চট্টগ্রাম নগরে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের অপরিকল্পিত থাবা থেকে অনেক ইতিহাসের স্মৃতিস্মারক প্রাকৃতিক সৌন্দর্যমণ্ডিত টাইগারপাসকে রক্ষা করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করেছে চট্টগ্রাম ঐতিহ্য রক্ষা পরিষদ। একই সঙ্গে টাইগারপাসের সৌন্দর্য রক্ষায় ফ্লাইওভার প্রকল্প সংশোধনের দাবি করা হয়।
রবিবার সকালে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে পরিষদের চেয়ারম্যান চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরী এ দাবি করেন। সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য বক্তব্য রাখেন ঐতিহ্য রক্ষা পরিষদের কো-চেয়ারম্যান ডা. মাহফুজুর রহমান, প্রকৌশলী সুভাষ বড়ুয়া ও সদস্য সচিব সাংবাদিক জসীম চৌধুরী সবুজ। ঐতিহ্য রক্ষা পরিষদের সমন্বয়কারী এইচ এম মুজিবুল হক শুক্কুরের সঞ্চালনায় উপস্থিত ছিলেন যুগ্ম সদস্য সচিব স্থপতি আশরাফুল ইসলাম শোভন, সাবেক কাউন্সিলর জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, অধ্যাপক মুহম্মদ আমির উদ্দিন, সাবেক কাউন্সিলর জাবেদ নজরুল ইসলাম, হাবিবুর রহমান, সাংবাদিক আবসার মাহফুজ, সংগঠক একে জাহেদ চৌধুরী, হাসান মারুফ রুমী, নুরুজ্জামান প্রমুখ।
মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাকে আমরা ধন্যবাদ জানাই। বর্তমান সরকার চট্টগ্রামে হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে অনেক মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। সিডিএ বাস্তবায়নাধীন বিমানবন্দর থেকে লালখান বাজার পর্যন্ত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণকাজ দ্রুত এগিয়ে চলেছে। চট্টগ্রামের উন্নয়নে এটি আরেকটি মাইলফলক। তবে পরিবেশ-প্রকৃতি এবং ইতিহাস-ঐতিহ্য রক্ষার একান্ত তাগিদ থেকে টাইগারপাসের প্রকৃতি প্রদত্ত অপরূপ নান্দনিক সৌন্দর্য যেন ইট-পাথরের কংক্রিটের নিচে ঢেকে না পড়ে। তাই প্রকল্পে টাইগারপাস মোড় থেকে লালখানবাজার পর্যন্ত অংশটুকু প্রকল্প থেকে বাদ দেওয়ার দাবি জানাই। অনেক ঐতিহাসিক ঘটনার সাক্ষী এই টাইগারপাসের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য একমাত্র প্রধানমন্ত্রীর আশু হস্তক্ষেপে রক্ষা পেতে পারে। এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের শেষ প্রান্তটি টাইগারপাসের পরিবর্তে দেওয়ানহাট ব্রিজের দক্ষিণ প্রান্তে নামানোর প্রস্তাব করি। তাহলে আমাদের ঐতিহ্যের টাইগারপাস যেমন রক্ষা পাবে তেমনি ১ হাজার কোটি টাকার সাশ্রয় হবে।
ঐতিহ্য রক্ষা পরিষদের সদস্য সচিব সাংবাদিক জসীম চৌধুরী সবুজ বলেন, চট্টগ্রামের প্রাচীন রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও প্রাকৃতিক সকল ঐতিহ্য রক্ষায় পরিষদ সোচ্চার থাকবে। তবে এই মূহুর্তে টাইগারপাসকে আদিরূপে রক্ষা করাটা চট্টগ্রামবাসীর নৈতিক দায়িত্ব। আশা করছি, সরকার গুরুত্ব দিয়ে বিষয়টি বিবেচনায় নেবে।
তিনি বলেন, বর্তমান পরিকল্পনা অনুযায়ী ফ্লাইওভারটি যদি টাইগারপাসের ওপর দিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় তা হবে খুবই বিপজ্জনক। ধনিয়ালাপাড়া থেকে মনসুরাবাদের দিকে যে ফ্লাইওভারটি গেছে তার উপর দিয়ে আনতে হবে লালখান বাজারমুখী ফ্লাইওভারটি। এতে এটি আনতে হবে ৮০ ফুট উচ্চতায়। ব্যস্ততম এই রুটে যেখান দিয়ে বন্দর থেকে পণ্যবাহী যানবাহনও চলাচল করে সেসব যান এত উঁচুতে উঠতে গিয়ে প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার শিকার হবে। ব্যস্ততম রুটে যান চলাচল বিঘ্নিত হবে।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল