অবশেষে জল্পনা-কল্পনা শেষে চট্টগ্রামের দুই শীর্ষ নেতা একই মঞ্চে উঠলেন, খোশ মেজাজে কথাও বললেন। টানা বেশ কয়েকদিনের পক্ষে-বিপক্ষে বক্তব্যে তোলপাড় ছিল চট্টগ্রামসহ সারাদেশে। সবাইকে তাক লাগিয়ে শীর্ষ দুই নেতা মহিউদ্দিন ও আ জ ম নাছির উদ্দিনকে দেখে নেতা-কর্মীরাও অভিনন্দন জানান।
গত এক সপ্তাহ আগেও লালদীঘির মাঠে নিজ দলের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিনের বিরুদ্ধে ‘গরম বক্তব্য’ দিয়ে রাজনীতিতে উত্তাপ তৈরি করলেও প্রকাশ্য সভায় সেটা আবার নিজেই নিরসন করেছেন সাবেক মেয়র এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী। এতে দেখা দুই নেতার ঐক্যের সুর।
সোমবার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গনে নগর আওয়ামী লীগের মুজিবনগর দিবসের আলোচনা সভায় বক্তব্য দেয়ার সময় মেয়র নাছিরকে নিজের পাশে ডেকে নেন মহিউদ্দিন। এসময় নাছির হাসিমুখে সমাবেশ মঞ্চ থেকে এসে সালাম দিয়ে মহিউদ্দিনের পাশে দাঁড়ান। মহিউদ্দিন নাছিরের হাত উপরে তুলে ধরে ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’ স্লোগান দেন। পুরো সভাস্থল এসময় হাততালি আর স্লোগানগানে মুখর হয়ে উঠে।
এসময় চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী বলেন, বক্তব্য দেয়ার সময় আমি অনেককিছু বলেছি। কেন বলেছি সেটা আজকে না-ই বা বললাম। আগামীতে আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে চলব। ‘আমরা একই ঘরে আছি। পদবির জন্য প্রতিযোগিতা হতে পারে। ভেতরে অনেক কিছু থাকতে পারে। তার অর্থ খুনোখুনি নয়, মারামারি নয়।’ তিনি বলেন, নাছির ভাই এখানে আছেন, তার কাছে আমাদের দাবি থাকবে। সেই দাবি উনি চেষ্টা করবেন আদায় করতে। আমি তাকে আশ্বস্ত করছি এই সভায় দাঁড়িয়ে, তাকে আমি সার্বিক সহযোগিতা অবশ্যই আমি প্রদান করব। তবে এসময় মহিউদ্দিন চৌধুরীর বক্তব্যকে সাধুবাদ এবং স্বাগত জানালেও মুজিবনগর দিবসের বাইরে কোন ধরণের মন্তব্য করেননি আ জ ম নাছির উদ্দিন।
মহিউদ্দিন আরো বলেন, আমি এবং সাধারণ সম্পাদক (আ জ ম নাছির) দুজন মিলে এই চট্টগ্রামে যেসব সমস্যা আছে সেগুলো ঐক্যবদ্ধভাবে সমাধান করব। তিনি স্লোগান থামানোর নির্দেশ দিয়ে বলেন, তোমরা ধন্যবাদ বলবে, সবাই ধন্যবাদ বল।
বর্ধিত হারে হোল্ডিং ট্যাক্স আদায়, পাথরঘাটা ফিশারিঘাট থেকে মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র সরানো, আউটার স্টেডিয়ামে সুইমিং পুল নির্মাণ নিয়ে মেয়রের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে আসছেন মহিউদ্দিন। সাতদিনের মাথায় মুজিবনগর দিবস উপলক্ষে আয়োজিত নগর আওয়ামী লীগের আলোচনা সভায় দুই নেতা আবারও এক মঞ্চে বসলেন। তবে এই আলোচনা সভা নিয়ে গণমাধ্যমে অপ্রীতিকর পরিস্থিতির আশংকার কথা উঠে আসে। মুজিবনগর দিবসের আলোচনায় মহিউদ্দিন, নাছির এবং নগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বদিউল আলম ছাড়া আর কোন নেতা বক্তব্য রাখার সুযোগ পাননি।