চট্টগ্রাম নগরের হালিশহর থানার দিনমজুর মাকসুদুর রহমান মাকসুদ হত্যা মামলায় মো. হোসেন (২৬) নামে এক যুবককে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়েছে।
বুধবার ষষ্ঠ অতিরিক্ত চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ সিরাজাম মুনীরার আদালত এই রায় দেন। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মো. হোসেন সন্দ্বীপ উপজেলার রহমতপুর এলাকার আদিক্কার বাড়ির মৃত রফিকুল ইসলামের ছেলে। রায় ঘোষণার সময় আসামি আদালতে অনুপস্থিত ছিলেন। তার বিরুদ্ধে সাজা পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।
মহানগর দায়রা জজ আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর দীর্ঘতম বড়ুয়া দীঘু বলেন, সাক্ষীর সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে আসামি মো. হোসনকে ৩০২ ধারায় মৃত্যুদণ্ড, ২০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ৬ মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। তাছাড়া, ৩৮০ ধারায় অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ৩০ বছরের কারাদণ্ড, ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে ৬ মাসের কারাদণ্ড দেন।
মামলার নথি সূত্রে জানা যায়, সন্দ্বীপ উপজেলা থেকে চাকরির সন্ধানে ২০১৭ সালের জানুয়ারি মাসের দিকে বন্দরনগরীতে আসেন দিনমজুর মাকসুদ। নগরের হালিশহর থানার বি-বøক ২০ নম্বর লেইনে একটি কক্ষে ব্যাচেলর বাসায় ভাড়ায় থাকতেন। ২০১৭ সালের ১২ মার্চ মাকসুদ ও হোসেনসহ চারবন্ধু চায়ের দোকানে চা পান করতে গেলে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে মাকসুদ আসামী হোসনকে মারধর করেন। মারধরের কথা এলাকার বড় ভাই ফরহাদের কানে যায়। এর কিছুক্ষণ পরে মাকসুদ ও হোসেন ফরহাদের দোকানে গিয়ে দু’জনের ঝামেলা সমাধান করার চেষ্টা করেন। সেখানে মাকসুদ এক পর্যায়ে হোসেনের গলার কলার ধরেন। পরে দু’জন বাসায় চলে যান। ১৩ মার্চ রাত তিনটার দিকে মাকসুদের রুমে ঢুকে হোসেন মাকসুদকে ছুরিকাঘাত করে মোবাইল নিয়ে পালিয়ে যায়। চিৎকার শুনে আশেপাশের লোকজন তাকে উদ্ধার করে নগরের ফইল্যাতলি বাজারে একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখান থেকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে সকাল সাতটার দিকে চিকিৎসাধীন মাকসুদের মৃত্যু হয়।
এ ঘটনায় মাকসুদের ভাই মো. রিপন বাদী হয়ে হালিশহর থানায় মো. হোসেনকে একমাত্র আসামি করে হত্যা মামলা করেন। মামলার তদন্ত শেষে তদন্ত কর্মকর্তা হালিশহর থানার তৎকালীন এসআই সোহেল রানা ২০১৭ সালের ৩০ এপ্রিল আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন। ১১ নভেম্বর আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন বিচারক। মামলায় ২১ জন সাক্ষীর মধ্যে ১২ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আদালত রায় দেন।
বিডি প্রতিদিন/এএম