২৬ মে, ২০২৪ ১৮:৫২

ঘূর্ণিঝড় রেমাল মোকাবেলায় চট্টগ্রামে সমন্বিত প্রস্তুতি

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম:

ঘূর্ণিঝড় রেমাল মোকাবেলায় চট্টগ্রামে সমন্বিত প্রস্তুতি

ঘূর্ণিঝড় রেমাল মোকাবেলায় চট্টগ্রামে সমন্বিত প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। পুরো জেলায় ৭৮৫ আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত করার পাশাপাশি এক হাজারের বেশি বিদ্যালয় ভবনও প্রস্তুত করা হয়েছে। প্রস্তুত করা হয়েছে ২৯৫টি মেডিকেল টিম। মাঠে কাজ করছেন রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটিসহ বিভিন্ন সংস্থার স্বেচ্ছাসেবকরা। খোলা হয়েছে তিনটি নিয়ন্ত্রণকক্ষ। চট্টগ্রাম বন্দর ও বিমানবন্দরের সকল অপারেশনাল কার্যক্রম বন্ধ করা হয়েছে। বন্ধ করে দেয়া হয়েছে কর্ণফুলী টানেল।

চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক আবুল বাশার মো. ফখরুজ্জামান জানান, রেমাল মোকাবেলায় উপকূলীয় উপজেলা ও মহানগর মিলিয়ে ৭৮৫টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত করা হয়েছে। পাশাপাশি ১ হাজার ১৪০টি বিদ্যালয় ভবনও প্রস্তুত করা হয়েছে। দ্বীপ উপজেলা স›দ্বীপ, আনোয়ারা, বাঁশখালী, মিরসরাই, সীতাকুণ্ড ও কর্ণফুলী উপজেলার ইউএনওদের বিশেষ প্রস্তুতি নিতে বলা হয়েছে। ইতিমধ্যে উপকূলীয় ও পাহাড়ি এলাকা থেকে লোকজনকে সরিয়ে নেয়ার কাজ শুরু হয়েছে। প্রয়োজনীয় সংখ্যক শুকনো খাবার, মোমবাতি, ওষুধ, পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট ও খাবার স্যালাইন মজুদ করা হয়েছে।

চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. মো. ইলিয়াস চৌধুরী জানান, সিভিল সার্জন কার্যালয়ের উদ্যোগে ইউনিয়ন পর্যায়ে ২’শটি, প্রতিটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৫টি, আর্বান ডিসপেন্সারিতে ৯টি এবং জেনারেল হাসপাতালে ৫টিসহ মোট ২৯৫টি মেডিক্যাল টিম গঠন করা হয়েছে। পানি বিশুদ্ধকরণের জন্য প্রায় তিন লাখ ট্যাবলেট ও চার লাখ খাবার স্যালাইন মজুদ রয়েছে। এছাড়া সিভিল সার্জন কার্যালয়ের নিয়ন্ত্রণাধীন সকল চিকিৎসক-কর্মকর্তা-কর্মচারীর ছুটি বাতিল করা হয়েছে। জরুরী প্রয়োজনে ২৪ ঘন্টা কন্টোল রুম খোলা থাকবে।

এদিকে রবিবার চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়রের সভাপতিত্বে বৈঠকে উপকূলীয় এলাকার ওয়ার্ডগুলোর ৮১টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে আশ্রয়কেন্দ্র ঘোষনা করে এসব ভবনে যাবতীয় জরুরি প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। বিকেলে পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত এলাকায় ঘূর্ণিঝড়ের প্রকৃতি পরিদর্শন করেছেন মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী। পাশাপাশি রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির স্বেচ্ছাসেবকদের সহযোগীতায় উপক‚লীয় এলাকায় মাইকিং করে স্থানীয়দের সচেতন করা হচ্ছে। পাশাপাশি দুর্গতদের আশ্রয়কেন্দ্রে নিতে কাজ করছেন চসিকের দায়িত্বপ্রাপ্তরা। ২৪ ঘন্টা খোলা থাকবে চসিকের কন্টোল রুম।

এর বাইরে বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালকের দপ্তর, নৌবাহিনৗ, কোস্টগার্ড, ফায়ার সার্ভিস এন্ড সিভিল ডিফেন্সের পক্ষ থেকেও ঘূর্ণিঝড়ের ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে বিভিন্ন পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। এসব সংস্থা ঘূর্ণিঝড়পূর্ব বিভিন্ন কার্যক্রমও অব্যহত রেখেছে। সংস্থাগুলো নিজেদের মধ্যে আন্ত:যোগাযোগের মাধ্যমে সমন্বিতভাবে দুর্যোগ মোকাবেলার প্রস্তুতি নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন একাধিক কর্মকর্তা।

এদিকে ঘূর্ণিঝড় রেমালের ক্ষয়ক্ষতি কমাতে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে চট্টগ্রাম বন্দর ও শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরের অপারেশনাল কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এরই মধ্যে চট্টগ্রাম বন্দরের লোড-আনলোডসহ সকল অপারেশনাল কার্যক্রম বন্ধ করে নিজস্ব অ্যালার্ট-৪ জারি করা হয়েছে। বিমানবন্দরের অপারেশনাল কার্যক্রমও বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। বন্ধ রাখা হয়েছে বিমান উঠানামা।

ঘূর্ণিঝড় রেমালের ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে বঙ্গবন্ধু টানেলও। রবিবার বিকেল তিনটা থেকে টানেলের যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বিকেলে টানেলের উভয় প্রান্তের চারটি ফ্লাড গেইট বন্ধ করে দেওয়া হয়। প্রাকৃতিক পরিবেশ স্বাভাবিক হলে পুনরায় টানেল চালু করা হবে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।

 

বিডি প্রতিদিন/এএম

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর