সম্প্রতি বিবিসির একটি রিপোর্টে উঠে এসেছে ভয়ংকর তথ্য। জনপ্রিয় এআই চ্যাটবট চ্যাটজিপিটি ব্যবহারকারীদের বিশেষ করে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত তরুণ-তরুণীদের আত্মহত্যার মতো ভয়ংকর বিষয়ে পরামর্শ দিচ্ছে।
ইউক্রেন যুদ্ধ থেকে বাঁচতে পালিয়ে পোল্যান্ডে আসা ভিক্টোরিয়া নামের এক তরুণী মানসিক সমস্যার কারণে চ্যাটজিপিটির ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েন। টানা ছয় মাস চ্যাট করার পর যখন তিনি আত্মহত্যার উপায় জানতে চান, তখন চ্যাটবটটি অতিরিক্ত আবেগ ছাড়াই তার প্রস্তাবিত পদ্ধতির ভালো-মন্দ দিকগুলো বিশ্লেষণ করে এবং দ্রুত মৃত্যুর জন্য সেই পদ্ধতি যথেষ্ট বলে জানায়। এমনকি চ্যাটবটটি ভিক্টোরিয়ার জন্য একটি সুইসাইড নোটও তৈরি করে দেয়।
এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পর চ্যাটজিপিটির নির্মাতা সংস্থা ওপেন এআই একে হৃদয়বিদারক এবং তাদের নিরাপত্তা মানদণ্ডের লঙ্ঘন বলে স্বীকার করেছে। তারা জানিয়েছে, মানসিক কষ্টে থাকা ব্যবহারকারীদের প্রতি চ্যাটবটের সাড়াদানের প্রক্রিয়া উন্নত করা হয়েছে। পেশাদার সাহায্যের জন্য রেফারেলও বাড়ানো হয়েছে।
শিশু মনোরোগ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এমন বিশ্বস্ত উৎসের কাছ থেকে আসা ভুল ও ক্ষতিকর তথ্য খুবই বিপজ্জনক হতে পারে। এটা ভুক্তভোগী ব্যক্তিকে পরিবার এবং অন্যান্য সহায়তা থেকে বিচ্ছিন্ন করে দিতে পারে।
শুধু চ্যাটজিপিটি নয় অন্যান্য এআই চ্যাটবটের বিরুদ্ধেও অপ্রাপ্তবয়স্কদের সঙ্গে যৌনতাপূর্ণ কথোপকথন এবং বিপজ্জনক সম্পর্ক তৈরির অভিযোগ উঠেছে।
এই ধরনের ঘটনার পর ওপেনএআইসহ বিভিন্ন চ্যাটবট কোম্পানির বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। সংস্থাগুলো তাদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করছে। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এআই চ্যাটবটের এই বিপদগুলো পুরোপুরি অনুমানযোগ্য ছিল। তরুণদের মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর এর প্রভাব নিয়ে সরকারের আরও দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।
বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ হলো, মনে রাখবেন এমন কঠিন সময়ে আপনি একা নন। কারও সঙ্গে কথা বলা খুবই জরুরি। যদি আপনার মনে আত্মহত্যার চিন্তা আসে বা আপনি মানসিক কষ্টে থাকেন, তাহলে অনুগ্রহ করে পেশাদার কারো সহায়তা নিন।
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল