একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আদালতের গ্রেফতারী পরোয়ানাভুক্ত ৪ রাজাকারকে সন্ধ্যায় গ্রেফতার করেছে বাগেরহাট পুলিশ। শনিবার দুপুরে বিচারপতি এনায়েতুর রহিমের নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনাল বাগেরহাটের ১২ জন যুদ্ধাপরাধীর বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারী করেন।
আদালতের গ্রেফতারী পরোয়ানা পেয়ে সন্ধ্যায় বাগেরহাট ও খুলনার পুলিশ বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে ১২ জনের মধ্যে চার জনকে গ্রেফতার করে। অন্য আসামিদের ধরতে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে। গ্রেফতারকৃত ৪ রাজাকারকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হবে।
বাগেরহাটে পুলিশের অভিযানে আটককৃত ৪ রাজাকার হলেন, বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলার তেলিগাঁতি গ্রামের প্রয়াত মোক্তার আলী খানের ছেলে খান আকরাম হোসেন (৬০), একই উপজেলার চাপড়ি গ্রামের প্রয়াত শেখ মোসলেম উদ্দিনের ছেলে শেখ মোহম্মদ উকিল উদ্দিন (৮২), কচুয়া উপজেলার যশোরদি গ্রামের প্রয়াত গফুর আলী মোল্লার ছেলে ইদ্রিস আলী মোল্লা (৬৪) এবং একই উপজেলার উদনখালি গ্রামের প্রয়াত সফদার মোল্লার ছেলে মো. মকবুল মোল্লা (৭৯)।
বাগেরহাটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গৌতম কুমার বিশ্বাস বলেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের গ্রেফতারী পরোয়ানার খবর পেয়ে পুলিশ সন্ধ্যায় অভিযান চালিয়ে যুদ্ধাপরাধী বাগেরহাট শহরের পুরাতন বাজার এলাকা থেকে খান আকরাম হোসেন এবং মোরেলগঞ্জ উপজেলার তেলিগাঁতি গ্রামের উকিল উদ্দিন, কচুয়া উপজেলার যশোরদি গ্রামের ইদ্রিস আলী মোল্লা ও উদনখালি গ্রামের মো. মকবুল মোল্লাকে গ্রেফতার করেছে।
আসামিদের বিরুদ্ধে ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় কুখ্যাত রাজাকার হিসেবে (মে থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত) বাগেরহাটের কচুয়া ও মোরেলগঞ্জ উপজেলায় গণহত্যা, নারী ধর্ষণ, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের সাতটি অভিযোগ আনা হয়েছে।
বর্তমান সরকারের সময়ে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রক্রিয়া শুরু হলে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল বাগেরহাটের যুদ্ধাপরাধীদের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করে। তদন্তে এসব আসামির বিরুদ্ধে ওই সময়ে সংগঠিত অপরাধের সত্যতা পায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। শনিবার এদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা চেয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আবেদন করা হয়। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল শুনানী শেষে এ আসামীদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারি করার পরপরই এই ৪ রাজাকারকে পুলিশ গ্রেফতার করে।
বিডি প্রতিদিন/১৬ জুলাই ২০১৬/হিমেল-২৬