সাঁতার শুধু জীবন বাঁচাতেই সাহায্য করে না পাশাপাশি এটি একটি উত্তম ব্যায়াম। যা একজন মানুষকে সুস্থ রাখে। প্রত্যেক মানুষেরই জীবনে সাঁতার জানা খুবই প্রয়োজনীয়। কিন্তু ইট-পাথরের এই যান্ত্রিক নগর নারায়ণগঞ্জে সাঁতার কাটাতো দূরের কথা এখন শেখাটাও খুবই দুঃসাধ্য ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। যদিও শহরের বুক চিরে বয়ে গেছে শীতলক্ষ্যা নদী। তবে সেই নদীতে গিয়ে সাঁতার কাটার মতো পরিবেশ অনেক আগেই হারিয়েছে। সেই সাথে সাথে পাড়া মহল্লায় থাকা পুকুরগুলোরও অস্তিত্ব বিলীন হয়ে গেছে। হাতে গোনা দু’একটি পুকুর থাকলেও সেটাতে সাঁতার কাটার পরিবেশ নেই।
আর এমন একটা অবস্থার মধ্যেই নারায়ণগঞ্জ শহরের খানপুর এলাকায় নতুন ঘটনার জন্ম দিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ১২ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর শওকত হাসেম শকু। তার তৎপরতায় নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের সম্পূর্ণ তত্ত্বাবধানে ৬৫ লাখ টাকা ব্যয় করে খানপুর এলাকার নারায়ণগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী শ্রী ঘাটলা পুকুরের সংস্কার করেছেন। যে পুকুরটির অস্তিত্ব বিলীন হওয়ার পথে ছিল। ময়লা আবর্জনা ফেলে ভরাট করে ফেলেছিলেন পুকুরটিকে। বর্তমানে সেই পুকুরটিতে এখন পানি টল টল করছে। সেই সাথে ছোট ছোট শিশুরা প্রায় সবসময় পুকুরটিতে সাঁতার কাটছেন এবং দূরন্ত শৈশবে মেতে উঠছেন। পুকুরটিতে ১২০ ফিট লম্বা ঘাটলা করা হয়েছে। যা নারায়ণগঞ্জ শহরের অন্য কোথাও নেই।
শুক্রবার সকালে খানপুর এলাকার ক্ষুদে শিশুদের নিয়ে সাঁতার প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। দীর্ঘ কয়েক যুগ পর আয়োজিত এই সাঁতার প্রতিযোগিতাকে কেন্দ্র করে এলাকাবাসীর মধ্যে ছিল উৎসবমুখর আমেজ। এলাকাবাসীর অংশগ্রহণে পুকুরের চারপাশ কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে উঠে। যেন এদিন তারা একটি উৎসবে মেতে উঠেছিলেন।
নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ১২ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর শওকত হাসেম শকু বলেন, এটা একটা ঐতিহ্যবাহী পুকুর ছিল। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে এই পুকুরটি অযত্ন অবহেলায় বিলীন হওয়ার পথে ছিল। পরবর্তীতে এলাকাবাসীর চাহিদার প্রেক্ষিতে সিটি কর্পোরেশনের সম্পূর্ণ তত্ত্বাবধানে ৬৫ লক্ষ টাকা ব্যয়ে পুকুরটি খনন করা হয়েছে। সেই সাথে এই পুকুরটির ঘাটলা করা হয়েছে ১২০ ফিট লম্বা। এত বড় ঘাটলা নারায়ণগঞ্জের অন্য কোনো পুকুরে আছে কিনা আমার জানা নেই।
তিনি আর বলেন, এই পুকুরটিতে আজ আমরা ক্ষুদে শিশুদের জন্য সাঁতার প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছি। পরবর্তীতে ক্ষুদে মেয়ে শিশুদের জন্য সাঁতার প্রতিযোগিতার আয়োজন করবো। ছোট ছোট শিশুরা সাঁতার কাটতে দেখলে নিজের কাছেও ভাল লাগে। এখনও সৌন্দর্য বর্ধনের কাজ চলমান রয়েছে। আশা করি আগামী কয়েক মাসের মধ্যে আধুনিক রূপ দিতে পারবো। এখানকার মানুষ একসময় বলবে আমরা গর্বিত এলাকার বাসিন্দা।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন