গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের সাময়িক বরখাস্তকৃত মেয়র ও বিএনপি’র ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক এম এ মান্নানকে চাঁদাবাজি ও মারধরের মামলায় রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে পুনরায় কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে। একদিনের রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে বুধবার অধ্যাপক এম এ মান্নানকে গাজীপুরের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করলে বিচারক মোহাম্মদ আবদুল হাই তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
গাজীপুরের কোর্ট ইন্সপেক্টর মো. রবিউল ইসলাম জানান, গত ২০১৪ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর ১০ লাখ টাকা চাঁদার দাবিতে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের মেয়রের কার্যালয়ে এক ব্যক্তিকে মারধরের অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনায় গত ২৪ নভেম্বর জয়দেবপুর থানায় দায়েরকৃত একটি মামলায় কারাবন্দি মান্নানকে গ্রেফতার দেখানো হয়। মারধরের শিকার ওই ব্যক্তি হলেন টঙ্গীর শিলমুন এলাকার মৃত বাছির উদ্দিনের ছেলে মো. রমিজ উদ্দিন। ওই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এস আই রুহুল আমীন আসামি অধ্যাপক এম এ মান্নানকে রবিবার গাজীপুরের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-৩ এ হাজির করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৫ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন।
বিচারক মোহাম্মদ আব্দুল হাই শুনানি শেষে অধ্যাপক মান্নানের এক দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন এবং তা তিন কার্যদিবসের মধ্যে কার্যকরের জন্য পুলিশকে আদেশ দেন। তিন দিনের মধ্যে রিমান্ড কার্যকর করা না হলে রিমান্ড বাতিল হবে বলে আদালত আদেশে উল্লেখ করেন। আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী মঙ্গলবার সন্ধ্যা পৌনে সাতটার দিকে তাকে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-২ থেকে জয়দেবপুর থানায় নেয়া হয়। রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে বুধবার দুপুরে অধ্যাপক এম এ মান্নানকে গাজীপুরের জুডিশিয়াল ম্যাজেস্ট্রেট আদালতে হাজির করলে বিচারক মোহাম্মদ আবদুল হাই তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। পরে বিকেলে অধ্যাপক এম এ মান্নানকে পুনঃরায় কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-২ তে পাঠানো হয়।
উল্লেখ্য, যাত্রীবাহীবাসে পেট্রলবোমা হামলার মামলায় গত বছরের ১১ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের (জিসিসি) মেয়র ও বিএনপি নেতা অধ্যাপক এম এ মান্নানকে ঢাকার বারিধারার ডিওএইচএস’র বাসভবন থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ২২ মামলায় জামিনের পর হাইকোর্ট থেকে সর্বশেষ জামিন লাভ করে চলতি বছরের ২ মার্চ তিনি কারামুক্ত হন। গত এপ্রিল মাসে তিনি মেয়র পদ ফিরে পান। এ অবস্থায় চলতি বছর ১৫ এপ্রিল এম এ মান্নানকে ফের নাশকতার তিনটি মামলায় গ্রেফতার করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। একই মাসে তাকে ফের বরখাস্ত করা হয়। গত ১৫ এপ্রিল থেকে তিনি কারাগারেই আছেন। মান্নানের অবর্তমানে গত বছরের ৮ মার্চ থেকে প্যানেল মেয়র আসাদুর রহমান কিরণ গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের ভারপ্রাপ্ত মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। অধ্যাপক মান্নানের বিরুদ্ধে এ পর্যন্ত মোট ২৮টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। ইতোমধ্যে দু’টি মামলায় তার বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে।
বিডি-প্রতিদিন/ ০৭ ডিসেম্বর, ২০১৬/ আফরোজ