সরকার বিরোধী মেয়র প্রার্থীদের নানা অভিযোগের মধ্য দিয়ে বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনের প্রচারণার দ্বিতীয় দিন অতিবাহিত হয়েছে। বিএনপি’র প্রার্থী প্রশাসনের বিরুদ্ধে বৈষম্যমূলক আচরণের অভিযোগ করেছেন। জাপা প্রার্থী প্রশাসনের বিরুদ্ধে ক্ষমতাসীন একটি পরিবারকে ঘিরে লেজুরবৃত্তি এবং বাসদের প্রার্থী তাদের কর্মী-সমর্থকদের বাঁধা-হুমকি দেওয়াসহ সরকারি দলের বিরুদ্ধে আচরণবিধি লংঘনের অভিযোগ করেছেন। কমিউনিস্ট পার্টির প্রার্থী ক্ষমতাসীনদের বিরুদ্ধে কালো টাকা এবং পেশী শক্তির অপব্যবহারের কথা বলেছেন।
যদিও বিরোধী প্রার্থীরা নৌকার পক্ষে জোয়ার দেখে অভিযোগের জন্যই অভিযোগ করেছেন বলে দাবি করেছেন আওয়ামী লীগ মেয়র প্রার্থী সাদিক আবদুল্লাহ। প্রতিদ্বন্দ্বী মেয়র প্রার্থীদের বিরুদ্ধে পাল্টা কোন অভিযোগ নেই সাদিকের।
আনুষ্ঠানিক প্রচারনা শুরুর দ্বিতীয় দিন বুধবার সকাল পৌঁনে ১১টায় নগরীর জেলখানা মোড় থেকে গণসংযোগসহ লিফলেট বিতরণ করেন বিএনপি’র মেয়র প্রার্থী মজিবর রহমান সরোয়ার। এ সময় উন্নয়নের নানা প্রতিশ্রুতি দিয়ে ধানের শীর্ষের পক্ষে ভোট চান তিনি। গণসংযোগকালে সরোয়ার পুলিশের বিরুদ্ধে বৈষম্যমূলক আচরনের অভিযোগ করে বলেন, প্রতীক বরাদ্দ পাওয়ার পর গত মঙ্গলবার দুপুরে সদর রোডের দলীয় কার্যালয় চত্তর থেকে তার উপস্থিতিতে নেতাকর্মীরা ধানের শীষের মিছিল করতে চাইলে পুলিশ তাদের বাঁধা দেয়। অথচ একই সময়ে পুলিশের সামনে দিয়ে সদর রোডে নৌকার একটি মিছিল হলেও তাদের কিছুই বলেনি পুলিশ।
সকাল ১১টায় নগরীর পোর্ট রোডের ট্রলারঘাট এলাকায় গণসংযোগ করে লাঙল মার্কায় ভোট চান জাতীয় পার্টির প্রার্থী ইকবাল হোসেন তাপস। এ সময় নির্বাচনকালীন সময়ে নগরীতে জাতীয় পতাকাবাহী গাড়ি সহ ক্ষমতাসীন একটি পরিবারের বিরুদ্ধে প্রভাব বিস্তার এবং ওই পরিবারকে ঘিরে প্রশাসনের বিরুদ্ধে লেজুরবৃত্তির অভিযোগ করেন জাপা প্রার্থী তাপস।
একই সময়ে কমিউনিস্ট পার্টির মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট এ কে আজাদের নেতৃত্বে কাস্তে মার্কার সমর্থনে সদর রোডে লাল পতাকা মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। এ কে আজাদ ক্ষমতাসীনদের বিরুদ্ধে কালো টাকা এবং পেশী শক্তির অবৈধ ব্যবহারের অভিযোগ করেন।
এর আগে সকাল সাড়ে ১০টায় সদর রোডে প্রতীকি মই সহ গণসংযোগ করেন বাসদের মেয়র প্রার্থী ডা. মনিষা চক্রবর্তী। গণসংযোগকালে জনগনের বরিশাল গড়ার জন্য ভোটারদের সমর্থন কামনা করেন তিনি। এ সময় ডা. মনিষা ক্ষমতাসীনদের বিরুদ্ধে আচরণ বিধি লংঘনসহ প্রশাসনের বিরুদ্ধে বৈষম্যমূলক আচরনের অভিযোগ করেন।
এদিকে সকাল সাড়ে ১১টায় নগরীর মল্লিক রোডের সিস্টার ডে সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গণসংযোগসহ মতবিনিময় করেন আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী সাদিক আবদুল্লাহ। উন্নয়নের ধারাবাহিতকা রক্ষায় নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করার জন্য ভোটারদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
বিরোধী প্রার্থীদের অভিযোগ প্রসঙ্গে সাদিক আবদুল্লাহ বলেন, নৌকা মার্কার জোয়ার দেখে দিশেহারা হয়ে শুধুমাত্র অভিযোগের জন্যই অভিযোগ করছেন তারা। প্রতিদ্বন্দ্বী কোন মেয়র প্রার্থীর বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ নেই সাদিকের।
৫৮ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের বরিশাল সিটির ৪র্থ পরিষদের নির্বাচনে ৫ জন মেয়র প্রার্থী ছাড়াও ৩০টি সাধারণ ওয়ার্ডে ৯৪ জন এবং ১০টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্দ্বী ৩৫ জন। ৩০ জুলাইয়ের ভোটে মোট ভোটার ২ লাখ ৪১ হাজার ৯শ’ ৫৯জন।
বিডি প্রতিদিন/১১ জুলাই ২০১৮/হিমেল