চট্টগ্রাম নগরীর সদরঘাট থানার দক্ষিণ নালাপাড়ায় মা-মেয়েকে হত্যার মামলায় বেলাল হোসেন (২৭) নামের এক যুবককে মৃত্যুদণ্ড ও টিটু সাহা (৪৬) নামের আরেক যুবককে তিন বছরের মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। বৃহস্পতিবার ষষ্ঠ অতিরিক্ত চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ সিরাজাম মুনীরার আদালত এই রায় দেন। দণ্ডপ্রাপ্ত দুজনের বাড়ি কুমিল্লার মুরাদনগরে।
আদালত সূত্র জানায়, দক্ষিণ নালাপাড়ায় মোবাশ্বের মিয়ার ছয় তলা ভবনের চতুর্থ তলায় স্ত্রী নাছিমা বেগম (৩৭), কন্যা রিয়া আক্তার (১০), শ্যালক আলালসহ ভাড়া থাকতেন মাংস ব্যবসায়ী শাহ আলম। ২০১৫ সালের ৭ মে সকালে ঘর থেকে বের হওয়ার কিছুক্ষণ পর শ্যালকের কাছ থেকে খবর পেয়ে আলম বাসায় গিয়ে দেখতে পান স্ত্রী-কন্যার লাশ ঘরের মেঝেতে পড়ে আছে। পরে দেখতে পান, হত্যাকারীরা বাসা থেকে স্বর্ণালংকার, মোবাইলসহ মূল্যবান জিনিসপত্র নিয়ে গেছে।
এ ঘটনায় শাহ আলম বাদি হয়ে অজ্ঞাতনামাদের আসামী করে হত্যা মামলা করেন। ২০১৫ সালের ২৭ মে হত্যাকাণ্ডের দিন হারিয়ে যাওয়া মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে আলমের খালাতো ভাই বেলাল হোসেনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। নাছিমার স্বর্ণালংকার নগরীর বাকলিয়া ইসহাকের পুল এলাকায় একটি জুয়েলার্সের কর্মচারী টিটু সাহার কাছে বিক্রি করেছিল বেলাল। পরে টিটুকেও গ্রেফতার করে পুলিশ।
মামলার তদন্ত শেষে ২০১৫ সালের ২৫ অক্টোবর আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় পুলিশ। ২০১৯ সালের ১৫ জুলাই আদালতে আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরু হয়।
চট্টগ্রামের মহানগর দায়রা জজ আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর দীর্ঘতম বড়ুয়া দীঘু জানান, ১৯ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে বেলালের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আদালত তাকে মৃত্যুদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন। বেলাল যে স্বর্ণ লুট করেছিল তা কিনে নিজের হেফাজতে রাখায় আসামী টিটুকে তিন বছরের সশ্রম কারাদণ্ড, ১০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও তিন মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। রায়ের সময় আসামিরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন। পরে সাজা পরোয়ানামূলে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/এএম