টানা পাঁচ দিনের বন্যায় পানির নিচে ডুবে থাকা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পানি নেমে যাওয়ার পর ক্ষতবিক্ষত সড়ক দৃশ্যমান হচ্ছে। সড়ক বিভাগের পক্ষ থেকে স্বল্প মেয়াদে সংস্কার করে যানবাহন চলাচলের উপযোগী করা হচ্ছে। তবে মহাসড়কে যে ক্ষতচিহ্ন তৈরি হয়েছে তা সংস্কারে দীর্ঘ সময় প্রয়োজন। একারণে পুরোপুরি আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা করছে সড়ক ও জনপথ বিভাগ।
সড়ক বিভাগ সূত্র জানিয়েছে, গত বুধবার থেকে রবিবার পর্যন্ত বন্যার পানির নিচে ছিলো ফেনী থেকে কুমিল্লা পর্যন্ত মহাসড়কের বিভিন্ন অংশ। বন্যার সময় মহাসড়কের উপর দিয়ে কোথাও কোথাও প্রবল স্রোত বয়ে গেছে। একারণে অনেক অংশে সড়ক বিভাজক ভেঙে গেছে। অনেক স্থানে ছোটবড় গর্ত সৃষ্টি হয়েছে। আপাতত গর্তগুলো সংস্কার করে যান চলাচল উপযোগী করা হচ্ছে। এরপর দীর্ঘমেয়াদী সংস্কার শুরু হবে।
সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের ফেনী অঞ্চলের নির্বাহী প্রকৌশলী (সড়ক বিভাগ) বিনয় কুমার পাল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘পানি নামার সাথে সাথেই সংস্কার কাজ শুরু হয়েছে। ফেনীর লালপোল, লেমুয়া ব্রিজসহ বিভিন্ন অংশে সংস্কার চলছে। ক্ষতবিক্ষত সড়ক সংস্কার করতে প্রাথমিকভাবে অন্তত এক সপ্তাহ সময় লাগবে। পরবর্তীতে মহাসড়ককে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে আরো কিছুদিন সময় লাগবে। স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নিয়ে কাজ চলছে।’
জানা গেছে, গত বুধবার থেকে মিরসরাইয়ের ধুমঘাট থেকে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম পর্যন্ত বিভিন্ন অংশে মহাসড়কের উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হতে শুরু করে। তবে রবিবার থেকে পানি কমার পর মহাসড়কের ক্ষত সামনে আসে। ফেনীর লালপোল থেকে ধুমঘাট পর্যন্ত অন্তত পাঁচটি স্থানে বড় আকারের গর্ত সৃষ্টি হয়। এছাড়াও চৌদ্দগ্রাম পযন্ত বিভিন্ন অংশে ছোটখাটো গর্ত তৈরি হয়। এসময় মহাসড়কের অন্তত ৭০ কিলোমিটার জুড়ে তীব্র যানজট তৈরি হয়। হাজার হাজার মানুষ, পণ্য ও ত্রাণবাহী যানবাহন সড়কে আটকে পড়ে।
রবিবার দুপুরের পর থেকে লালপোল, লেমুয়া ব্রিজ ও কুমিল্লা অংশে পানি কমতে শুরু করে। তবে অনেক স্থানে চট্টগ্রামমুখী লেনে পানি থেকে যায়। পানি নামার পর ওইদিন দুপুরের পর থেকে হাইওয়ে পুলিশের নির্দেশনায় ঢাকামুখী লেনে ধীরে ধীরে ধীরে যানবাহন চলাচল শুরু হয়। পানি নেমে যাওয়ার খবরে যাত্রীবাহি দূরপাল্লার বাস ও চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ছেড়ে আসা ট্রাক কার্ভাডভ্যানের চাপে সড়কে যানজট তীব্র আকার নেয়। তবে সোমবার দিনভর সড়ক বিভাগ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা সংস্কার কাজ করার পর যান চলাচলে গতি আসে। তবে অনেক এলাকায় এখনো ধীর গতিতে চলছে যানবাহন।
হাইওয়ে পুলিশের কুমিল্লা রিজিয়নের অতিরিক্ত ডিআইজি খাইরুল আলম জানান, পানি নেমে যাওয়ার পর থেকে পুলিশ সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে যান চলাচল স্বাভাবিক করতে। কিন্তু অনেক স্থানে গর্ত থাকায় অনেক চেষ্টার পরও পরিস্থিতি স্বাভাবিক হচ্ছিলো না। তবে গর্ত মেরামতের পর ধীরে ধীরে যান চলাচল স্বাভাবিক হচ্ছে। সোমবার বিকেল থেকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে।
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল