু পানি। পরে তা সরে যায়। বন্দরের বহির্নোঙর থেকে মাদার ভেসেলগুলোকেও অন্যত্র সরিয়ে নেয়া হয়েছে।
আজ চট্টগ্রামে ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে দমকা হাওয়া বইছে। একই সঙ্গে আজ সকাল থেকে আকাশ মেঘাচ্ছন্ন এবং থেমে থেমে বৃষ্টিও হয়। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরসমূহকে ৩ (তিন) নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখানো হয়েছে।
পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা যায়, অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড় ইয়াস আরও উত্তর-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে ভারতের উত্তর উড়িষ্যা-পশ্চিমবঙ্গ উপকূলের অদূরে উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থান করছে। এটি সকাল ৬টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৫১৫ কিলোমিটার পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৫১০ কিলোমিটার পশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৩০৫ কিলোমিটার পশ্চিম-দক্ষিণপশ্চিমে এবং পায়রাসমুদ্র বন্দর থেকে ৩৫০ কিলোমিটার পশ্চিম-দক্ষিণপশ্চিমে অবস্থান করছিল।
পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিসের আবহাওয়াবিদ শেখ ফরিদ আহমদ বলেন, অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় ও পূর্ণিমার প্রভাবে চট্টগ্রামসহ দেশের উপকূলবর্তী জেলা সমূহের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৩ থেকে ৬ ফুট অধিক উচ্চতার জোয়ারে প্লাবিত হতে পারে। তাই ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরসমূহকে ৩ (তিন) নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখানো হয়েছে।
চট্টগ্রাম বন্দরের জেটিতে হাঁটু পানি
ইয়াসের প্রভাবে চট্টগ্রাম বন্দরের জেটিতে জমেছে হাঁটু পানি। আজ দুপুরে বন্দরের সিসিটি রেফার ইউনিট, এনসিটি, আইসিডি ইউনিট, ওভার ফ্লো ইয়ার্ডসহ ৪ নম্বর গেটের সড়কে পানি উঠে যায়। তবে পানি এক ঘণ্টা পর নেমে যায়। অন্যদিকে, গতকাল মঙ্গলবার রাতে বন্দরের আউটার থেকে মাদার ভ্যাসেলকে গভীর সমুদ্র থেকে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। একই সঙ্গে কর্ণফুলী নদী বিক্ষিপ্তভাবে থাকা লাইটার জাহাজগুলোকেও সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। বন্দরের জেটিতে কনটেইনার হ্যান্ডলিং শিথিল করা হয়েছে।
চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব ওমর ফারুক বলেন, সংকেত বাড়লে জাহাজ থেকে পণ্য ওঠানো-নামানো বন্ধ করে দেওয়া হবে। আমরা প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি। ইয়াস আঘাত হানলেও সেটি মোকাবেলায় প্রস্তুত। তাছাড়া এখন পণ্য খালাসও শিথিল করে দেওয়া হয়েছে। বন্দরের সব কার্যক্রম চলছে সর্বোচ্চ সতর্কতামূলক প্রস্তুতি নিয়ে।
বিডি প্রতিদিন/আবু জাফর