নেতৃত্বহীন জঙ্গি সংগঠন জেএমবিকে প্রায় এক বছর ধরে সংগঠিত করার চেষ্টা করছিল শরীফুল ইসলাম ওরফে খালিদ। তাকে এসব কাজে সহায়তা করছিল আরেক জঙ্গি মামুনুর রশীদ রিপন। সম্প্রতি র্যাবের অভিযানে রিপন গ্রেফতার হয়।
গ্রেফতার রিপনের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ীই শুক্রবার চাপাইনবাবগঞ্জের নাচোল থেকে হলি আর্টিজান মামলার চার্জশিট ভুক্ত আসামি ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রেজাউল করিম হত্যা মামলার মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্ত আসামি জেএমবির শীর্ষ নেতা শরীফুল ইসলাম ওরফে খালিদ ওরফে নাহিদ ওরফে সাইফুল্লাহ ওরফে রাহাত ওরফে আবু সুলাইমানকে গ্রেফতার করে র্যাব।
শনিবার দুপুরে কারওয়ান বাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য দেন র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার প্রধান কমান্ডার মুফতি মাহমুদ খান।
তিনি বলেন, জঙ্গি বিরোধী অভিযানে নব্য জেএমবির শীর্ষ অনেক নেতা নিহত ও গ্রেফতার হয়ে অনেকে কারাগারে থাকায় নেতৃত্বশূন্য সংগঠনটির হাল ধরতেই সে দেশে ফিরে আসে। এরই মধ্যে সংগঠনের অভ্যন্তরীণ কোন্দল দূর করে সব নেতাকে একই প্লাটফর্মে নিয়ে আসার কাজ শুরু করেছিল সে। তার উদ্দেশ্য ছিল বড় ধরনের নাশকতা করে আবারও জেএমবির শক্তিশালী অবস্থান জানান দেয়া।
গুলশান হামলার পর আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সাঁড়াশি অভিযান চালিয়ে সারা দেশে নব্য জেএমবির আস্তানাগুলো গুঁড়িয়ে দেয়। গুলশান হামলার মাস্টারমাইন্ড তামিম চৌধুরী, সারোয়ার জাহান, অপারেশনাল কমান্ডার নুরুল ইসলাম মারজান, সামরিক প্রশিক্ষক মেজর (অব.) জাহিদুল ইসলামসহ অন্তত ৮০ জন জঙ্গি নিহত হয়।
আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে গ্রেফতার হয়ে কারাগারে আছে নব্য জেএমবির কিলিং মাস্টার রাজীব গান্ধী, অস্ত্র সরবরাহকারী মিজানুর রহমান ওরফে বড় মিজান, হাদিসুর রহমান সাগর, দুর্ধর্ষ জঙ্গি হাতকাটা সোহেল মাহফুজসহ অনেক শীর্ষ জঙ্গি। ফলে নব্য জেএমবি এখন নেতৃত্বশূন্য।
তিনি বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে জেএমবিকে সমৃদ্ধ করতে বিভিন্ন অঞ্চলভিত্তিক জঙ্গি এক জায়গায় একত্রিত হয়েছে যারা হিজরতের জন্য রেডি হয়েছে, বাসা থেকে বের হয়ে গিয়েছে। এর মধ্যে একজন নারী জঙ্গিকেও আমরা পেয়েছি।
‘তারা যে কোনো সময় যে কোনো স্থানে ওই রকম সুযোগ সুবিধা পেলে নাশকতার পরিকল্পনা করতে পারে, ইতোমধ্যে আমরা বেশ কয়েকটি অভিযান পরিচালনা করেছি। তবে শরিফুল ইসলামকে আটক এর মাধ্যমে তাদের যে পরিকল্পনা ছিল নাশকতা যে পরিকল্পনা ছিল তা নস্যাৎ হয়েছে।
এক প্রশ্নের জবাবে মুফতি মাহমুদ বলেন, আমাদের কাছে তথ্য আছে তাদের মেন্টর বা গাইড হিসেবে কারা কাজ করছে। এগুলো আসলে কোড নামে ব্যবহার করা হয়। আমাদের কাছে তথ্য ছিল জেএমবি আবারও একত্রিত হওয়ার কাজ করে প্রথমে অঞ্চলভিত্তিক কাজ করে, দেখা যায় পাঁচটি অঞ্চল থেকে একজন করে পাঁচজন এসেছে এর পরে তারা ঘর থেকে বের হয়ে অন্য একটা জায়গায় তারা অবস্থান করছে।
রিপনকে গ্রেফতার হলে সেটা শরীফ জানতে পেরে যায় এরপর থেকে প্রতিনিয়ত শরীফ তার জায়গা পরিবর্তন করছিল। হয়তো তাকে গ্রেফতার করা সম্ভব না হলে সে কোন পার্শ্ববর্তী দেশে পালিয়ে যেত।
জেএমবির এখন কোনো নেতৃত্ব নেই দাবি করে মুফতি মাহমুদ বলেন, তারা দুজনই আবার চেষ্টা করেছিল যে থেকে আবার কিভাবে সমৃদ্ধ করা যায় দ্রুত পলাতক ও আত্মগোপনে থাকা জঙ্গিরা দুর্ধর্ষ জঙ্গি ও ঝুঁকিপূর্ণ জঙ্গি তারা জানে নেতৃত্বহীন একটি সংগঠন কে কিভাবে হামলার জন্য প্রস্তুত করা যায়। এই অভিজ্ঞতা ও পারদর্শিতা তাদের মধ্যে এক সময় ছিল তারা নাশকতা করতে পারলে যারা পলাতক ও আত্মগোপনে থাকা জঙ্গি আছে তারা উজ্জীবিত হতো।
বিডি প্রতিদিন/২৬ জানুয়ারি ২০১৯/আরাফাত