চলমান রমজান মাসে চট্টগ্রামসহ সারাদেশে অস্থিরতায় রয়েছে ভোগ্যপণ্যের বাজারে। ঠিক একই রকম চিত্র দেখা গেছে সবজির বাজারেও। তাছাড়া মাছ, মাংসসহ বিভিন্ন আইটেমের জিনিসপত্রেও উঠেছে চড়া দাম। ফলে চট্টগ্রামে সবজির বাজারেও অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। নিম্ন ও নিম্ন-মধ্যবিত্ত মানুষের নিত্যদিনের সবজিসহ নানা ধরণের জিনিসপত্র কিনতে রীতিমতো কষ্ট হয়ে পড়ছে বলে জানান সাধারণ ক্রেতারা।
জানা গেছে, চট্টগ্রামের বহদ্দারহাট, চকবাজার, মুরাদপুর, কাজির দেউরি, ২নং গেইট, আগ্রাবাদসহ বিভিন্ন বাজারে প্রতিদিনই সরবরাহ ঠিক থাকলেও চলমান রমজানের অজুহাতে বেড়েছে প্রায় সব ধরনের সবজির দাম। একই সঙ্গে বৃদ্ধি পেয়েছে মুরগি, মাছ এবং মাংসের দামও। নগরীর রিয়াজউদ্দিন বাজারে সবজির দাম কিছুটা কমলেও খুচরা বাজারে এখনও চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে এসব সবজি। অন্যদিকে স্বাভাবিক সময়ে ১৫০ টাকায় ব্রয়লার মুরগি বিক্রয় হলেও বর্তমানে বিক্রয় হচ্ছে ১৭৫-১৮০ টাকায়। এছাড়া রয়েছে সোনালি মুরগি ৩২০ টাকা, লেয়ার ২৫০-২৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। কাজীর দেউড়ি কাঁচাবাজারে প্রতিকেজি বেগুন ৭০ টাকা, গাজর ৫০-৬০, শসা ৫০-৮০, টমেটো ৩০, কাঁচামরিচ ৬০, মাঝারি আকারের লেবুর হালি ৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া বাজারে প্রতিকেজি ফুলকপি ৫০, কাঁকরোল ১৪০, শিম ৫০, ঝিঙ্গা ৫০, ঢেঁড়স ৮০, পটল ৬০ ও বরবটি ৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। ছোট দেশি আলু ৫০ ও বড় আলু বিক্রি হচ্ছে ২৫ টাকা কেজি দরে। অন্যদিকে গরুর মাংস প্রতি কেজি ৭৫০-৮০০ ও খাসির মাংস ৯৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া রুই মাছ ১৮০-৩০০, কাতল ২২০-৪০০, তেলাপিয়া ১৬০-২২০, পাঙ্গাস ১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। চড়া রয়েছে সাগরের মাছের দাম।
কাজির দেউরি কাঁচাবাজারে আসা ক্রেতা সরোয়ার বলেন, সবজির বাজারে দাম শুনলে সাধারণ ক্রেতারা পছন্দের জিনিস কিনতে আগ্রহ হারিয়ে ফেলে। সবজির দাম স্বাভাবিক দামে থাকলে সবার কিনতে সুবিধা হবে। তাছাড়া চলমান রমজানে মুরগির চাহিদা বেড়ে গেছে। মুরগির খাবারের দামও বাড়তি। সরবরাহ কম থাকায় মুরগির দাম বেড়ে গেছে।
বহদ্দারহাটের একজন সবজি বিক্রেতা বলেন, বেশি দামে সবজির বাজার ক্রয় করতে হয়, তাই খুচরা ক্রেতাদের মাঝে একটু বেশি দামেই সবজি বিক্রয় করতে হচ্ছে। কেনার সময় কম দাম দিয়ে কিনতে পারলে খুচরাতেও কম দামে বিক্রয় করা যায় বলে জানান তিনি।
কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি এস এম নাজের হোসাইন বলেন, প্রতি বছরের মতো চলমান রমজান মাসেও নিত্যপণ্যের দাম বেড়ে গেছে। এখানে ভোগ্যপণ্যের দামের মতো সবজির বাজারেও বিভিন্ন জিনিসপত্রের দামে আগুন ধরেছে। এখানে এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী অতিরিক্ত লাভের আশায় দাম বৃদ্ধির কারণে এসব সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছে সাধারণ ক্রেতারা। ফলে এটা একটা স্বাভাবিক নিয়মেই পরিণত হয়েছে। প্রতিটি জিনিসের সরবরাহ ঠিক থাকলেও রোজায় চাহিদা বাড়ে এমন পণ্যের দাম বেড়ে যায়। এটা ইচ্ছাকৃতভাবেই হচ্ছে। তবে প্রশাসনিকভাবে কঠোর হস্তক্ষেপ করলে বা বাজার মনিটরিং করলে দাম কমে আসবে বলে জানান তিনি।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল