টাঙ্গাইল সদর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ও জেলা শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্বাস আলীর জামিন না মঞ্জুর করে জেল হাজতে প্রেরণ করেছে আদালত। আজ সকালে একটি মামলায় আব্বাস আলী আদালতে হাজির হয়ে জামিন প্রার্থনা করলে টাঙ্গাইল সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলী আদালতে বিচারক গোলাম কিবরিয়া তার জামিন না মঞ্জুর করে জেল হাজতে প্রেরণের নির্দেশ দেন।
বিএনপি নেতা এডভোকেট আলী ইমাম তপনের দায়ের করা জমি দখলের একটি মামলায় আব্বাস আলী পুলিশের গ্রেফতারী পরোয়ানার পলাতক আসামি ছিলেন।
সদর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ও টাঙ্গাইল জেলা শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্বাস আলী জেলার ব্যবসায়ীদের কাছে এক আতংকের নাম ছিলেন। শ্রমিক নেতা আব্বাস আলী ও তার সহযোগীরা জেলা শহরে বেপরোয়া চাঁদাবাজি ও জমি দখল করতেন বলে অভিযোগ ছিল। চাঁদাবাজি ও অন্যের জমি দখল করে রাতারাতি হোটেল বেয়ারা থেকে কোটিপতি বনে যান আব্বাস আলী। টাঙ্গাইলে আলোচিত খান পরিবারের ৪ ভাইয়ের সার্বিক সহযোগীতায় আব্বাস আলী শহরের বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে চাঁদাবাজি, জমি দখলসহ বিভিন্ন অপকর্ম করেছেন বলে জানা গেছে।
জানা যায়, ৪ ভাইয়ের আশিবার্দ নিয়েই গত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান পদে জয়ী হয় আব্বাস আলী। ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেন তিনি। বেড়ে যায় জমি দখল ও চাঁদাবাজিও। শুধু অন্যের জমি দখল করেই ক্ষ্যান্ত ছিলেন না আব্বাস আলী। তিনি শহরের নিরালার মোড়ে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিসৌধ নির্মান নির্মিতব্য পৌরসভার জমিও দখল করে শ্রমিক লীগের কার্যালয় বানিয়ে ছিলেন। এছাড়া আব্বাস আলীর বিশাল ক্যাডার বাহিনী ছিল। সেই ক্যাডার বাহিনী শহরের বিভিন্ন হোটেল রেস্তোরা, মিষ্টিপট্রি, কাঁচা বাজারসহ বিভিন্ন অপকর্ম চালাত। আব্বাস আলী দখলে রয়েছে শতাধিক একর জমি। এর মধ্যে পৌর এলাকার ভাল্লুককান্দি এলাকায় ১২ শতাংশ জমির ওপর নির্মান করা হয়েছে বহুতল ভবন।
এদিকে খান পরিবারের ৪ ভাই মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমেদ হত্যা মামলায় শহর ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার পর গত ২০১৪ সালের অক্টোবর রাতে শ্রমিক লীগের দপ্তর সম্পাদক আমিনুল ইসলাম স্বাধীন ও ইমরানকে ডিবি পুলিশ গ্রেফতার করে। তাদের স্বীকারোক্তি মোতাবেক শ্রমিক লীগ কার্যালয়ের পাশ থেকে বিপুল পরিমান দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়। এর পর থেকেই শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্বাস আলী গ্রেফতারের ভয়ে আত্মগোপনে চলে যান।
সদর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ও জেলা শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্বাস আলীর বিরুদ্ধে টাঙ্গাইল মডেল থানায় হত্যা, চাঁদাবাজি ও জমি দখলসহ অন্তত ১০টি মামলা রয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/১৮ জুলাই ২০১৬/হিমেল-০৭