২৫ অক্টোবর, ২০২০ ২০:৩৪

বাংলাদেশে স্ট্রোকের ঝুঁকির মধ্যে ৫ শতাংশ মানুষ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক

বাংলাদেশে স্ট্রোকের ঝুঁকির মধ্যে ৫ শতাংশ মানুষ

অনেকের ধারণা স্ট্রোক হচ্ছে হৃদযন্ত্রের কোনো সমস্যা। কিন্তু এটি আসলে মস্তিষ্কের একটি রোগ। স্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়া মানেই জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণ। বাংলাদেশে স্ট্রোকের হার প্রতি হাজারে ১২জন, আর প্রায় ৫ শতাংশ মানুষ স্ট্রোকের ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।

রবিবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরী বিভাগের অধ্যাপক আতা এলাহী খান সেমিনার হলে এক কর্মশালায় বক্তারা এসব তথ্য তুলে ধরেন। বিশ্ব স্ট্রোক দিবস উপলক্ষে এই কর্মশালার আয়োজন করা হয়। 

কর্মশালা পূর্ব সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন নিউরোসাইন্স বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. রফিকুল ইসলাম। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএসএমইউ) উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়য়া। এছাড়া ঢামেক নিউরোসার্জেন্সি বিভাগের প্রধান ডা. অসিত চন্দ্র সরকারের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন ঢাকা মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. খান আবুল কালাম আজাদ, ঢামেক পরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল এ কে এম নাসির উদ্দিন, নতুন পরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল নাজমুল হক প্রমুখ। 

মূল প্রবন্ধে রফিকুল ইসলাম বলেন, স্ট্রোক বিশ্বে দ্বিতীয় প্রধান মৃত্যুর কারণ। এ কারণে লক্ষণ দেখার সঙ্গে সঙ্গে যত দ্রুত সম্ভব ডাক্তারের স্মরণাপন্ন হতে হবে। স্টোকের লক্ষণ সম্পর্কে তিনি বলেন, মাথা ঘুরে পড়ে যাওয়া, চোখে ঘোর দেখা, চেহারা পরিবর্তন হওয়া, বাহু অবশ হওয়া, কথা বলার সময় জড়তা চলে আসা ইত্যাদি।  এসব লক্ষণ দেখা দিলে গোল্ডেন টাইমের মধ্যে (৩ থেকে ৪ ঘন্টা)  চিকিৎকের স্মরণাপন্ন হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া বলেন, ঢাকা মেডিকেল স্ট্রোকের চিকিৎসার ক্ষেত্রে অনেক অগ্রসর হয়েছে। ইমার্জেন্সি বিভাগের পাশে একটা সিটি স্কান ও ক্যাথ ল্যাব বসানো হয়েছে। আর এই ক্যাথ ল্যাব স্থাপনের পর চিকিৎসা সহজ হয়েছে। এই রোগের চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় সকল কিছু করা হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, আগে অনেক কিছু চাইলেই হতো না। কিন্তু এখন সরকার আমাদের সবকিছু দিচ্ছে। আমি যখন শুনি, এখানে স্ট্রোক ইউনিট নাই তখন অবাক হই। কেননা এরফলে তো রোগী মারা যাবে। সময় থাকতেই আমাদেরকে সবকিছু করতে হবে।

কর্মশালায় ঢাকা মেডিকেলের নিউরোসার্জেন্সি বিভাগের শিক্ষকরা বলেন, ১৯৮০ সাল থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত ইউরোপ বা আমেরিকাতে ৪২ শতাংশ রোগী কমেছে। কিন্তু অনুন্নত ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে এই রোগ শতভাগ বেড়েছে। 

স্ট্রোকের প্রতিকার সম্পর্কে শিক্ষকরা বলেন, প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধ ভাল। স্টোক সম্পূর্ণ প্রতিরোধ ও নিরাময়যোগ্য। স্ট্রোকের ঝুঁকি এড়াতে ফাস্টফুড খাবার ত্যাগ করা, ধুমপান ত্যাগ করা, ব্লাড পেশার আর সুগার থাকলে নিয়ন্ত্রণে রাখা, নিয়মিত ব্যায়াম করা, লক্ষণ দেখার সঙ্গে সঙ্গে অবহেলা না করে হাসপাতালে নেওয়া ও সর্বপরি জনসচেতনতা গুরুত্বপূর্ণ। 

বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর