রাজধানীর বাংলামোটরে বাসের চাপায় পা হারানো কৃষ্ণা রায়কে দুই লাখ টাকা দিতে চেয়েছে ট্রাস্ট পরিবহন কর্তৃপক্ষ। তবে কৃষ্ণা রায়ের পরিবারের পক্ষ থেকে তা প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে।
এর আগে, মঙ্গলবার দুপুরে পুরান ঢাকায় যাওয়ার জন্য বাংলামোটরে অফিস থেকে বের হয়ে রাস্তা পার হওয়ার জন্য ফুটপাথে দাঁড়িয়ে ছিলেন কৃষ্ণা রানী রায় (৫২)। কিন্তু হঠাৎ ফুটপাথে উঠে যায় ট্রাস্ট পরিবহনের বেপরোয়া একটি বাস। বাসের ধাক্কায় মাটিতে পড়ে যান ওই নারী। কিছু বুঝে ওঠার আগেই বাসের একটা চাকা তার পায়ের ওপর উঠে যায়। পিষে যায় রাস্তায়। বাম পা তখন শরীর থেকে প্রায় বিচ্ছিন্ন। শুধু চামড়ার সঙ্গে ঝুলে থাকে। রক্তে রঞ্জিত হয় ফুটপাথ। তৎক্ষণাৎ তাকে হলি ফ্যামিলি হাসপাতালে নিয়ে যায় পথচারীরা। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে, এরপর পঙ্গু হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। ঘটনার পর থেকে বাসের চালক ও হেলপার পলাতক।
কৃষ্ণা রায় বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) হিসাবরক্ষণ বিভাগের সহকারী ব্যবস্থাপক। এক মেয়ে ও এক ছেলের মা কৃষ্ণা রায়ের স্বামীর নাম রাধে সেন। পুরান ঢাকার টিকাটুলী এলাকায় তাদের বাসা।
হাতিরঝিল থানার এসআই খায়রুল আলম জানান, দুপুর আড়াইটার দিকে ট্রাফিক পুলিশের কাছ থেকে খবর পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে যান। বাসের কাউকে আটক করা যায়নি। তবে পরিবহনটির কর্মকর্তাদের খবর দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে তাদের বলা হয়েছে চালক-হেলপারকে থানায় হাজির করতে।
বিআইডব্লিউটিসির জনসংযোগ কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম জানান, কৃষ্ণা রায় অফিসের কাজে পুরান ঢাকায় যাওয়ার জন্য বাংলামোটরে বিআইডব্লিউটিসির প্রধান কার্যালয় থেকে বের হন। রাস্তা পার হতে বাংলামোটরের পুব পাশে ফুটপাথে দাঁড়িয়ে ছিলেন। কারওয়ান বাজার থেকে শাহবাগগামী ট্রাস্ট পরিবহনের একটি বাস ফুটপাথে উঠে তাকে চাপা দেয়।
বিআইডব্লিউটিসির চিকিৎসক খন্দকার মাসুম হাসান জানান, পঙ্গু হাসপাতালে আনার পর গতকাল বিকালে কৃষ্ণার পায়ে অস্ত্রোপচার শুরু হয়। অস্ত্রোপচার শেষে তার পায়ের অবস্থা সম্পর্কে জানা যাবে। তবে তার অবস্থা গুরুতর।
গত বছরের ৩ এপ্রিল রাজধানীতে দুই বাসের চাপায় হাত হারান সরকারি তিতুমীর কলেজের স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র রাজীব হোসেন। পরে ঢামেক হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। এর কিছুদিন পর পৃথক ঘটনায় বাসচাপায় পা হারান রোজিনা ও প্রাইভেট কার চালক রাসেল।
বিডি-প্রতিদিন/মাহবুব