আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এনামুল হক শামীম বলেছেন, আগস্ট মাস বাঙালির শোকের মাস। এই মাসে আমাদের হৃদয়ের রক্তক্ষরণ হয়। আর খুনিরা উল্লাস করে। এই আগস্টেই খুনিরা ষড়যন্ত্রে মেতে উঠে। এখন নির্বাচিত সরকারকে হঠাতে নানামুখী ষড়যন্ত্র চলছে। এই ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ ছাত্রলীগকে রুখে দাঁড়াতে হবে। কারণ বাংলাদেশ ছাত্রলীগ প্রতিষ্ঠালগ্ম থেকে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হুকুম ও নির্দেশ পালন করতেন। আর এখন জননেত্রী শেখ হাসিনার ভ্যানগার্ড হিসেবে কাজ করে। দেশে গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে হবে। পেছনের দরজা দিয়ে যেন কেউ ক্ষমতায় আসতে না পারে সেজন্য সতর্ক থাকতে হবে।
আজ শুক্রবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিজয় ৭১'র হল ছাত্রলীগ আয়োজিত জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
বিজয় ৭১'র হল শাখা সভাপতি ফরিক রাসেলের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক নয়ন হাওলাদারের পরিচালনায় এতে বক্তব্য দেন হলের প্রাধ্যক্ষ এজেএম শফিউল আলম ভুইয়া, ছাত্রলীগের সভাপতি মো. সাইফুর রহমান সোহাগ, সাধারণ সম্পাদক এসএম জাকির হোসাইন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ সভাপতি আবিদ আল হাসান ও সাধারণ সম্পাদক মোতাহার হোসেন প্রিন্স প্রমুখ।
ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এনামুল হক শামীম বলেন, জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে যখন মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হতে চলেছে, তখন একটি গোষ্ঠী নতুন ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেছে। তারা নির্বাচিত সরকারকে হঠাতে চায়। এ সরকারকে হঠানো সম্ভব না। আওয়ামী লীগের শিকড় অনেক গভীরে। সামরিক সরকার আইয়ুবকে হঠিয়েছি। স্বৈরাচার এরশাদ সরকারের পতন ঘটিয়েছি। ১/১১ সময়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারকে হঠিয়ে দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছি। এখন কোন ষড়যন্ত্র সফল হবে না। বাংলাদেশ ছাত্রলীগ দেশের ১৬ কোটি মানুষকে সঙ্গে নিয়ে সব ষড়যন্ত্র রুখে দাঁড়াবে।
তিনি বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের একক নেতৃত্বেই দেশের স্বাধীনতা এসেছে। বঙ্গবন্ধুর নামের ওপর দেশের মানুষ মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে। তার নামেই স্বাধীনতা এসেছে। কিন্তু এখন যারা তার অবদানকে খাটো করার হীনচেষ্টা করছেন, তাদের দেহ বাংলাদেশে থাকলেও মনপ্রাণ পাকিস্তানে। পাকিস্তানের দালালদের স্থান বাংলাদেশে হবে না।
এনামুল হক শামীম আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ স্বাধীন করেছিলেন বলেই আজকে বাঙালিরা রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, স্পিকার, প্রধান বিচারপতি, সেনা প্রধানসহ বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় দায়িত্বে থাকতে পারছেন। দেশ স্বাধীন না হলে আজকে পাকিস্তানের গোলামি করতে হতো। বাংলা ভাষায় কথা বলতে পারতেন না।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সরকার বিগত সাড়ে আট বছরে যে উন্নয়ন করেছে, তা অতীতে কেউ করতে পারেনি। এই ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে হবে। আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও শেখ হাসিনাকে টানা তৃতীয়বাবের মতো ক্ষমতায় আনতে হবে।
ছাত্রলীগ সভাপতি মো. সাইফুর রহমান সোহাগ বলেন, বঙ্গবন্ধু দীর্ঘ সংগ্রাম করে দেশে স্বাধীনতা এনে দিলেও দেশ গড়ার সময় পেয়েছেন মাত্র সাড়ে তিন বছর। এই সাড়ে তিন বছরের মধ্যে তিনি একটি বিধ্বস্ত দেশ গড়ে তুলেছেন। যখন আমাদের অর্থনৈতিকভাবে মুক্তি দিতে যাচ্ছেন, তখনই পরাজিত শক্তির দোসর বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে। মাত্র সাড়ে তিন বছরে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশকে যেভাবে গড়ে তুলেছেন, তার আদর্শ ধারণ করে ছাত্রলীগের প্রত্যেকে নেতাকর্মীদের কাজ করতে হবে। জননেত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে হবে। দেশে এখন নির্বাচিত সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছে জানিয়ে তিনি ছাত্রলীগের সব নেতাকর্মীদের সজাগ থাকার আহ্বান জানান।
ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক এসএম জাকির হোসাইন বলেন, খুনিরা ব্যক্তি শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা করলেও তার আদর্শকে হত্যা করতে পারেনি। কিন্তু সেই আদর্শকে হত্যার জন্য এখন নতুন ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। এই খুনি চক্রের ষড়যন্ত্র সফল হবে না। বাংলাদেশ ছাত্রলীগ জীবন দিয়ে হলেও তা রক্ষা করবে। কোন ষড়যন্ত্র সফল হবে না।
তিনি বলেন, আজকে দেশে গণতন্ত্র আছে বলেই সবক্ষেত্রে স্বাধীনভাবে মতামত ব্যক্ত করতে পারেন। সেই গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে হবে।
বিডি প্রতিদিন/২৫ আগস্ট, ২০১৭/ফারজানা