রাজধানীর বনানীতে জন্মদিনের পার্টিতে ডেকে নিয়ে দুই বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় ধর্ষণের শিকার একজনের সালোয়ার-কামিজের রাসায়নিক পরীক্ষার জন্য অনুমতি দিয়েছেন আদালত। বৃহস্পতিবার ঢাকার মহানগর হাকিম দেলোয়ার হোসেন এ আদেশ দেন। এর আগে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বনানী থানার পরিদর্শক (নিরস্ত্র) মোহাম্মদ আবদুল মতিন ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতের সাধারণ নিবন্ধন শাখায় এ আবেদন করেন।
এদিকে, ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য তরুণীর পরিহিত সেই রাতের পোশাক এখন মামলার গুরুত্বপূর্ণ আলামত হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নির্যাতনের শিকার তরুণীর পোশাক ধর্ষণের ঘটনা প্রমাণে সহায়ক। ঘটনার এক মাস পর ওই দুই তরুণীর শরীর থেকে ধর্ষণের আলামত না পেলেও পোশাক থেকে সহজেই আলামত পাওয়া যাবে।
শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক ডা. সেলিম রেজা চৌধুরী বলেন, ডিএনএ প্রোফাইলিং যদি করা যায় তাহলে অভিযুক্তদের সঙ্গে মিলে গেলে সেটি মামলার গুরুত্বপূর্ণ সহায়ক হিসেবে বিবেচিত হবে। কেবলমাত্র ফরেনসিক টেস্টের মাধ্যমে কিছু পাওয়া না গেলেও পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতিও সেদিনের ঘটনার গুরুত্বপূর্ণ আলামত হিসেবে বিবেচিত হবে। তাদের সঙ্গে যদি কোন জবরদস্তি করা হয়ে থাকে, সেটিও ধর্ষণ হিসেবে বিবেচিত হবে।
আইনজীবী ও মানবাধিকারকর্মী দিলরুবা শারমীন জানান, তাদের পোশাক যদি জোরপূর্বক খোলা হয়ে থাকে, সেখানে অভিযুক্তদের চিহ্ন থাকবে এবং ফিঙ্গারপ্রিন্ট অবশ্যই থাকবে। আর পোশাক পরা অবস্থাতেই যদি ধর্ষণের ঘটনা ঘটে থাকে, তাহলে পোশাকের কোথাও না কোথাও তার আলামত রয়েছে নিশ্চিত। কারণ সেখানে জীবিত বা মৃত স্পার্ম পাওয়া যাবেই। এর জন্য পোশাকের ডিএনএ প্রোফাইলিং করতে হবে। তাহলেই অভিযুক্তদের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যাবে।
তিনি জানান, অভিযুক্তদের গায়ের গন্ধ, ঘাম, গায়ের লোম এবং একজন মানুষের যে রাসায়নিক ক্রিয়া-বিক্রিয়া থাকে সেটা বৈজ্ঞানিকভাবেই বের করা সম্ভব। সেদিন তারা যে কক্ষগুলোতে ছিল সেই কক্ষের বিছানার চাদর, বালিশের কভারও এ ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ আলামত বলেও জানান তিনি। এতদিন পর পোশাক থেকে আলামত সংগ্রহ সম্ভব কিনা প্রশ্নে দিলরুবা শারমীন বলেন, পোশাকগুলো যদি না ধোয়া হয়ে থাকে, তাহলে সেখান থেকে অবশ্যই অভিযুক্তদের পরিচয় শনাক্ত করা সম্ভব হবে।
ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার আয়শা সিদ্দিকা মিলি জানান, মামলার ডকেট বুধবার বুঝে পেয়েছি। আলামত হিসেবে আমাদের কাছে ধর্ষণের শিকার দুই তরুণীর একজনের একটি সালোয়ার আছে। আদালতের অনুমতি পাওয়ার পর ধর্ষণের আলামত পরীক্ষার জন্য সালোয়ারটি সিআইডি অথবা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগে পাঠানো হবে।
বিডি-প্রতিদিন/এস আহমেদ