গাজীপুরের টঙ্গী বিসিক শিল্পনগরী এলাকার ট্যাম্পাকো ফয়েলস কারখানায় বয়লার বিস্ফোরণের সপ্তম দিন শুক্রবারও উদ্ধার তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে। ঘটনার পর থেকে সেনাবাহিনীর সদস্য ও ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ৩৪জনের লাশ উদ্ধার করেন। শুক্রবার কোন লাশ উদ্ধার না হলেও কারখানার ভেতর থেকে পঁচা গন্ধ বের হচ্ছে।
ভারী সরঞ্জামাদি নিয়ে উদ্ধার কাজে অংশ নেওয়া সেনাবাহিনীর সদস্য ও ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা কারখানার মূল ফটকের পূর্বপাশ থেকে ধ্বংসস্তুপ সরানোর কাজ করছেন। একটু একটু করে তারা ভেতরে এগুচ্ছেন। কবে নাগাদ এই উদ্ধার কাজ শেষ হবে সেই প্রতীক্ষায় নিখোঁজের স্বজনরা দিন গুণছেন। কারখানার চারপাশ ঘিরে শুধু স্বজনের আহাজারি।
কেউ কেউ ভাবছেন, ভবনের ভেতর আটকে পড়া শ্রমিকরা হয়ত বেচে আছেন। তারা ফিরে আসবেন। দিন নেই, রাত নেই, খাওয়া-দাওয়া ছেড়ে কারখানার পাশে গিয়ে স্বজনের অপেক্ষায় বিলাপ করতে দেখা গেছে অনেককে। স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, ঘটনার দিন কারখানার উত্তর পাশে আটকে পড়া শ্রমিকরা জানালা দিয়ে হাত বের করে শুধু 'বাঁচাও বাঁচাও' বলে চিৎকার করছিল। ওই শ্রমিকরা হয়ত কেউ বের হতে পারেনি। ধ্বংসস্তুপ থেকে উদ্ধার কাজ শেষ হলে আরও অনেক শ্রমিকের লাশ বের হবে বলে ধারণা কারও কারও।
ওই কারখানার প্রিন্টিং অপারেটর মো. জহিরুল ইসলামের এক স্বজন মো. আলাউদ্দিন মিয়া বলেন, ঘটনার পর থেকে এমনকি শুক্রবার সকালেও কারখানার পাশে গিয়ে দাঁড়িয়েছিলাম। কিন্তু আমার স্বজনের লাশ এখনো পাইনি। জেলা প্রশাসন কন্ট্রোল রুমে গিয়েও খোঁজ নিলাম, কোন খবর নাই। আমি আমার পরিবারের কাছে কী জবাব দেব?
গাজীপুর সিটি মেয়র আসাদুর রহমান কিরণ বলেন, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে একটি তথ্য সেবা কেন্দ্র চালু করা হয়েছে। এছাড়া সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে ধ্বসংস্তুপ ভবনের মালামাল রাখার জন্য জায়গা নির্ধারণ, গাড়ি ব্যবহারসহ সেনাবাহিনীর সদস্য ও ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের সার্বিক সহযোগিতা প্রদান করা হচ্ছে।
এদিকে ১৪ স্বতন্ত্র ইঞ্জিনিয়ার বিগ্রেড কমান্ডার বিগ্রেডিয়ার জেনারেল এএসএম মোহাম্মদ হাসান(পিএসসি) বলেন,আমাদের উদ্ধার তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে। তবে কবে নাগাদ উদ্ধার কাজ শেষ হবে তা বলা যাচ্ছে না।
বিডি-প্রতিদিন/এস আহমেদ