ক্যারিবিয়ান সাগরে সৃষ্ট বিশ্বের এ বছরের সবচেয়ে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় ‘মেলিসা’ ধীরে ধীরে আঘাত হানতে যাচ্ছে। যার মূলভাগ তাণ্ডব চালাবে দ্বীপরাষ্ট্র জ্যামাইকায়। ১৮৫১ সালের পর সবচেয়ে বড় ঝড়ের কবলে পড়তে যাচ্ছে দেশটি।
ইতোমধ্যে ক্ষয়-ক্ষতির পাশাপাশি অন্তত সাতজনের মৃত্যু ঘটিয়েছে মেলিসা। যার মধ্যে তিনজন মারা গেছেন জ্যামাইকায়। অন্য চারজন হাইতি ও ডোমিনিকান রিপাবলিকের বাসিন্দা।
যুক্তরাষ্ট্রের আবহাওয়াবিদরা সতর্ক করেছেন, মেলিসা বিধ্বংসী ও প্রাণঘাতী পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে চলেছে। স্থানীয় সময় ২৮ অক্টোবর ভোরের দিকে ঝড়টি আঘাত হানতে পারে।
সর্বোচ্চ স্তরের ক্যাটাগরি-৫ মাত্রার ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিয়ে মেলিসা এগিয়ে যাচ্ছে ঘণ্টায় ৬ কিলোমিটার বেগে। বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন, মেলিসার গতিবেগ তুলনামূলক ধীর হওয়ায় কিছু এলাকায় টানা প্রবল বৃষ্টিতে মারাত্মক বন্যা ও ভূমিধসের ঝুঁকি বেড়ে গেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ঘূর্ণিঝড় সম্পর্কিত গবেষণা ও পর্যবেক্ষণ সংস্থা এনএইসসি বলছে, জ্যামাইকায় সোমবার রাত থেকে মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত প্রাণঘাতী ঝড়, বন্যা ও জলোচ্ছ্বাসের শঙ্কা রয়েছে। পরিচালক মাইকেল ব্রেনান সতর্ক করে বলেছেন, দয়া করে কেউ ঘরের বাইরে যাবেন না, নিরাপদ স্থানে অবস্থান নিন। মেলিসার গতিবেগ হঠাৎ বেড়ে যেতে পারে, এর মূলকেন্দ্র খুব দ্রুত গতিতে পুরো দ্বীপ অতিক্রম করবে।
আবহাওয়াবিদরা আশঙ্কা করছেন, আগামী চার দিনে প্রায় ১ মিটার বৃষ্টিপাত হতে পারে। এর ফলে পাহাড়ি এলাকায় ব্যাপক ভূমিধসের ঘটনা ঘটতে পারে।
এদিকে জ্যামাইকার সরকার রাজধানী কিংস্টনের কিছু এলাকা থেকেও জনসাধারণকে সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। শিক্ষামন্ত্রী ডানা মরিস ডিকসন বলেছেন, এমন ঝড় আমরা আগে কখনও দেখিনি। পুরো অক্টোবর জুড়ে বৃষ্টি হয়েছে, এবার বন্যা ও ভূমিধসের আশঙ্কা ভয়াবহ।
তিনি জানান, দেশজুড়ে ৮৮১টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। সবাইকে নিরাপদে সরে যেতে আহ্বান জানানো হয়েছে।
দেশটির দক্ষিণ–পূর্বাঞ্চলের নিচু এলাকাগুলো সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ। অনেকে তাদের সম্পদ ও ঘর-বাড়ি ছেড়ে যেতে চাইছেন না। অন্যদিকে কিছু এলাকার সড়কপথ ইতোমধ্যে চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে।
সূত্র: বিবিসি, রয়টার্স
বিডিপ্রতিদিন/এমই