বিএনপির স্থায়ী কমিটি থেকে কেন্দ্রীয় কমিটির বিভিন্ন স্তরে নিজেদের জায়গা পোক্ত করতে চট্টগ্রামের বাঘা বাঘা রাজনীতিবিদরাও এখন তৎপর হয়ে উঠেছেন। পাশাপাশি কাউন্সিলের আগে হিসাব-নিকেশের সালতামামি খুলে লবিং-তদবির চালিয়ে যাচ্ছেন মধ্যমসারির নেতারাও। সিনিয়র নেতারা তদবির না করলেও দলের জন্য তাদের দীর্ঘদিনের ত্যাগ ও পরিশ্রমের এবার মূল্যায়ন হবে-এটাই প্রত্যাশা তাদের। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য হিসেবে তিনজন, যুগ্ম মহাসচিব পদে দুজন এবং সাংগঠনিক পদে দুজনসহ বেশ কয়েকজন ত্যাগী ও পরীক্ষিত নেতাকে যথার্থ মূল্যায়ন করা হবে বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।
বিএনপির নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, আসন্ন কাউন্সিলে বিএনপির স্থায়ী কমিটিতে ঠাঁই পেতে আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষায় রয়েছেন, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মোরশেদ খান, সাবেক মন্ত্রী ও বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, সাবেক মন্ত্রী ও চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। চেয়ারপারসনের অপর উপদেষ্টা মীর মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন দলের ভাইস চেয়ারম্যান হওয়ার জন্য নানাভাবে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। এছাড়া এলডিপির চেয়ারম্যান কর্নেল (অব.) অলি আহমদ বীরবিক্রমও সদলবলে পুনরায় বিএনপিতে যোগ দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলেও অপর একটি সূত্রের দাবি। এক্ষেত্রে সাবেক এই যোগাযোগ মন্ত্রীকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য করা হতে পারে বলে জানা গেছে।
এদিকে, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির সভাপতি জাফরুল ইসলাম চৌধুরী ও বিএনপির বর্তমান শিশুবিষয়ক সম্পাদক রোজী কবির দলীয় চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা, বিএনপির সাবেক চীফ হুইপ সৈয়দ ওয়াহিদুল আলম ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং বর্তমান সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম আকবর খোন্দকার ও গিয়াস কাদের চৌধুরী যুগ্ম মহাসচিব পদের জন্য কোথাও কোথাও ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন বলে জানা গেছে। এছাড়া উত্তরের সভাপতি আসলাম চৌধুরী, মহানগর সাধারণ সম্পাদক ডা. শাহাদাত হোসেন, দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক গাজী শাহজাহান জুয়েল সাংগঠনিক সম্পাদক পদের জন্য নানাভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। তবে ডা. শাহাদাত হোসেন স্বাস্থ্য কিংবা আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক হওয়ার জন্যও কেন্দ্রে ইচ্ছা পোষণ করেন বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে।
অন্যদিকে, কেন্দ্রীয় সদস্য মাহবুবুর রহমান শামীম সহ-সাংহঠনিক সম্পাদক, দক্ষিণ জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি এনামুল হক ও এ্যাডভোকেট ইফতেখার মহসিন সদস্য হওয়ার জন্য কেন্দ্রে তদবির চালিয়ে যাচ্ছেন বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে। তবে চট্টগ্রাম বিএনপির বাঘা বাঘা নেতাদের পদায়ন করে বিএনপির অতীত ভাবমূর্তি ফিরিয়ে আনতে এবং ঐক্যবদ্ধ বিএনপির রাজনৈতিক শক্তি সুসংহত করতে খোদ দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াও বেশ সতর্ক রয়েছেন বলে জানান কেন্দ্রীয় নেতারা। চট্টগ্রামের রাজনীতিতে দীর্ঘদিন ধরে বিএনপির যে অনৈক্য ও বহু পক্ষ-বিপক্ষের কোন্দলের অবসান ঘটাতে এবারের কাউন্সিলে চট্টগ্রামকে আলাদা গুরুত্ব দেওয়া হবে বলেও জানান কেন্দ্রের নেতারা।
বিডি-প্রতিদিন/১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৬/শরীফ