ঈদে এবার লম্বা ছুটি পেয়েছে কর্মজীবী মানুষ। ধীরে ধীরে নাড়ির টানে বাড়ি ফিরতে শুরু করেছে মানুষ। লম্বা ছুটি হওয়ার কারণে চট্টগ্রাম থেকে সে ধরনের চাপ পড়ছে না রেলওয়ে স্টেশনে। প্রতিদিন স্বাভাবিক সময়সূচি অনুযায়ী ট্রেনগুলো চট্টগ্রাম থেকে দেশের বিভিন্ন গন্তব্যে যাত্রা করছে। তবে মাঝে মাঝে ইঞ্জিন সমস্যার কবলে পড়ে আটকে থাকছে ট্রেন। এতে করে যাত্রীদের ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে।
রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ জানায়, আগামী ৪ মে থেকে যাত্রীদের চাপ বাড়তে পারে। লম্বা ছুটির কারণে মানুষ ধীরে ধীরে গন্তব্যে যাচ্ছে। আমাদের ইঞ্জিন সংকট রয়েছে, এতে করে কিছুটা সমস্যা হলেও স্পেশাল সার্ভিস থাকার কারণে সেটা কাটিয়ে উঠা সম্ভব বলে মনে করছি।
বিআরটিএ চট্টগ্রাম বিভাগের পরিচালক (ইঞ্জি.) মাসুদ আলম বলেন, ঈদকে ঘিরে সড়কে শৃঙ্খলা ও যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে নিয়মি অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। পাশাপাশি ঈদকে ঘিরে যেন যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করতে না পারে সে বিষয়ে আমরা সজাগ রয়েছি।
চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার আবু জাফর মজুমদার বলেন, ১৬টা আন্তঃনগর এবং ঈদের স্পেশাল ট্রেন যাবে। মানুষের ঈদ যাত্রা এখনো শুরু হয়নি। আমাদের বেশিরভাগই ট্রেন নির্দিষ্ট সময়ে চলাচল করছে। তবে চট্টগ্রাম থেকে জামালপুরগামী বিজয় এক্সপ্রেস ট্রেনটা আপডাউন করে। এটা জামালপুর থেকে চট্টগ্রাম আসতে বিলম্ব হলে যেতেও বিলম্ব হয়। এছাড়াও আমাদের লোকোমোটিভের সংকট রয়েছে, সেক্ষেত্রে কোনো ট্রেন পথে কোনো সমস্যা হলে সে ট্রেন হয় তো বিলম্ব হতে পারে। এটা মূলত চাহিদার সাথে জোগানে ব্যাপক থাকার কারণে হচ্ছে।
চট্টগ্রাম রেলওয়ে পুলিশের ওসি এস এম শহিদুল ইসলাম বলেন, ঈদকে ঘিরে রেলওয়ে পুলিশ তিন স্তরের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছে। রেলওয়ে পুলিশের পাশাপাশি এপিবিএনসহ অনান্য প্রশাসন কাজ করছে। যাত্রীরা যেন কোনো ধরনের হয়রানি না হয় সে জন্যও কাজ করা হচ্ছে। ট্রেনের ভিতরেও যেন যাত্রীরা নিরাপদে বাড়ি ফিরতে পারে আমাদের টিম সেখানেও রয়েছে। এখন পর্যন্ত কোনো ধরনের সমস্যার অভিযোগ আমাদের কাছে আসেনি।
সোমবার চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশনে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, প্ল্যাটফর্মে ভিড় ছিল অনেকটাই নিয়ন্ত্রিত। যাত্রীরা ফাঁকা স্টেশনে নির্দিষ্ট বগিতে গিয়ে বসছেন। বিগত সময়গুলোতে ঈদের আগে আগে চট্টগ্রাম থেকে বাড়ি ফেরা যাত্রীদের ভিড়ে রেলওয়ে স্টেশনে দাঁড়ানোর সুযোগ ছিল না। তবে বর্তমানে স্টেশনে ভিড় দেখা যায় না। ফলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি যাত্রীরাও স্বস্তি নিয়ে যাত্রা করছেন। এছাড়াও প্রবেশ মুখে যাত্রীদের নিরাপত্তার বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখছেন দায়িত্বরত আরএনবি সদস্য ও রেলওয়ের স্টাফরা। পাশাপাশি ছাদে ভ্রমণ ঠেকাতে কঠোর অবস্থানে দেখা গেছে সংশ্লিষ্টদের।
এদিকে চট্টগ্রামের অলংকার মোড়, একে খান, দামপাড়া বাস স্টেশন ঘুরে দেখা গেছে, ঈদে ঘরমুখো মানুষের তেমন চাপ নেই। নিয়মিত যাত্রার তুলনায় কিছুটা বাড়লে আগামী কয়েকদিন যাত্রীদের চাপ বাড়বে বলে মনে করছেন বাস চালকরা। তারা বলছেন, প্রতি ঈদে এভাবে আমাদের দিন কাটে। ঈদের দু-একদিন আগে যাত্রীদের চাপ থাকে। তবে ঈদে এখনো যাত্রীদের চাপ না থাকলেও সজাগ রয়েছে জেলা প্রশাসন ও বিআরটিএ। জননিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ, সড়ক পরিবহন ব্যবস্থায় শৃঙ্খলা এবং নির্ধারিত বাসভাড়ার অতিরিক্ত আদায় রোধে নিয়মত অভিযান চালানো হচ্ছে।
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল