আশুলিয়ার গকুলনগর এলাকার মাদারটেক উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মহিবুর রহমানের বিরুদ্ধে ঘুষ নিয়ে অফিস সহকারী (কম্পিউটার অপারেটর) পদে এক অনভিজ্ঞ লোককে চাকুরী পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এমনকি পরীক্ষা বোর্ডে উপস্থিত থাকা ওই স্কুলের ম্যানেজম্যান্ট কমিটির সদস্যরা একই অভিযোগ করেন। অভিজ্ঞতা না থাকা স্বত্বেও একটা অদক্ষ্য পরীক্ষার্থীর পক্ষে স্বাক্ষর করার জন্য বললে তারা পরীক্ষা বোর্ড থেকে বের হয়ে চলে আসেন।
সুত্র জানায়, গত মাসে সাভারের গকুলনগর এলাকায় মাদারটেক উচ্চ বিদ্যালয়ে অফিস সহকারী (কম্পিউটার অপারেটর) পদে স্থানীয় পত্রিকায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী ওই পদে চাকুরীর জন্য ৭ জন আবেদন করেন। আবেদনের পর লিখিত পরীক্ষা শেষে সাভার উপজেলা শিক্ষা অফিসে এক মৌখিক পরীক্ষার আয়োজন করা হয়। পরীক্ষা বোর্ডে শিক্ষা অফিসার, স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও ম্যানেজমেন্ট কমিটি সদস্যদের উপস্থিতে সকল পরীক্ষার্থীদের মৌখিক প্রশ্ন করা হয়। মৌখিক পরীক্ষায় একটি প্রশ্নের উত্তর না দিতে পারলেও ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক ইমরান নামের এক পরীক্ষার্থীর পক্ষে ম্যানেজমেন্টন কমিটির সদস্যদের স্বাক্ষর দেওয়ার জন্য বলেন। এসময় ম্যানেজমেন্ট কমিটির সদস্যরা একজন অনভিজ্ঞ পরীক্ষার্থীর পক্ষে স্বাক্ষর না করে পরীক্ষা বোর্ড থেকে বের হয়ে চলে আসেন।
ওই স্কুলের অফিস সহকারী (কম্পিউটার অপারেটর) পদে জহিরুর ইসলাম নামের এক পরীক্ষার্থী অভিযোগ করে বলেন, "মাদারটেক স্কুলে অফিস সহকারী পদে এইচ এসসি পাসের কথা বলা হয়েছে। অথচ তিনি ডিগ্রী পাস। এমনকি সাভার পৌরসভায় প্রায় ৭ বছর যাবৎ কম্পিউটার অপারেটর পদে চাকুরী করে আসছেন। মৌখিক পরীক্ষায় তিনি অধিকাংশ প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন। অথচ একটি প্রশ্নের উত্তর না দিতে পারলেও স্কুলের প্রধান শিক্ষক মহিবুর রহমান কয়েক লক্ষাধিক টাকা ঘুষ নিয়ে এইচ এসসি পাস এক অনভিজ্ঞ লোককে চাকুরী দেওয়ার পায়তারা করছেন।"
একই অভিযোগ করে মাষ্টার্স পাস মনির, অনার্সে অধ্যয়নরত শহিদুল ও বিকাশ অভিযোগ করে বলেন, "প্রধান শিক্ষকের পরীক্ষার্থীর চাইতেও আমরা লিখিত পরীক্ষায় ভালো নম্বর পেয়েছি। এমনকি মৌখিক পরীক্ষায় অধিকাংশ প্রশ্নের উত্তর দিয়েছি। অথচ ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক মোটা অঙ্কের ঘুষ নিয়ে একজন অনভিজ্ঞ লোককে চাকুরী দেওয়ার পায়তারা করছেন।"
অন্যদিকে মৌখিক পরীক্ষা বোর্ডে উপস্থিত থাকা মাদারটেক স্কুলের ম্যানেজমেন্ট কমিটির সদস্য আইয়ুব আলী, সামছু ও জলিল উদ্দিন বলেন, "স্কুলের প্রধান শিক্ষক মহিবুর রহমান ঘুষ নিয়ে আগে থেকেই ওই পরীক্ষার্থীর জন্য সুপারীশ করে আসছে। পরে পরীক্ষা বোর্ডে তাকে কম্পিউটার সম্পর্কে মৌখিক প্রশ্ন করা হলে তিনি একটি প্রশ্নেরও সঠিক উত্তর দিতে পারেনি। এর পরও প্রধান শিক্ষক ইমরানের পক্ষে স্বাক্ষর করার জন্য বললে তারা স্বাক্ষর না করেই পরীক্ষা বোর্ড থেকে বের হয়ে চলে আসেন।"
অন্যদিকে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষকের সাথে যোগাযোগ কার হলে, তিনি ঘুষ নেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেন। তবে এ ঘটনায় সংবাদ না করার জন্য অনুরোধ করেন।
এ ব্যাপারে সাভার উপজেলা শিক্ষা অফিসার শাহারিয়া মেনজিস বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, "মাদারটেক উচ্চ বিদ্যালয়ে অফিস সহকারী (কম্পিউটার অপারেটর) পদে তিনজনকে প্রাথমিক বাছাই করা হয়েছে। এছাড়াও এ ঘটনায় তিন সদস্য নিয়ে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী যোগ্য প্রার্থীকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।"
বিডি-প্রতিদিন/ ৩১ মার্চ, ২০১৭/ আব্দুল্লাহ সিফাত-১১