দেশের সবজিসহ ভোগ্যপণ্যের বাজারে দাম নিয়ে শুরু হয়েছে নানা অস্থিরতা। সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে চলে গেছে দাম। মসলার বাজারে আমদানিতে খরচ বেড়ে যাওয়ায় এমন দাম বৃদ্ধির কথাও বলছেন সংশ্লিষ্টরা। চট্টগ্রামে জিরা, লবঙ্গ, দারুচিনিসহ নানা আইটেমের দাম বেড়েছে। চলমান পরিস্থিতিতে এই মসলার বাজারসহ নিত্যপণ্যের বিভিন্ন জিনিসপত্রের দাম বেড়ে অস্থিরতা শুরু হলেও ডিম ও মুরগির বাজারে কিছু স্বস্তিতে এসেছে।
সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা বলছেন, চলমান পরিস্থিতিতে একদিকে আমদানি খরচ বেশি। দেশে বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানও বেড়েছে। তবে বেশি বেড়েছে এলাচে। তাছাড়া ডিম ও মুরগির দামে একটু স্বস্তিতে ফিরেছে ক্রেতারা। পচলশীল পণ্য বিক্রি না হওয়ায় নষ্টও হয়ে হচ্ছে। সবমিলে চাহিদার কারণে এসব মসলার বাজারে দামটা এখন বেশি হয়েছে।
খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ী সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রামে মসলার পাইকারি বাজারে প্রতিকেজি এলাচে ৮শ টাকা বেড়ে ২ হাজার ৬শ, লবঙ্গে ১৪০ টাকা বেড়ে ১ হাজার ২শ, জিরায় ১২০ টাকা বেড়ে ৫শ, শুকনা মরিচে ৮০ টাকা বেড়ে ৩৮০, দারুচিনির কেজিতে ১২০ টাকা বেড়ে ৫শ ও রসুনের কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আদা ১০০ টাকা, পেঁয়াজ ৪৫-৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তাছাড়া প্রতি কেজি তেজপাতা ২২০, গোলমরিচ ৮শ, আলু বোখারা ৪শ, জায়ফল ৫৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে গত এক মাস আগে প্রতিকেজি এলাচ ১ হাজার ৮শ, দারুচিনি ৪শ, জিরা ৩৮০, লবঙ্গ ৯শ ও শুকনা মরিচ ৩শ টাকায় বিক্রি হয়েছিল।
খাতুনগঞ্জের পাইকারি মসলা বিক্রেতা ফারুক হোসেন বলেন, চলমান পরিস্থিতিতে আমদানিকারকরা মসলার দাম আরও বাড়িয়ে দিয়েছেন। তার উপর পরিবহন খরচ ট্রাকপ্রতি বেড়েছে ৫ থেকে ৬ হাজার টাকা। আমদানিতে বেড়ে যাওয়ার কারণে মসলার দাম পাইকারি-খুচরা বাজারেও বেড়েছে।
চাক্তাই-খাতুনগঞ্জ আড়তদার ও সাধারণ ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, বর্তমান সময়ে সব কিছুর বাজারের দাম বৃদ্ধি রয়েছে। হঠাৎ করে ডিম ও মুরগির দাম বেড়ে গেলেও বর্তমানে এসবের দাম কমেছে। ফলে সাধারণ মানুষের নাগালের মধ্যে রয়েছে। তিনি বলেন, ভোগ্যপণ্যের মসলার বাজারে চলছে নানা অস্থিরতা। আমদানিতে দাম বেড়ে যাওয়ায় পাইকারি ও খুচরা বাজারেও বৃদ্ধি পাচ্ছে মসলার বিভিন্ন আইটেমে। তবে সব কিছু সমন্বয় করলে দাম আরও কমতে পারে বলে জানান তিনি।
অন্যদিকে, গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে সবজির দামে তেমন কোন পার্থক্য দেখা যায়নি। আগের মতোই দাম রয়ে গেছে। বাজারে প্রতি কেজি গোল বেগুন ৮০, লম্বা বেগুন ৬০, হাইব্রিড শসা ৮০, চিচিঙ্গা ৩০ থেকে ৪০ টাকা, কচুমুখি ৫০, বরবটি ৩০ থেকে ৫০ টাকা, পটল ৪০, লাউ আকারভেদে ৪০ থেকে ৬০, চালকুমড়া ৪০, ঢেঁড়স ৩০ থেকে ৪০ টাকা এবং কাঁচা মরিচ ৮০ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আলু ৩০ টাকা, প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ ১৬০-১৭০ টাকা, টমেটো ১৩০-১৪০ টাকা।
প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ১৬৫ থেকে ১৭০ টাকা, সোনালি ২৮০ টাকা ও দেশি মুরগি ৫’শ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। প্রতি ডজন ফার্মের ডিম বিক্রি হচ্ছে ১২৫-১৩০ টাকায়। মাছের বাজারেও রয়েছে দাম বেশী। এক থেকে দুই কেজি ওজনের রুই ২৯০ থেকে ৩২০ টাকায় এবং বড় রুই ৩৭০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি মলা মাছ ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা, শিং মাছ ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা, বড় সাইজের ইলিশ এক হাজার ২০০ টাকা, মাঝারি আকারের ইলিশ ৭০০ থেকে ৮০০ টাকায় ও ছোট সাইজের ইলিশ ৫৫০ থেকে ৬০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বিডি প্রতিদিন/আরাফাত