হঠাৎ রাজশাহীতে বেড়েছে শীতের তীব্রতা। সন্ধ্যা নামার সঙ্গে সঙ্গে শীত জেঁকে বসছে। শীতে জবুথবু অবস্থা সব বয়সী মানুষের। হঠাৎ করেই তাপমাত্রা কমে যাওয়ায় ছোট-বড় সবাই নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। অনেকেই চিকিৎসা নিচ্ছেন রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে।
হাসপাতালের তথ্যমতে, মেডিসিন, শিশু ও চর্ম বিভাগে সবচেয়ে বেশি রোগী ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছে। মেডিসিনের চারটি ইউনিটে নারী-পুরুষসহ হাসপাতালের সব ইউনিটে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত রোগীর সংখ্যা ছিল ২ হাজার ২০০ জন। এর মাঝে শুক্রবার সব ওয়ার্ড মিলে নতুন রোগী ভর্তি হয়েছে ৬ শতাধিক। যাদের মাঝে ইনফ্লুয়েঞ্জা শ্বাসকষ্ট, ডায়রিয়া, হাঁপানি রোগীর সংখ্যা অনেক বেশি। শিশু ওয়ার্ডের তিনটি ইউনিটে পাঁচ শতাধিক রোগী ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছে। শিশুদের মাঝে নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্ট, ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীর সংখ্যাও সবচেয়ে বেশি।
রামেক হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, ‘ঠাণ্ঠা পরিবেশের কারণে অল্পতেই ঠাণ্ঠায় আক্রান্ত হচ্ছে নানা বয়সী মানুষ ও শিশুরা। এ সময় ভাইরাসজনিত রোগে মানুষ খুব সহজেই আক্রান্ত হচ্ছে। অনেকে বাইরের নানান খাবার খাওয়ার কারণে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে।’
রামেক হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. প্রবীর মোহন জানান,‘শীতের কারণে বড় ছোট সবাইকে একটু সতকর্তা অবলম্বন করে থাকতে হবে। এ সময় সবার অসুস্থ হওয়ার প্রবণতা বাড়ে। এ সময় ইনফ্লুয়েঞ্জা শ্বাসকষ্ট, ডায়রিয়ার প্রবণতা বেড়ে যায়। বাচ্চাদের মধ্যে হাঁচি কাঁশি জ্বর ও ডায়রিয়ার প্রবণতা বাড়ে। তাই সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে- ঠাণ্ঠা লাগানো যাবে না। বাইরে বের হলে অবশ্যই গরম কাপড় পরিধান করে বের হতে হবে।’
তিনি আরও জানান, হালকা কুসুম গরম পানি খাওয়া ভালো। শীতের কারণে অনেক শাকসবজি বাজারে পাওয়া যাচ্ছে সেগুলো এখন বেশি বেশি খেতে হবে। আর কোনোভাবে অসুস্থ হলে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শে চলতে হবে। কোনো হাতুড়ে চিকিৎসকের পরামর্শে ওষুধ খাওয়া যাবে না।
রামেক হাসপাতালের শিশু বিভাগের প্রধান প্রফেসর ডা. বেলাল উদ্দিন জানান, ‘শীতের কারণে শিশুদের মাঝে নিউমোনিয়া, সর্দি, কাঁশি শ্বাসকষ্ট, ডায়রিয়ার প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে। এ সময় সব অভিভাবকের একটু বাড়তি সচেতনতার সঙ্গে শিশুদের যত্ম নিতে হবে। রোদ হলেই বাচ্চাকে বাইরে নিয়ে বের হতে হবে। অনেক ঠাণ্ডা ও বাতাস বইলে বের হওয়া যাবে না। কোনো সমস্যা হলে দেরি না করে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে। এবং চিকিৎসকের পরামর্শে সবসময় চলতে হবে।
রামেক হাসপাতালের উপ-পরিচালক সাইফুল ফেরদৌস জানান, শীতকে সামনে রেখে বৃহস্পতিবার হাসপাতালের ১০, ২৪, ২৬, ২৭ নম্বর ওয়ার্ডে ৩০টি রুম হিটার দেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনে আরও দেওয়া হবে। কর্মরত সবাইকে বলা আছে-সব ওয়ার্ডের জানালা ঠিকঠাক যেন লাগিয়ে দেয়। আর শিশু বিভাগে বিশেষভাবে নানান পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলেও তিনি জানান।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন