সাভারের আমিনবাজার এলাকার দুর্ধর্ষ গাংচিল বাহিনীর প্রধান সালাউদ্দিন ও তার দুই সহযোগীকে আটক করেছে র্যাব-৪ এর একটি বিশেষ অভিযানিক দল। এসময় উদ্ধার করা হয়েছে একটি বিদেশী পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন, দুই রাউন্ড গুলি, মাদক হিরোইন ও ইয়াবা।
শুক্রবার বিকেল ৩ টায় এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করে র্যাব-৪। এর আগে শুক্রবার ভোর রাতে আমিনবাজার সালেহপুর এলাকা থেকে তাদের আটক করা হয়।
আটকরা হলেন- আমিনবাজার এলাকার গাংচিল বাহিনীর প্রধান সালাউদ্দিন ওরফে এমপি সালাউদ্দিন, তার সহযোগী আশরাফ ও আকিদুল।
র্যাব জানায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার দিবাগত গভীর রাতে আমিনবাজার সালেহপুর এলাকায় গাংচিল বাহিনীর প্রধান সালাউদ্দিন ও তার সহযোগীরা অবস্থান করছে এমন গোপন সংবাদে অভিযান পরিচালনা করে র্যাব। পরে শুক্রবার ভোর রাতে গাংচিল বাহিনীর প্রধান সালাউদ্দিন ও তার দুই সহযোগীকে আটক করা হয়। এসময় তাদের কাছে থাকা একটি বিদেশী পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন, দুই রাউন্ড গুলি, মাদক ১৯০ গ্রাম হিরোইন ৫’শ পিস ইয়াবা উদ্ধার করে র্যাব সদস্যরা।
র্যাব আরো জানায়, ২০০০ সাল থেকে সাভার আমিন বাজার ও তার আশপাশের এলাকায় সন্ত্রাসী কর্মকান্ড পরিচালনার মধ্য দিয়ে উত্থান হয় গাংচিল বাহিনীর, যার প্রধান ছিল আনোয়ার হোসেন ওরফে আনার। বেশিরভাগ সময় পানিবেষ্টিত এলাকায় সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিচালনা করায় এর নাম দেওয়া হয় গাংচিল বাহিনী। ২০১৭ সালে আনার এর মৃত্যুর পর তার সহযোগী সালাউদ্দিন ওরফে এমপি সালাউদ্দিনের নেতৃত্বে আবারো সন্ত্রাসী কর্মকান্ড শুরু করে।
এ বাহিনী মূলত আমিন বাজার, গাবতলী, ভাকুর্তা, কাউন্দিয়া, বেড়িবাধ, কেরানীগঞ্জ ও মোহাম্মদপুর এলাকায় চাঁদাবাজি, মাদক ব্যবসা, ডাকাতি ও খুনসহ নানা অপরাধমূলক কর্মকান্ড চালিয়ে আসছিল।
র্যাব-৪ এর সিনিয়ির সহকারী পুলিশ সুপার সাজেদুল ইসলাম জানান, মূলত দুর্ধর্ষ এই গাংচিল বাহিনী ২০০২ সালে সাভার থানা পুলিশের এক এসআইকে হত্যা, ২০০৭ সালে দুই জন র্যাব সদস্যকে হত্যা, দিয়াবাড়ী পুলিশ ফাঁড়ির অস্ত্রলুট ও আমিন বাজার এলাকায় নৌ-টহল দলের অস্ত্রলুট এর সাথে জড়িত ছিল। এ বাহিনী তুরাগ ও বুড়িগঙা নদীর বালুভর্তি ট্রলার, ইটের কার্গোতে ডাকাতি ও আমিন বাজার এলাকার শতাধিক ইটভাটা থেকে নিয়মিত চাঁদা সংগ্রহ করতো। এছাড়াও এলাকার প্রভাবশালীদের টার্গেট করে গাংচিল বাহিনীর সদস্যরা মোটা অঙ্কের চাঁদা দাবি করে ও চাঁদা না দিলে অপহরণ করে মুক্তিপণ দাবি করা হয়। চাঁদাবাজি, খুন, ডাকাতি, মাদক ব্যবসা, ছিনতাইসহ তুরাগ আর বুড়িগঙ্গা নদীর দুই ধারে এককছত্র অধিপত্য বিস্তার ছিল এই বাহিনীর প্রধান কাজ।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল