বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, কোভিড-১৯ মহামারির পর এন্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স (এএমআর) হবে বিশ্বের আরেকটি মহামারি। ২০৫০ সালে মানুষের মৃত্যুর প্রধান কারণও হবে এএমআর। এন্টিমাইক্রোবিয়ালের যথাযথ ব্যাবহার ও সচেতনতায় এএমআর এর হার কমিয়ে আনতে হবে। এক্ষেত্রে করণীয় হলো- রেজিস্টার্ড চিকিৎসকের পরামর্শে প্রেসক্রিপশনে লেখা এন্টিবায়টিক নির্ধারিত মাত্রা, নির্দিষ্ট বিরতি, নির্ধারিত দিন পর্যন্ত সেবন করা। কোন ভাইরাসজনিত রোগ, সর্দি-কাশি, গলা ব্যাথা এমনকি কোভিডের মত রোগেও এন্টিবায়টিক ব্যবহার করা উচিত নয়।
চট্টগ্রাম ইন্টারন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ (সিআইএমসি) ও চট্টগ্রাম ইন্টারন্যাশনাল ডেন্টাল কলেজের (সিআইডিসি) যৌথ উদ্যেগে দুপুরে আয়োজিত বৈজ্ঞনিক সেমিনারে বক্তারা এসব কথা তুলে ধরেন।
চট্টগ্রাম ইন্টারন্যাশনাল মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মো. টিুপু সুলতানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সেমনিারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ফার্মাকোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. ফাতিহা তাসমিন জিনিয়া ও মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মো. শেরান। সেমিনারে প্যানেল অব এক্সপার্ট হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম ইন্টারন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক মো. আমির হোসেন, চট্টগ্রাম ইন্টারন্যাশনাল ডেন্টাল কলেজের অধ্যক্ষ ও শিশু রোগ বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. মো. মুসলিম উদ্দিন সবুজ, চট্টগ্রাম ইন্টারন্যাশনাল ডেন্টাল কলেজের উপাধ্যক্ষ ও ওরাল এন্ড ম্যাক্সোলোফেসিয়াল সার্জারী বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. মো. আলী হোসাইন, মাইμোবায়োলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. খান মাশরেকুল আলম, ফার্মাকোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান ডা. এজেডএম আশেক-ই-ইলাহী।
সেমিনারে বলা হয়, প্রতি বছর এএমআর এর কারণে সকল দেশের ধনী, গরিব, নারী, পুরুষ, শিশু, বৃদ্ধ নির্বিশেষে প্রায় ৭ লক্ষ মানুষ মারা যাচ্ছে। গবেষণায় দেখা গেছে, ২০৫০ সাল নাগাদ এএমআর এর কারণে প্রতি বছর অতিরিক্ত ১০ লক্ষ ১৭ হাজার ছয় শত কোটি টাকা স্বাস্থ্য খাতে খরচ হবে বলে বিশেষজ্ঞরা ধারণ করছেন। কার্যকর এন্টিবায়টিকের অভাবে সামান্য ইনফেকশন থেকে পরবর্তীতে জটিল ও দীর্ঘমেয়াদী অসুখ এমনকি মৃত্যুর কারণও হতে পারে। তাই এএমআর মানবজাতির জন্য হুমকিস্বরূপ।
চট্টগ্রাম ইন্টারন্যাশনাল ডেন্টাল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মো. মুসলিম উদ্দিন সবুজ বলেন, ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতা, হাত ধোয়া, হাচি-কাশির শিষ্টাচার মেনে চলা, টিকা গ্রহণ ইত্যাদি বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে সংক্রমণ প্রতিরোধ করার মাধ্যমে এন্টিমাইক্রোবিয়ালের ব্যবহার কমিয়ে আনা সম্ভব। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের সুরক্ষায় সকলের আন্তরিক প্রচেষ্টায় এন্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স প্রতিরোধে আমদের সকলের এগিয়ে আসতে হবে।
বিডি প্রতিদিন/এএম