শিক্ষিত হওয়ায় কোন যৌতুক প্রয়োজন নেই বলে পারিবারিক আনুষ্ঠানিকতায় আছিয়া আক্তার নূপুরের (২০) বিয়ে হয় একই এলাকার মো. আলাউদ্দিন চৌধুরীর ছেলে ইয়াছিন চৌধুরীর (২৭) সাথে। কিন্তু বিয়ের কিছুদিন পরই স্ত্রীকে বাবার বাড়ি থেকে যৌতুক এনে দেওয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি এবং শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন শুরু করে স্বামী ইয়াছিন।
পরে বাবার বাড়ি থেকে এক লক্ষ টাকাও এনে দেয় আছিয়া। বিয়ের দেড় বছর না যেতেই আবারও স্বামী ইয়াছিন দোকান ও বাড়ির কাজ করানোর কথা বলে স্ত্রী আছিয়াকে বাবার বাড়ি থেকে ৫ লক্ষ টাকা যৌতুক এনে দিতে মানষিক চাপ সৃষ্টি এবং শারীরিক নির্যাতন করে। একই সাথে শ্বশুর-শাশুড়িও মানষিকভাবে প্রহার করে আছিয়ার উপর।
৩/৪ দিন পর পর নির্যাতন চলতে থাকে জানিয়ে আছিয়া আক্তার নূপুর বলেন, শনিবার (৩১ আগষ্ট) দিবাগত রাত ১২ টা থেকে শুরু হয় তার উপর শ্বশুর-শাশুড়ি এবং স্বামীর মানসিক প্রহার। এক পর্যায়ে তাকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করে ঘর থেকে বাইরে বেরিয়ে যায় স্বামী ইয়াছিন। প্রায় রাত ১টায় আবারও ঘরে এসে তাকে মারধর করে স্বামী। রাত আনুমানিক ৩টায় আছিয়াকে রুমে রেখেই ঘরে আগুন জালিয়ে দেয় ইয়াছিন।
জানালার পর্দায় আগুন ধরে গেলে সেই আগুনেই আছিয়ার গায়ে এসে পড়ে। তার বাম হাত ঝলসে যায় এবং মাথার চুলও পুড়ে যায়। আছিয়ার চিৎকার শুনে আশে-পাশের লোকজন এসে তাকে উদ্ধার করে বলে জানায় আছিয়া।
ভূক্তভোগী আছিয়া আক্তারের মা বলেন, যৌতুকের জন্য বিয়ের ৩/৪ দিন পর থেকেই আমার মেয়েকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করে ইয়াছিন। মেয়ের সংসারের কথা ভেবেই এর আগে ১ লক্ষ টাকা যৌতুক প্রদান করি ইয়াছিনকে। তারপরও সে আরও যৌতুক দাবি করে আসছে এবং আমার মেয়েকে অমানষিক নির্যাতন করে। আমরা এ সমস্যা থেকে পরিত্রাণ চাই।
আছিয়া আক্তার নূপুর বলেন, এ ঘটনায় পুলিশের সহায়তা নিলে আমাকে ও আমার পরিবারের সদস্যদের প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দিয়েছে ইয়াছিন। তাছাড়া একটি সাদা কাগজে স্বাক্ষর করার জন্য তারা আমাকে জোর-জবরদস্তির চেষ্টা করে।
এ বিষয়ে ঘটনাস্থলে যাওয়া সিদ্ধিরগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক কামরুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় ভূক্তভোগী থানায় লিখিত অভিযোগ করেছে। এ ব্যাপারে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল