চট্টগ্রামের অভিজাত বিপনীবিতান মিমি সুপার মার্কেট। এখানকার কাপড়ের দোকান আর্কষণ-এ একটি লেহেঙ্গার একদাম মূল্য লেখা আছে ৩৫ হাজার ৫০০ টাকা। এটির ক্রয় মূল্য ১৫ হাজার ৯০০ টাকা। এক পোশাকেই লাভ ১৯ হাজার ৬০০ টাকা! ভ্রাম্যমাণ আদালতের কাছে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দেখাতে ব্যর্থ হওয়া ও অতিমুনাফার অভিযোগে এক লক্ষ টাকা জরিমানা করা হয়।
নগরের চিটাগাং শপিং কমপ্লেক্সের ফিক্সড প্রাইজের কাপড়ের দোকান জিনিমিনি। এখানে ৪ হাজার ৭৫০ টাকা ক্রয়মূল্যের একটি লেহেঙ্গা বিক্রি হচ্ছে ৯ হাজার ৮৫০, ৫ হাজার ১০০ টাকা ক্রয়মূল্যের একটি থ্রি পিস বিক্রি করা হচ্ছে ১২ হাজার ৫০০ টাকায়। একই মার্কেটের নাদিয়া এম্পোরিয়ামকেও দ্বিগুণ-তিনগুণ লাভে পোশাক বিক্রি করতে দেখেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। দুই দোকানেই ভ্রাম্যমাণ আদালতের উপস্থিতি টের পেয়ে সকল পোশাকের ফিক্সড প্রাইস ট্যাগ ছিড়ে ফেলা হয়। কিন্তু দোকানদার ক্রয়ের কাগজ দেখাতে ব্যর্থ হয়। দুই দোকানকে ওভারপ্রাইসিং ও ক্রয় রশিদ দেখাতে না পারায় এক লক্ষ টাকা করে জরিমানা করে ভ্রাম্যমান আদালত।
এভাবে চট্টগ্রামের অভিজাত মার্কেট সমুহে ফিক্সড প্রাইজের (একদাম) নামে চলছে গ্রাহক প্রতারণার উৎসব। একদাম মূল্য লিখে রেখে এক কাপড় থেকেই ১৯ হাজার ৫০০ টাকা পর্যন্ত লাভ করা হচ্ছে। জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালতে এ সব তথ্য বের হয়ে আসে। প্রতারণা করা হচ্ছে ভোক্তাদের সঙ্গে।
ভ্রাম্যমাণ আদালতে নেতৃত্বদানকারী জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তাহমিলুর রহমান বলেন, অভিজাত মার্কেটের ব্যবসায়ীরা পোশাক নিয়ে যে আকাশচুম্বি লাভ করেন তা অভিযানে না গেলে বিশ্বাসই করা যেত না। গত বুধবার সকল মার্কেট ব্যবাসায়ীদের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দোকানের রাখার জন্য বলা হয়েছিল। কিন্তু অনেকে তা করেননি। তাই অভিযানে যারা ক্রয়মূল্যের চেয়ে বেশি দাম রাখছেন এবং কাগজপত্র দেখাতে পারছেন না তাদেরকে জরিমানা করা হচ্ছে।
কনজিউমার এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ চট্টগ্রাম বিভাগের সভাপতি এস এম নাজের হোসাইন বলেন, ভ্রাম্যমাণ আদালত নিয়মিত মার্কেটে অভিযান পরিচালনা করে আসছে। তারপরও ব্যবসায়ীরা ক্রয়মূল্যের চেয়ে দ্বিগুণ বা তিনগুণ বেশি লাভে কাপড় বিক্রি করছেন। এটি লজ্জাজনক বিষয়। তবে এর জন্য প্রয়োজন মানসিকতা পরিবর্তন ও নৈতিকতাবোধ।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, ছোলা, চিনি, তেলসহ রমজানের নিত্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণের পর জেলা প্রশাসন কাপড়ের দোকানে ভ্রাম্যমাণ অভিযান শুরু করে।
বিডি-প্রতিদিন/এস আহমেদ